একুশ থেকো মননজুড়ে

আগুন লাগে না পলাশে, তবু আগুন দেখায় ফাগুন,
শুভ্র তুষারের দেশে।
ঝরে পড়া পাতার শোকে, শুকনো কাঠির কঙ্কালসার গাছগুলো দাঁড়িয়ে।
বুকে কলকল করে বয়ে চলে পদ্মা, মেঘনা, ধলেশ্বরী,
ফাগুনের রোদ ঝলক দেয় জলের মাঝে।
‘আ’-তে আমটি আমি খাব পেড়ে, মামার দেশের আমবাগানের ঘুঘুর ডাক কানে ভাসে।
থেকে থেকে কোকিল ডাকে কৃষ্ণচূড়ার ডালে, শিশিরমাখা রাজপথ আজও জমে ওঠে ধুলায়,
মায়ের আলতার রঙে, শহীদেরা মিছিলে পায়ে পা মেলায়।
তাদেরই রক্তমাখা পথ বেয়ে মুখের কথার মর্যাদা পেয়েছি এই বাংলায়।
মায়ের ভাষার রাখতে মান, একদিন যারা গুলির সামনে পেতেছিলে বুক,
প্রতি ফাল্গুনে এরা দলে ভারী হয়েছে, আজ বাংলায় কথা বলে কোটি কোটি মুখ।
তবু একুশে এলেই,
ছেলেহারা মায়ের দীর্ঘশ্বাস ভেজায় চোখের কিনার, কাঁদে শহীদের কবর, কাঁদে শহীদ মিনার।
সেই কান্নার রং, চেতনা রাঙায় উচ্ছ্বাসে, আবেগে,
একুশ তোমার বুকফাটা চেতনার রং যেন আমার রোজনামচার কর্মে লাগে।
স্লোগানে নয়, সেমিনারে নয়,
নয় সমবেত নিজস্বিতে।
ওগো পলাশ, ওগো প্রিয়ার খোঁপায় গোঁজা শিমুল রাঙাও, রাঙাও আমায়,
চেতনার রং, যেমন আমার অঙ্গে সাজে, যেন আমার স্বর আমার ধ্বনিতে জাগে,
সেই রং যেন মোর মননে লাগে।


হিমাদ্রী রয়: টরন্টো, কানাডা।