ব্রিটেনে কলাকারের মিউজিক্যাল আখতারিতে সাড়া

চন্দ্রা চক্রবর্তী লিখিত, অভিনীত ও পরিবেশিত কলাকার সংগঠনের মিউজিক্যাল অনুষ্ঠানটি ব্রিটেনে প্রভূত সাড়া ফেলেছে। ছবি: লেখক
চন্দ্রা চক্রবর্তী লিখিত, অভিনীত ও পরিবেশিত কলাকার সংগঠনের মিউজিক্যাল অনুষ্ঠানটি ব্রিটেনে প্রভূত সাড়া ফেলেছে। ছবি: লেখক

করোনাভাইরাসের আতঙ্ক আর ঝড়বৃষ্টির কালো চোখকে অবলীলায় উপেক্ষা করে স্কুল অব ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজ, ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের ব্রুনাই গ্যালারিতে গত রোববার দর্শকের ভিড় ছিল অবাক হওয়ার মতোই! আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠান ছিল বিদুষী চন্দ্রা চক্রবর্তী পরিচালিত মিউজিক্যাল আখতারি। গজল সম্রাজ্ঞী বেগম আখতারের জীবন কাহিনি নিয়েই এ পরিবেশনা।

চন্দ্রা চক্রবর্তী লিখিত, অভিনীত ও পরিবেশিত কলাকার সংগঠনের এ মিউজিক্যাল ইতিমধ্যে ব্রিটেনে সাড়া ফেলেছে। গত বছর ভারতীয় বিদ্যা ভবনে প্রথমবার আখতারি পরিবেশিত হওয়ার পর যেমন সব দর্শক উঠে দাঁড়িয়ে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন, গত রোববারেও সেই একই দৃশ্য দেখা গেল।

ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত দর্শক জন বেকার বলেন, ‘ইংরেজি ভাষায় এমন কোনো শব্দ আমার জানা নেই, যা দিয়ে আমি এই অনুষ্ঠানের প্রশংসা করব। আমার দেখা সবচেয়ে সুন্দর, সবচেয়ে মনোগ্রাহী এই অনুষ্ঠান।’

পাকিস্তানি দর্শক জামিলা খান বাহার বলেন, ‘বেগমের জীবন নিয়ে এত চমৎকার অনুষ্ঠান আমি কোনো দিন দেখিনি। গান, অভিনয়, পাঠের মধ্যে দিয়ে একটানা দুই ঘণ্টার অনুষ্ঠানের পরে মনে হচ্ছে খুব তাড়াতাড়ি যেন সময়টা শেষ হয়ে গেল।’

বর্ষীয়ান শিল্পী গীতা হান্স বলেন, ‘চন্দ্রা চক্রবর্তীর মতো বহুমুখী প্রতিভা খুব বিরল। উনি শুধু একজন রিসার্চার বা স্ক্রিপ্ট লেখকই নন, অভিনেত্রী এবং সেই সঙ্গে অসামান্য সংগীতশিল্পী। আমি আজীবন আজকের এই অনুষ্ঠান মনে রাখব।’

ব্রিটেনের স্কুল অব ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজ, ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের ব্রুনাই গ্যালারিতে গত রোববারের হয়ে গেল বিশেষ অনুষ্ঠান বিদুষী চন্দ্রা চক্রবর্তী পরিচালিত মিউজিক্যাল আখতারি। ছবি: লেখক
ব্রিটেনের স্কুল অব ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজ, ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের ব্রুনাই গ্যালারিতে গত রোববারের হয়ে গেল বিশেষ অনুষ্ঠান বিদুষী চন্দ্রা চক্রবর্তী পরিচালিত মিউজিক্যাল আখতারি। ছবি: লেখক

রোববার অনুষ্ঠানের শুরুতে দর্শকদের আমন্ত্রণ জানিয়ে বক্তব্য দেন সোয়াসের শিক্ষক সংযুক্তা ঘোষ। তিনি বলেন, পণ্ডিত এ কাননের জন্মশতবার্ষিকীতে কানন সাহেবেরই সুযোগ্য শিষ্য চন্দ্রা চক্রবর্তী পরিবেশিত এ মিউজিক্যাল সোয়াসে নিয়ে আসতে পেরে তিনি অত্যন্ত আনন্দিত। অনুষ্ঠানের শেষে শিল্পী ও দর্শকমণ্ডলীকে ধন্যবাদ জানাতে গিয়ে সংযুক্তা বলেন, এমন এক অনন্যসাধারণ অনুষ্ঠান দেখে অন্য সবার মতো তিনিও অভিভূত।

এই মিউজিক্যালে আছে আখতারির জীবনসংগ্রামের ঘটনা, আছে বিপুল জনপ্রিয় গজল, আখতারির মা মুস্তারী বাইয়ের কথা, আর আছে আখতারির ভালোবাসার মানুষ রামপুরের নবাবের সঙ্গে আখতারির বিচ্ছেদের ঘটনাও।

এ মিউজিক্যালে আছে আখতারির জীবনসংগ্রামের ঘটনা, আছে আখতারির মা মুস্তারী বাইয়ের কথা, আছে আখতারির ভালোবাসার মানুষ রামপুরের নবাবের সঙ্গে আখতারির বিচ্ছেদের ঘটনাও। ছবি: লেখক
এ মিউজিক্যালে আছে আখতারির জীবনসংগ্রামের ঘটনা, আছে আখতারির মা মুস্তারী বাইয়ের কথা, আছে আখতারির ভালোবাসার মানুষ রামপুরের নবাবের সঙ্গে আখতারির বিচ্ছেদের ঘটনাও। ছবি: লেখক

আখতারি মিউজিক্যালের অভূতপূর্ব সাফল্য নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলাপচারিতায় চন্দ্রা চক্রবর্তী বলেন, ‘দর্শকদের উচ্ছ্বাস, ভালোবাসা, অনুষ্ঠানের পরে তাদের আবেগঘন আশীর্বাদই আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া। আমি কাজপাগল মানুষ, কাজের নেশায় অনেক সময় ঠিকমতো খাওয়া ঘুম হয় না, তারপর যখন ওই কাজের এমন কদর পাই, তখন এত আনন্দ হয় যে চোখে জল এসে যায়। তবে আখতারির সাফল্যের ভাগ কিছুতেই আমি একা নিতে পারব না, আমার সঙ্গে যত কলাকুশলী আছেন, তাঁদের প্রত্যেকের কঠিন পরিশ্রম এই কাজের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। আখতারি ইজ আ প্রোডাক্ট অব টিমওয়ার্ক, ডেডিকেশন অ্যান্ড কমিটমেন্ট।’

গজল সম্রাজ্ঞী বেগম আখতারের জীবনকাহিনি নিয়ে কলাকারের এ মিউজিক্যাল আগামী ২৯ মে পরিবেশিত হবে লিডস শহরের অন্যতম ভেন্যু ক্যারিজওয়ার্কস থিয়েটারে। ছবি: লেখক
গজল সম্রাজ্ঞী বেগম আখতারের জীবনকাহিনি নিয়ে কলাকারের এ মিউজিক্যাল আগামী ২৯ মে পরিবেশিত হবে লিডস শহরের অন্যতম ভেন্যু ক্যারিজওয়ার্কস থিয়েটারে। ছবি: লেখক

গজল সম্রাজ্ঞী বেগম আখতারের জীবনকাহিনি নিয়ে কলাকারের এই মিউজিক্যাল আগামী ২৯ মে পরিবেশিত হবে লিডস শহরের অন্যতম ভেন্যু ক্যারিজওয়ার্কস থিয়েটারে। লিডসে এই পরিবেশনার দায়িত্বে আছেন ইউরোপের বিখ্যাত সংস্থা ‘সা ইউকে’।