চীনে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী পালিত

রাষ্ট্রদূত মাহবুবুজ্জামান বক্তব্য রাখছেন। ছবি: বাংলাদেশ দূতাবাস, বেইজিং
রাষ্ট্রদূত মাহবুবুজ্জামান বক্তব্য রাখছেন। ছবি: বাংলাদেশ দূতাবাস, বেইজিং

যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগম্ভীর পরিবেশে চীনের বেইজিংয়ে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস ২০২০ পালিত হয়েছে।

স্থানীয় সময় গত মঙ্গলবার সকাল ১০টায় বাংলাদেশ দূতাবাসের দোয়েল হলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস পালিত হয়। কোভিড-১৯–এ আক্রান্ত সমগ্র চীনে একটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতির মধ্যে চীনা সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী সীমিত পরিসরে মুজিব শতবর্ষের এই আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

অনুষ্ঠানের শুরুতে রাষ্ট্রদূত মাহবুবুজ্জামান দূতাবাস প্রাঙ্গণে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিবসটির সূচনা করেন। এরপর বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করে দোয়া অনুষ্ঠান পরিচালিত হয়।

দূতাবাসের দোয়েল হলে অনুষ্ঠানের শুরুতেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পাঞ্জলি অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন রাষ্ট্রদূত মাহবুবুজ্জামান। এ সময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। মুজিব বর্ষের ঐতিহাসিক ক্ষণকে সামনে রেখে সভায় রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের বাণী পাঠ করা হয়।

আলোচনা অনুষ্ঠানের সূচনা বক্তব্যে দূতাবাসের উপপ্রধান মাসুদুর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুদূরপ্রসারী ও ঐন্দ্রজালিক নেতৃত্বে ধাপে ধাপে বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলন ও মুক্তিসংগ্রামের চিত্রটি বিধৃত করেন।

প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম মাহবুবুল আলম ঐতিহাসিক পটভূমিকার পরিপ্রেক্ষিতে বঙ্গবন্ধুর বিচক্ষণ এবং অসামান্য নেতৃত্বের বিষয়টি তুলে ধরেন। বঙ্গবন্ধুকে স্বভাবজাত নেতা উল্লেখ করে তিনি বলেন যে তাঁর মানবিক এবং জনগণের দাবি আদায়ের সপক্ষে আপসহীন নেতৃত্বই তাঁকে বাংলার জনগণের বঙ্গবন্ধু হিসেবে আবির্ভূত করেছে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। ছবি: বাংলাদেশ দূতাবাস, বেইজিং
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। ছবি: বাংলাদেশ দূতাবাস, বেইজিং

রাষ্ট্রদূত মাহবুবুজ্জামান বলেন, ক্ষুধা, দারিদ্র্যমুক্ত ও শোষণহীন সমাজ প্রতিষ্ঠায় এবং স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক অবদানের বিষয়টি উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার স্বপ্নকে বুকে ধারণ করে বাংলাদেশকে ২০২১ সাল নাগাদ একটি মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সাল নাগাদ একটি উন্নত রাষ্ট্রে রূপান্তরের লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।

চীনের বিশেষ পরিস্থিতির কথা বিবেচনায় রেখে দূতাবাস আয়োজিত অনুষ্ঠানে শুধু কবিতা আবৃত্তির আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর জীবন, আদর্শ এবং স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের তথ্যসংবলিত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

এই দিবসকে উপলক্ষ করে দূতাবাস একটি বয়সভিত্তিক অনলাইন চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। অনুষ্ঠান শেষে রাষ্ট্রদূত চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার ফলাফল ঘোষণা করেন এবং বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন।

অনুষ্ঠানে আগত উপস্থিতির মধ্যে রাষ্ট্রদূত ‘বঙ্গবন্ধুর ভাষণ’-এর ওপর সংকলিত একটি গ্রন্থ এবং কবিতা ও রচনাবলী এর একাধিক সংকলন বিতরণ করেন।