করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে গ্রিসে লকডাউন
করোনাভাইরাসের কারণে সমগ্র গ্রিস লকডাউন। জনবহুল এ নগরী নীরব–নিস্তব্ধ, যেন একটি ভুতুড়ে নগরে পরিণত হয়েছে। নেই কোনো জনমানব। অফিস-আদালত, দোকানপাট, রাস্তাঘাট—সব বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে দুই সপ্তাহ আগেই। জনমানবশূন্য এমন নগরী দীর্ঘ ইতিহাসে আজ যেন গ্রিকবাসী কখনো কল্পনাও করেনি আজকের ভয়াবহ পরিস্থিতির জন্য। সবাই চাপা উৎকণ্ঠায় নিজ গৃহে আবদ্ধ।
১৫ দিন থেকে সব স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, অফিস–আদালত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার স্থানীয় সময় ভোর ছয়টা থেকে ১৫ এপ্রিল বেলা তিনটা পর্যন্ত গ্রিসে সবকিছু লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।
সোমবার গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী ক্রিয়াকো মিসোতাকিস জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে গ্রিকবাসীকে ধৈর্য ধারণ করে পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য আহ্বান জানান। তিনি এ–ও বলেন, বর্তমান কঠিন সময়ে গ্রিক সরকার জনগণের জন্য সব ধরনের সহযোগিতা করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। গ্রিক প্রধানমন্ত্রী প্রত্যেক নাগরিকের জন্য ৮০০ ইউরো করে প্রণোদনা, মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত কর মওকুফ, সব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ৬০ শতাংশ দোকান ভাড়া মওকুফ করা হয়েছে। এ ছাড়া অসহায় বয়োবৃদ্ধ লোকেরা জরুরি প্রয়োজনে ১৩৩ নম্বরে ফোন করলে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
সোমবার থেকে সারা দেশে হেলিকপ্টারের সাহায্যে আকাশ থেকে বিশেষ ধরনের গ্যাস ছিটানো হয়েছে। জনগণ গ্রিক সরকারের সব সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে।
গ্রিসের সব সিটি লকডাউনের পাশাপাশি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণের জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পুলিশের পাশাপাশি বিশেষ বাহিনী ও রাস্তায় টহল দিতে দেখা যাচ্ছে। সরকারের সিদ্ধান্তকে কেউ অমান্য করলে ১৫০ ইউরো জরিমানাসহ তিন মাসের জেলের বিধান করা হয়েছে। বিশেষ প্রয়োজনে জনগণ ঘরের বাইরে গেলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ বের হওয়ার যৌক্তিক প্রমাণ সঙ্গে রাখতে হবে, তা না হলে সবাইকে ওই শাস্তি ভোগ করতে হবে।
গ্রিসের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে, আজ ৭১ জন নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়াসহ ৬৯৫ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে। সোমবার পর্যন্ত করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে মৃত্যবরণ করেছে ১৫ জন। মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭।