চীনে কোয়ারেন্টিনে হোটেলবন্দী দিনগুলো

চীনে কোয়ারেন্টিনে ১৪ দিন এই রুমে ছিলেন লেখক।
চীনে কোয়ারেন্টিনে ১৪ দিন এই রুমে ছিলেন লেখক।

জরুরি এক কাজে ১৫ মার্চ হংকংয়ে এসেছিলাম। ফিরতি ফ্লাইট ছিল ২১ মার্চ। কিন্তু তার আগেই হংকংয়ের নিউজগুলোতে দেখলাম হুট করে বাইরের দেশ থেকে যারা আসছে, তাদের অনেকেরই করোনাভাইরাস পজিটিভ বেশি পাওয়া যাচ্ছে। বিশেষ করে যারা ইউরোপ থেকে আসছে। 

হংকং থেকে ঢাকায় যেসব ফ্লাইট যায়, সেসব ফ্লাইটের অধিকাংশ যাত্রী থাকে ট্রানজিটের, তাই ঢাকায় ফিরতে আমিও করোনায় আক্রান্ত হতে পারি। আমার কারণে আরও ১০ জনের ক্ষতি হোক, সেটা আমি চাই না, তাই ফ্লাইট পরিবর্তন করে আরও দুই দিন হংকংয়ে থেকে ২ মার্চ চীন এলাম হংকং-শেনজেন সীমান্ত দিয়ে।


বিকেল চারটায় সীমান্তে উপস্থিত হই। হংকং এবং চীনের ইমিগ্রেশন পাশাপাশি। হংকংয়ের ইমিগ্রেশন ঝড়ের গতিতে শেষ হলো, মনে হচ্ছে আমাকে যত তাড়াতাড়ি বিদায় করতে পারে, তাতে তারা হাঁফ ছেড়ে বাঁচে! সিল-ছাপ্পর শেষ করে যখন চীনে পা দিলাম, তখন দেখে মনে হলো আমি যেন কোনো হসপিটালে এসেছি। স্বাভাবিক সময়ে যেকোনো দেশের ইমিগ্রেশনে যাওয়ার আগে হেলথ কোয়ারেন্টিন পার হয়ে তারপর ইমিগ্রেশনে যেতে হয়, স্বাভাবিক সময়ে কিছু থার্মাল ক্যামেরা দিয়ে এই কাজগুলো করা হয়ে থাকে, ফলে তেমন একটা অস্বাভাবিকতা চোখে পড়ে না। যেহেতু এটা করোনা মহামারি কাল, তাই হেলথ কোয়ারেন্টিনের প্রতিটি জিনিস এমনভাবে সাজানো হয়েছে যেন সবার শরীর আলাদা আলাদাভাবে পরীক্ষা করা যায়, সেই সঙ্গে প্রত্যেক যাত্রী যেন কমপক্ষে এক মিটার দূরত্ব বজায় রাখতে পারে, সেভাবে লাইনগুলো সাজানো।

প্রতিটি রুমের সামনে চেয়ার রাখা থাকত, থাকত খাবার বা প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। ছবি: লেখক
প্রতিটি রুমের সামনে চেয়ার রাখা থাকত, থাকত খাবার বা প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। ছবি: লেখক

আমরা সবাই একটা দূরত্ব বজায় রেখে সামনে এগোচ্ছি। যেহেতু সবাইকে শতভাগ পরীক্ষা করার পরে ইমিগ্রেশনে যাওয়ার অনুমতি দিচ্ছে, তাই সবকিছু খুবই ধীরে ধীরে হচ্ছে। সেই সময় লক্ষ করে দেখলাম, ইমিগ্রেশন পুলিশ, স্বাস্থ্যকর্মী, স্বেচ্ছাসেবক থেকে শুরু করে যাঁরা উপস্থিত, সবাই শতভাগ সুরক্ষা পোশাক পরে সবকিছু তদারকি করছেন, যেখানে শুধু চোখ দেখা যায়।
অনেকক্ষণ পর আমার ডাক পড়ল। প্রথমেই আমার বিস্তারিত তথ্য নিল। যেমন আমি কবে হংকংয়ে এন্ট্রি করেছি, কোন বিমানে ফ্লাই করেছি, সিট নম্বর কত ছিল, হংকং থেকে চীনে কোন বাসে এসেছি, কোন সিটে বসেছিলাম, সেই সঙ্গে আমার করোনার কোনো উপসর্গ দেখা গিয়েছে কিনা ইত্যাদি তথ্য জানানো ও ডকুমেন্ট দেখল। পরে প্রথমে আমাকে তারা গ্লাভস পরতে বলল, তারপর শরীরের তাপমাত্রা মেপে আমাকে করোনা পরীক্ষা করার জন্য অপেক্ষা করতে বলল। ঘণ্টাখানেক পরে আমাকে অন্য একটি কক্ষে নিয়ে মুখে এবং নাক থেকে আমার নমুনা নেওয়ার আবার অপেক্ষার প্রহর গোনা শুরু করলাম, কখন আমার রিপোর্ট আসবে।


পরের আধা ঘণ্টার মধ্যে ইমিগ্রেশনে যাওয়ার অনুমতি মিলল, তার মানে আমি নেগেটিভ। ইমিগ্রেশন পুলিশ পুনরায় আমার ভ্রমণ ইতিহাসের বিস্তারিত শুনে শুধু একটা কথাই জিজ্ঞেস করল, ‘তোমাকে ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। এটা হতে পারে তোমার বাসা আবার হতে পারে হোটেল, তুমি এই ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকবা? যদি থাকো তাহলে তোমাকে চীনে ওয়েলকাম, যদি না থাকো তাহলে তুমি হংকংয়ে ফেরত চলে যেতে পারো।’ আমি সম্মতি দিলাম এবং সঙ্গে সঙ্গেই তারা আমাকে সিল দিয়ে বলল, ওয়েলকাম টু চায়না।


ইমিগ্রেশন পার হয়ে আমি তো খুশি, এখন নিজের ইচ্ছামতো ট্যাক্সি নিয়ে চলে যাব, কিন্তু পার হয়ে দেখি সবকিছুই বন্ধ, শুধু একটা গেট ওপেন এবং ওই গেট দিয়েই বের হওয়া যাবে। একটু সামনে এগিয়ে দেখি বিমানবন্দরের মতোই সবাই সুরক্ষা পোশাক পরে আমার জন্যই অপেক্ষা করছে, আবার ওখানে গিয়ে আবার আমার বিস্তারিত দিলাম এবং আমি কোথায় যাব তারও বিস্তারিত দিলাম।


যেহেতু আমি শেনজেন শহরের বর্ডার দিয়ে আসছি এবং আমি গুয়াংজু যাব, তারা আমার পাসপোর্টসহ আমাকে গুয়াংজুর বুথে নিয়ে গেল, ওখানে গিয়ে আবার বিস্তারিত তথ্য নিয়ে পাসপোর্ট রেখে আমাকে বলল অপেক্ষা করতে। তারা আমাকে তাদের বাসে করে গুয়াংজ নিয়ে যাবে।


শুরু হলো অপেক্ষার পালা, আমরা মোটামুটি সাতজনের মতো ছিলাম, সবার চেয়ার মিনিমাম এক মিটার দূরত্বে। সবাই অপেক্ষা করছি। আমাদের যেন কারও কোনো রকম কষ্ট না হয়, সে জন্য সামনে খাবার পানি, মুসলিমদের জন্য হালাল নুডলসসহ আরও অনেক খাবার টেবিলের ওপরে সাজিয়ে রেখেছে। যেহেতু কেউ জানে না আমাদের ভেতরে কারও শরীরে করোনা আছে কি না, তাই কোনো জিনিস কেউ কাউকে দিচ্ছে না, যার যেটা লাগে ওটা নিয়ে নিতে হচ্ছে।


ভীতিকর পরিবেশ। কিন্তু স্বেচ্ছাসেবকেরা সবাই এত আন্তরিক যে খুব বেশি ভয় বা সমস্যা কারোই অনুভব হচ্ছে না।

হোটেলে স্টাফদের সঙ্গে লেখক। ছবি: সংগৃহীত
হোটেলে স্টাফদের সঙ্গে লেখক। ছবি: সংগৃহীত

ঘণ্টা পাঁচেক অপেক্ষার পর আমাদের বাস যখন এল, তখন একজন স্বেচ্ছাসেবক সবার পাসপোর্ট নিয়ে সবাইকে তার পেছনে দূরত্ব বজায় রেখে তাকে অনুসরণ করতে বলল। সবাই তাকে অনুসরণ করে বাসে ওঠার আগে সবার শরীরের তাপমাত্রা আবার পরীক্ষা করাল। বাসে বসার পরে আমাদের যার যার পাসপোর্ট ফেরত দিল।


দুই ঘণ্টা পর বাস গুয়াংজু বিমানবন্দরে এল। স্বেচ্ছাসেবকেরা বাস থেকে নামিয়ে অন্য একটা টিমের কাছে হস্তান্তর করল আমাদের।


বিমানবন্দরে নামার পর মনে হলো আমি কোনো হলিউডের মুভির দৃশ্যে ভুলে এসে পড়েছি! চারদিকে সাদা পোশাক পরা লোকজন, সবাই রোবটের মতো, ভীতিকর একটা পরিবেশ। ওই টিম কাগজপত্র, পাসপোর্ট সব তথ্য নিয়ে নতুন আরেকটি বাসে উঠিয়ে দিল। কিছুক্ষণ অপেক্ষার পরে বিমানবন্দর থেকে আসা যাত্রীদেরও আমাদের বাসে নিয়ে এল এবং বাসের ভেতরই সবার হোটেলের চেক-ইন করে হোটেলের রুম কার্ড হস্তান্তর করে দিল।
১৫ মিনিট পর বাস থামল। ভাবলাম এখন মনে হয় হোটেলে গিয়ে একটু বিশ্রাম নিতে পারব। এখানেও আশার গুড়ে বালি। আবার লাইনে দাঁড় করিয়ে সবার নমুনা নিয়ে বাস আবার ছাড়ল। আমাদের হোটেলে নামিয়ে দিল ভোর পাঁচটার দিকে।


হোটেল রুমে গিয়েই একটা ঘুম, কিন্তু সাতটার দিকে দরজায় কেউ নক করছিল বলে ঘুম থেকে উঠে দেখি তারা সকালের নাশতা নিয়ে এসেছে। পরেরবার ঘুম ভাঙল সন্ধ্যা ছয়টায়, দরজায় শব্দ হওয়ার কারণে। গিয়ে দেখি তারা দুপুরের এবং রাতের খাবার দরজার সামনে দিয়ে গেছে।


এই হোটেল ছিল আমাদের ট্রানজিট হোটেল, এখানে এক-দুই দিন রেখে তারা যাদের বাসা আছে সেই বাসার বাড়িওয়ালা/নিরাপত্তাকর্মী বা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে, যদি বাসায় কেউ অবস্থান না করে তাহলে তারা তাদের বাসায় গিয়ে দিয়ে আসে এবং দরজার সামনে একটা সেন্সর বসিয়ে দিয়ে আসে যেন ১৪ দিন বাসা থেকে বের হতে না পারে। এই ১৪ দিনের যাবতীয় বাজার বা কোনো কিছু দরকার হলে ওই বাসার যারা তদারকি করে, তারা সহযোগিতা করে কিনতে এবং পৌঁছে দিতে। যদিও আমার বাসা ছিল। বাসায় অন্য কেউ অবস্থান করার ফলে বাসার কর্তৃপক্ষ আমাকে গ্রহণে অস্বীকৃতি জানায়।


ওই দিন রাত ১০টার দিকে হোটেল কর্তৃপক্ষ আমাকে আমার ব্যাগ নিয়ে নিচে নামতে বলে, আমি ব্যাগসহ নিচে নেমে দেখি একজন স্বেচ্ছাসেবক আমার জন্য অপেক্ষা করছে একটি অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে, আমাকে জিজ্ঞাসা করে আমার সঙ্গে যদি অন্য কেউ অ্যাম্বুলেন্সে যায় তাহলে আমার কোনো অসুবিধা আছে কিনা? অনুমতি দেওয়ার পর আমি এবং অন্য একজন অ্যাম্বুলেন্সে রওনা দিলাম আমাদের পরবর্তী হোটেলের উদ্দেশ্যে। হোটেলে পৌঁছে আবার এরাও আমার নমুনা নিল। অগ্রিম পেমেন্ট করে ১৪ দিনের জন্য এই হোটেলে আমার থাকার ব্যবস্থা হলো।

নিয়মিত এভাবে পরীক্ষা করা হতো। হোটেল থেকে বের হয়ে আসার দিনের ছবি। ছবি: সংগৃহীত
নিয়মিত এভাবে পরীক্ষা করা হতো। হোটেল থেকে বের হয়ে আসার দিনের ছবি। ছবি: সংগৃহীত

এই ১৪ দিনের প্রতিদিন সকালে হোটেল থেকে খাবার দিয়ে যেত, একই সঙ্গে দিনে দুবার করে প্রতিদিন শরীরের তাপমাত্রা চেক করে যেত।


হোটেলের প্রতিটি রুমের সামনে একটা করে চেয়ার রাখা ছিল। হোটেল থেকে খাবার নিয়ে আসত তখন চেয়ারের ওপরে খাবার রেখে যেত, আবার আমার যখন কোনো ময়লা ফেলার দরকার হতো তখন ময়লার ব্যাগে ভরে চেয়ারের নিচে রেখে দিতাম। প্রতিদিন দুবার করে তারা হোটেলের করিডরে কীটনাশক ছিটিয়ে যেত এবং হোটেলের সবাই শতভাগ নিরাপত্তা পোশাক পরেই। তা ছাড়া সব বর্জ্য তারা পুড়িয়ে ফেলত।
হোটেল কর্তৃপক্ষ সকালের খাবার সরবরাহ করত, দুপুরের খাবার চাইলে তাদের থেকে কিনে বা অনলাইনে কিনে আনা যেত। যেহেতু বাঙালি, তাই অনলাইনের হালাল খাবার পেট ভরলেও মন ভরছিল না। ফলে গুয়াংজুপ্রবাসী ব্যবসায়ী দুলাল ভাই, সায়েদ ভাই, শামিম ভাই, রুমি ভাই, সায়েম ভাই, আনিক ভাই এবং মুরাদ নিয়মিত বাসায় রান্না করে খাবার দিয়ে যেতেন। এরই মধ্যে একদিন হোটেল থেকে জানানো হলো বাইরের খাবার খেয়ে একজন অসুস্থ হওয়ার কারণে তারা বাইরে থেকে আর খাবার আনতে দেবে না। তাদের খাবারই খেতে হবে।

একে তো রুমে বন্দী, সারা দিন কোনো মানুষের দেখা নেই, যারা রুমে চেক করতে আসে তারাও রোবটের মতো আসে-যায়, তার ওপর খাবার নিয়ে সমস্যা। যেদিন বাইরে থেকে খাবার আনা বন্ধ করল এবং হোটেল কর্তৃপক্ষ তাদের খাবারই আমাকে দিচ্ছিল। আমি এক চীনার বন্ধুকে দিয়ে হোটেলে ফোন করালাম। সে জানত আমি মুসলিম এবং আমার সঙ্গে বাংলা খাবার অনেক বার খেয়েছে বলে আমরা কী রকম খাবার খাই জানত, সেই সঙ্গে সে বাংলা খাবারের একজন ভক্তও বলা চলে। সে ফোন করে হোটেল কর্তৃপক্ষকে জানাল আমার মুসলিম খাবার দরকার, হোটেল কর্তৃপক্ষ তাকে জানাল যে তারা আমাকে মুসলিম খাবার দেবে।


এখানে সমস্যা হচ্ছে গিয়ে, তারা মুসলিম খাবার বলতে বুঝে যে শূকরের মাংস না হলেই হলো। অন্য যেকোনো মাংসই আমরা খেতে পারব। তাই আমি তাকে আবার বুঝিয়ে বললাম, তুমি হোটেলকে বলো, বাজারের মুসলিম দোকান থেকে হালাল মাংস কিনে আমাদের মতো একটু ঝোল ঝোল এবং ঝাল করে রান্না করে দিতে, তা না হলে আমি কিছুই খাব না এবং সেই রাতে আমি তাদের খাবার বর্জন করলাম। যেহেতু আমি বিদেশি, তাই তারা আমাকে নিয়ে চিন্তিত, পরের দিন বড় কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে আমার এবং আরও ৫ জন বিদেশি যারা ছিল ওদের খাবার বাইরে থেকে আনার অনুমতি দিল।


১২তম দিনে একজন চিকিৎসক এসে আবার আমার নমুনা নিয়ে গেলেন। যদি অবস্থা ভালো হয় তাহলে আমি ১৪তম দিনে মুক্তি পাব।


নমুনা নিয়ে যাওয়ার পরই শুরু হলো আমার অপেক্ষা এবং চিন্তা। যদি কোনো ঝামেলা হয়ে যায় এবং এখানে আরও কয়েক দিন থাকতে হয়, তাহলে পাগল হয়ে যাব। লম্বা সময় কোনো মানুষের মুখ দেখি না, ছোট একটা রুমে থাকতে থাকতে পাগলের মতো অবস্থা হয়ে গেছে।

কোয়ারেন্টিন শেষে হোটেল থেকে বেরিয়ে আসার সময় লেখক। ছবি: সংগৃহীত
কোয়ারেন্টিন শেষে হোটেল থেকে বেরিয়ে আসার সময় লেখক। ছবি: সংগৃহীত

১৪তম দিনে সকাল বেলায় হোটেল থেকে জানাল যে আমি বের হতে পারব। দুপুরে আমি চলে যেতে পারব। দুপুরের দিকে তারা আমাকে একটা রিলিজ লেটার দিল। যেটা দেখিয়ে আমি বাসায় যেতে পারব, সেই সঙ্গে তারা আমার এলাকার পুলিশ এবং বাসার কর্তৃপক্ষকে আমার বিস্তারিত জানিয়ে দিল, যেন আমাকে বাসায় গ্রহণ করা হয়। ১৪ দিন আমি তাদের আন্ডারে ছিলাম, একবার মনে হয়নি যে কোনো কিছুতে সিস্টেম ব্রেক হয়েছে। আমার দরজা খোলা ছিল, আমি চাইলেই নিচে নামতে পারতাম, কিন্তু কোনোভাবে পালানোর মতো অবস্থা নেই এবং আমি যদি রুম থেকে বের হই, তাহলে যখনই বের হব তখন থেকে আবার ১৪ দিন আমাকে ভেতরে থাকতে হবে। তাই একবারও সাহস হয়নি রুম থেকে বের হই, এমনকি একবারও সাহস হয়নি একটু উঁকি দিয়ে দেখি হোটেল করিডরটা কেমন।


যতবার আমাকে তারা ভেতরে রাখবে ততবার ৪০ হাজার টাকা দিয়ে ১৪ দিন করে বাড়তি থাকতে হবে। খুবই সহজ নিয়ম।


১৪তম দিনে আমি মুক্তি পেলাম এবং আমার মুক্তির খবর তারা বাসার কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশকে জানিয়ে রাখার ফলে বাসার কর্তৃপক্ষ আমার তথ্য লিপিবদ্ধ করে প্রবেশের অনুমতি দিল।