করোনাকালে প্রবাসীর অভিভাবক

প্রবাসের জীবনে নানা ঝক্কিঝামেলা থাকে। থাকে দেশে ফেরার আকুলতাও। ছবি: সংগৃহীত
প্রবাসের জীবনে নানা ঝক্কিঝামেলা থাকে। থাকে দেশে ফেরার আকুলতাও। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশি অনেক নাগরিক এই মুহূর্তে বিদেশে অবস্থান করছেন। অনেকে কাজের সুবাদে, অনেকে হয়তো ব্যবসার জন্য, অনেকে আবার পড়াশোনার জন্য।

বৈশ্বিক এই কঠিন ক্রান্তিক্ষণে এই ধরুন লকডাউনের জন্যই যিনি কোনো এক আত্মীয়ের অথবা বন্ধুর বাসায় আটকা পড়েছেন, অথবা ধরুন কারোর পরিবার এক জেলায় আর তিনি আটকা পড়েছেন অন্য কোনো জেলায়—কেমন লাগবে তাঁর, ভেবে দেখেছেন? বাংলাদেশে অনেকেই এই মুহূর্তে এমন পরিস্থিতিতে পড়েছেন। আবার এমনও অনেক ঘটনা দেখা যাচ্ছে যে করোনার এই সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার সময় লকডাউনের সুবাদে অনেক পরিবার ফিরে পেয়েছে তাদের অতীত পারিবারিক বন্ধন। এমনই বিচিত্র এই পৃথিবী!

এই সময়টায় পরিবারের সঙ্গে থাকা অথবা পরিবার থেকে দূরে থাকার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টা সেটা হলো, একটা নিরাপদ আশ্রয়ে থাকা। ভাইরাস সংক্রমিত হবে না এমন পরিবেশে অথবা লক্ষণ দেখা দিলেও দ্রুত চিকিৎসাসেবা মিলবে এমন পরিবেশে এবং শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য, পানীয় এবং যাবতীয় স্বাস্থ্যসম্মত ব্যবস্থাপনা আছে এমন পরিবেশে যে আশ্রয়, তাকেই বলছি নিরাপদ আশ্রয়।

বিদেশে অবস্থানরত নাগরিকদের নিজ নিজ আশ্রয় কতটুকু নিরাপদ? কী কী ধরনের চ্যালেঞ্জের সঙ্গে বসবাস করতে হচ্ছে তাঁদের? নিজের অসুস্থতা নিকটস্থ স্বাস্থ্যকর্মীকে বুঝিয়ে বলার মতো যথেষ্ট ভাষাজ্ঞান আছে কি সবার? পুরো পৃথিবীই যখন একটা কিংকর্তব্যবিমূঢ় অবস্থায়, তখন কতটা প্রত্যুৎপন্নমতি ধরে নিচ্ছি আমরা বিভিন্ন দেশে বসবাসরত বিভিন্ন স্তরের প্রবাসী বাংলাদেশিদের? তাঁদের মধ্য থেকে একটা বড় অংশের কি এই মুহূর্তে ত্রাণসহায়তা প্রয়োজন? করোনাকাল শেষে চাকরিবাকরি হারালেই বা কী করবেন তাঁরা? তাঁদের জন্য সরকারের কোনো দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা? এখনো খুঁজছি এমনই অজস্র প্রশ্নের উত্তর। দেশ, পরিস্থিতি, আর্থিক অবস্থা ইত্যাদি বিচারে হয়তো প্রশ্নগুলোর নানাবিধ উত্তর খুঁজে পাওয়া সম্ভব, কিন্তু এই মুহূর্তে বিদেশে অবস্থানরত প্রতিজন বাংলাদেশির মনের দুটি দিক আবশ্যিকভাবে ধরে নিচ্ছি: ১. তাঁরা কোনোভাবেই বিদেশের মাটিতে মারা যেতে চান না, মাতৃভূমির শ্যামলছায়ায় শেষনিশ্বাস ত্যাগ করতে চান।

প্রবাসের জীবনে দূতাবাস বা কনস্যুলেটগুলো মানুষের অভিভাবক হয়ে দাঁড়ায়। ছবি: সংগৃহীত
প্রবাসের জীবনে দূতাবাস বা কনস্যুলেটগুলো মানুষের অভিভাবক হয়ে দাঁড়ায়। ছবি: সংগৃহীত

২.
তাঁরা চান একটি অবলম্বন, যাকে আমরা বলি অভিভাবক। বেশি কিছু না, ‘ভালো আছেন তো?’ অন্তত এই প্রশ্নটা বাংলায় শুনতে চান নিকটস্থ কোনো অভিভাবকের থেকে। অন্তত এতটুকু হলেই যেন হবে!

তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে বসবাসরত এবং ইস্তাম্বুল বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক পর্যায়ে অধ্যয়নরত একজন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী হিসেবে উপর্যুক্ত ‘মনের দুটি দিক’ গভীরভাবে নিজের মধ্যে ধারণ করছি। বলা বাহুল্য, আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ অনুষদে অধ্যয়নরত একমাত্র বাঙালি শিক্ষার্থী আমি, আর ডরমিটরিতেও বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে আমিই একমাত্র বাঙালি। একাকিত্ব? তা তো বটেই কাজ করছিল। আমি অবশ্য ব্যক্তিগতভাবে এই একা থাকার খুব ভক্ত। তাই বন্দীদশার শুরুর দিনগুলোতে তো দারুণ একটা অনুভূতি হচ্ছিল। ভাবছিলাম, এই তো সুযোগ নিজেকে একান্ত কিছু সময় দেওয়ার। বাইরে যাওয়া নেই, সকাল সকাল ক্লাসের চাপ নেই। দারুণ তো! এমনিতেও আমি পূর্ণ বৃত্তি নিয়ে পড়তে এসেছি। তাই খাওয়াদাওয়া, থাকা, টিউশন খরচ, হাতখরচ—এসব নিয়ে সমস্যা নেই। দুশ্চিন্তা একেবারেই নেই বলতে গেলে। কিছু বিদেশি বন্ধুও জুটিয়ে নিলাম ডরমিটরির ভেতরে। আড্ডা, মুভি দেখা, গেম খেলা—সব মিলিয়ে অসাধারণ কাটল শুরুর তিন–চারটে দিন। পরে হঠাৎ লক্ষ করতে লাগলাম, কিছুই ভালো লাগছে না। অন্য বন্ধুদেরও দেখছি সবকিছুতে এক প্রকারের অনীহা। কেউ কাউকে দেখে হাসছেও না, কথাও বলছে না। দিনরাত মুঠোফোন আর কম্পিউটারে ডুবে আছে সবাই। আমিও নিজেকে আবিষ্কার করলাম, এত বই পড়া, মুভি দেখা, লেখালেখি করা সব রকমের পরিকল্পনা ছেড়ে অনবরত সোশ্যাল মিডিয়ার স্ক্রলে। কেমন যেন হতাশা ভর করে বসল।

ছোট ভাই দেশে নানার বাসায় থাকে। একটা সময় পর ইচ্ছে করেই কথা বলতাম না ওদের সঙ্গে। মামা, মামি, নানা, নানি, ভাইবোনগুলো সবাই একসঙ্গে ঘরের ভেতর লুডু খেলছে, আনন্দ করছে। ভালো লাগত, কিন্তু মন খারাপ হয়ে যেত ঠিক পরপরই। মনে হতো, কত একা আমি! কে আছে আমার এখানে? আজ যদি আমার কিছু একটা হয়ে যায়, কে করবে আমার দেখভাল? এখানে সব রকমের সুবিধা আমার আছে। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী হয়েছি তুরস্ক সরকারের বৃত্তিধারী হওয়ার সুবাদে এমনকি স্বাস্থ্যবিমা আছে, যার আওতায় যেকোনো অসুস্থতায় স্বাস্থ্যসেবা পেয়ে থাকি বিনা মূল্যে। কিন্তু ওই যে ইংরেজিতে যেটাকে বলে ‘সেন্স অব বিলংগিং’, সেটার প্রবল অভাববোধ করছিলাম। করোনাকালের মতো বৈশ্বিক সংকটে নিজ দেশ থেকে দূরে থাকা প্রত্যেকের মধ্যেই এই অভাববোধ যেন কয়েক গুণ বেড়ে যায়। আর ঠিক তখন দরকার পড়ে নিজ দেশীয় অভিভাবকের। নিয়ম অনুসারে, ইস্তাম্বুলে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের ক্ষেত্রে সেই অভিভাবক বাংলাদেশ কনস্যুলেট ইস্তাম্বুল।

বিভিন্ন দেশে বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিকদের যেকোনো ধরনের অসুবিধা—এই যেমন পাসপোর্ট হারিয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে অন্যান্য পরামর্শ, তথ্য ইত্যাদি ক্ষেত্রে সেসব দেশে দায়িত্বপ্রাপ্ত বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধি মিশনগুলো কাজ করে থাকে। বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য বিভিন্ন ধরনের সুবিধা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনে সেসব দেশের সরকারের সঙ্গে সভা-পরামর্শ করে থাকে মিশনগুলো। এর বাইরেও বাংলাদেশের সঙ্গে বিভিন্ন দেশের শিক্ষা, বাণিজ্যসহ অন্যান্য খাতে সম্পর্ক ও আদান–প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে থাকে বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিযুক্ত এসব মিশন।

করোনাভাইরাসের জন্য বিশ্বব্যাপী সৃষ্ট চলমান কঠিন পরিস্থিতিতে প্রায় সব কটি দেশের অর্থনীতিতেই একটা কঠিন পরিস্থিতির আভাস দেখা দিয়েছে। অনেক বড় বড় সেক্টর কলকারখানায় বিনিয়োগ কমে আসার পাশাপাশি চাকরিক্ষেত্রে দেখা যাবে/যাচ্ছে মন্দা। এমতাবস্থায় স্বভাবতই দেশগুলোকে হিমশিম খেতে হচ্ছে/হবে তাদের নিজেদের নাগরিকদের চাকরি ও অর্থের জোগান নিশ্চিত করতে। বিভিন্ন দেশ থেকে আসা, তাঁদের দেশে অবস্থানরত ও কর্মরত বিদেশি নাগরিকদের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে কতটুকু ভাবছেন বা ভাববেন তাঁরা? আর ভাবলেও এই বিদেশি নাগরিকদের অধ্যায়টা আদৌ প্রাধান্য তালিকায় ঠিক কত নম্বর অবস্থানে থাকবে, প্রশ্ন থেকেই যায়। বিদেশে নিযুক্ত বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধি মিশনগুলোর জন্য নিঃসন্দেহে খানিকটা নড়েচড়ে বসার সময় এসেছে। বিভিন্ন দেশের প্রেক্ষাপটে কতটা প্রস্তুত তারা? দেশগুলোর সরকারের নজরে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিকদের সুযোগ-সুবিধার বিষয়টা পারবেন তো ঠিকঠাক তুলে ধরতে? এতে লাভই বা হবে কতটুকু? বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিয়ে বিশেষ করে চাকরি হারানোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকা শ্রমিক শ্রেণিদের নিয়েও বা ভাবা হচ্ছে কতটুকু? সেটা সময়ই বলে দেবে।

তবে চলতি সময়ে আমার দেখা বাংলাদেশ কনস্যুলেট ইস্তাম্বুলের কিছু পদক্ষেপের কথা বলতে পারি, যেগুলো আমাকে বেশ আশান্বিত করেছে।

লেখক।
লেখক।

ইস্তাম্বুলে বসবাসরত বাংলাদেশিদের সঙ্গে ই–মেইল ও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে কনস্যুলেট নিয়মিত যোগাযোগ করে থাকে। গত ১০ মার্চ তুরস্কে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পরপরই বাংলাদেশ কনস্যুলেট ইস্তাম্বুলে বাংলা ভাষায় সচেতনতামূলক বিভিন্ন তথ্যসংবলিত ই–মেইল প্রেরণ করেছে বাংলাদেশিদের। এর বাইরেও তাদের কাছে বাংলাদেশিদের মুঠোফোন নম্বরের তালিকা রয়েছে। টেলিফোনেও নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করেছে ইস্তাম্বুলে অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে, তাঁদের ভালো-মন্দ জানতে চেয়েছে। বাংলাদেশিদের কোভিড-১৯ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় পরামর্শ, উপদেশ ও নির্দেশনা লাভের বিষয়টি নিশ্চিতের লক্ষ্যে তুরস্কে অবস্থানরত তিনজন বাংলাদেশি চিকিৎসকের যোগাযোগ নম্বর তাঁদের সম্মতিক্রমে অবমুক্ত করেছে বাংলাদেশ কনস্যুলেট ইস্তাম্বুল। বাংলাদেশিরা তাঁদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করতে পারেন এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ পেতে পারেন। পাশাপাশি কনস্যুলেট তাদের নিজস্ব টোল ফ্রি হটলাইন নম্বর চালু করেছে। বাংলাদেশিরা জরুরি প্রয়োজনে সেসব নম্বরে যোগাযোগ করতে পারে।

আরও একটি বড় রকমের চ্যালেঞ্জ ছিল কনস্যুলেটের জন্য। আর সেটা হলো, বাংলাদেশ থেকে অন্য দেশে যাওয়ার পথে অথবা অন্য দেশ থেকে বাংলাদেশে যাওয়ার পথে ইস্তাম্বুল বিমানবন্দরে যাত্রাবিরতিতে আটকা পড়া কিছু বাংলাদেশিকে সুস্থভাবে স্বদেশে ফেরত পাঠানো। হঠাৎ করে তুরস্কে সব আন্তর্জাতিক বিমান যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছিলেন প্রায় ৯ জন বাংলাদেশি যাত্রী। তাঁদের একটা বড় সময় বিমানবন্দরে থাকতে হয়েছিল। সে সময় তাঁদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করা, প্রয়োজনীয় স্যানিটাইজার, মাস্ক ও প্রয়োজনে খাবার সরবরাহ করেছে কনস্যুলেট। একপর্যায়ে কনস্যুলেট বিমানবন্দরে তাঁদের দেখভাল করার জন্য টার্কিশ এয়ারলাইনসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। পরবর্তী সময়ে তুরস্ক সরকার তাঁদের ১৪ দিনের জন্য কোয়ারেন্টিনে রাখার ব্যবস্থা করেছিল। ১৫তম দিন থেকে বাংলাদেশ কনস্যুলেট ইস্তাম্বুল তাঁদের জন্য একটি হোটেলে থাকার ব্যবস্থার আয়োজন করেছে। এর পাশাপাশি চালিয়েছে তুরস্ক সরকারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা। এদিকে তুরস্কেরও একদল নাগরিক আটকা পড়ে আছেন বাংলাদেশে। সে জন্য টার্কিশ এয়ারলাইনসের বিশেষ ফ্লাইটের আয়োজন করেছে তুরস্ক সরকার।

বাংলাদেশ কনস্যুলেট ইস্তাম্বুল ও বাংলাদেশ দূতাবাস আঙ্কারা এই সুযোগে বোঝাপড়া করে ফেলল তুরস্ক সরকারের সঙ্গে। সেই ৯ জন বাংলাদেশিসহ আরও বিভিন্ন কাজে তুরস্কে এসে আটকা পড়া সর্বমোট ২০ জন বাংলাদেশিকে নিয়ে বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে উড়াল দিল টার্কিশ এয়ারলাইনসের বিশেষ বিমান। ফেরার পথে বাংলাদেশে অবস্থানরত আটকে পড়া তুর্কি নাগরিকদের নিয়ে এল তাঁদের স্বদেশ তুরস্কে। নিশ্চয়ই বাংলাদেশে নিযুক্ত তুরস্ক সরকারের মিশনও একই রকমভাবে তৎপরতা চালিয়েছিল তুর্কি নাগরিকদের স্বদেশে ফেরানোর ব্যাপারে।

উদাহরণগুলো আশা জাগায়। সামনের দিনগুলোতেও এভাবে প্রবাসীদের উপকার করার পাশাপাশি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নে মিশনগুলো ভূমিকা রেখে যাবে, আশা করি। বিশ্বের সব প্রবাসীর অভিভাবক এই দূতাবাস, হাইকমিশন, কনস্যুলেটগুলো। কত বড় দায়িত্ব তাদের! বিশ্বের অন্যান্য দেশের বাংলাদেশ মিশনগুলো কী কী করছে, আমি বিশেষ জানি না। অথবা অন্য দেশগুলোর মিশনগুলো কী করছে, আমি জানি না। আমার ডরমিটরির বিদেশি বন্ধুগুলোর নিজ নিজ দেশের কনস্যুলেটও কি এই ক্রান্তিক্ষণে বাংলাদেশ কনস্যুলেট ইস্তাম্বুলের মতো কর্মঠ ভূমিকা পালন করছে কি না, আমি জানি না। আমি শুধু এতটুকু জানি, প্রবাস মাত্রই ভেতর থেকে একটা হাহাকার করা ভায়োলিনের সুর। অর্থ, চাকরি, সুযোগ, সুবিধা, অসুবিধা, অভাব, অর্থশূন্যতা, স্বাবলম্বী, অসহায়, বিত্তশালী, বিত্তহীন, পরিবারসহ, পরিবারছাড়া—এসব বিশেষ্য–বিশেষণের খুব ঊর্ধ্বে গিয়ে বিশ্বব্যাপী প্রবাসীরা খুব করে একজন স্বদেশীয় অভিভাবক চান, শেষনিশ্বাসটা ত্যাগ করতে চান মাতৃভূমিতে।

লেখক: শিক্ষার্থী, ইস্তাম্বুল বিশ্ববিদ্যালয়, ইস্তাম্বুল, তুরস্ক।