সামাজিক দূরত্ব রেখে ইতালিতে ঈদের নামাজ

প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে নামাজ আদায়। ছবি: সংগৃহীত
প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে নামাজ আদায়। ছবি: সংগৃহীত

ইতালিতে পবিত্র ঈদ উপলক্ষে প্রায় ২৬ লাখ মানুষ খোলা মাঠে ও মসজিদে নামাজ আদায় করেছেন। দেশটি যখন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত সেই সময়ে লকডাউনের ধাপে ধাপে শিথিলতা আসলেও আশঙ্কা ছিল খোলা মাঠে ও পার্কে ঈদের নামাজ আদায়ের হয়তো অনুমতি দেবে না প্রশাসন। বরাবরের মতো এবারও খোলা মাঠে ও পার্কে ঈদের নামাজ আদায় করেন প্রবাসী বাংলাদেশিসহ অন্য বিদেশীরা।

রাজধানী রোমে পিয়াচ্ছা ভিক্টোরিয়ার জাতীয় ঈদগাহে মাঠে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এখানে ইতালিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবদুস সোবহান সিকদারসহ রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত হয়ে ঈদের নামাজ আদায় করেন।

সকাল সাড়ে সাত সাতটা থেকে ত্রিশ মিনিট পর পর ছয়টি জামাত করার কথা থাকলেও আটটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। ইতালিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবদুস সোবহান সিকদার তাঁর সংক্ষিপ্ত ভাষণে করোনা সংকটের এই ক্ষণে যে ১০ জন প্রবাসী বাংলাদেশি মারা গেছেন তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন। প্রবাসী বাংলাদেশিদের তিনি বলেন, ইতালি সরকারের দেওয়া এই স্বাস্থ্যবিধি আমাদের আরো কিছুদিন মেনে চলতে হবে, নিজেদের কর্মের ও ব্যবসার ক্ষেত্রগুলোতে সর্বোচ্চ সর্তকতা ও সচেতনতা অবলম্বন করে নিজেদের রক্ষা করতে হবে।

প্রতিবছর ইতালির বিভিন্ন স্থানে কমপক্ষে ৫০ টি খোলা মাঠে ঈদের নামাজ আদায় করা হয়। করোনা ভাইরাসের কারণে এবার রাজধানী রোমে সাতটিসহ খুব কম সংখ্যক স্থানে খোলা মাঠে ঈদের নামাজের অনুমোদন পাওয়া গেছে। করোনা ভাইরাসে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত উত্তরাঞ্চলীয় শহর মিলানোতে খোলা মাঠে ঈদের নামাজের সুযোগ দেয়নি প্রশাসন। তবে মসজিদগুলোতে সাতটি করে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ঘরে ঘরে ঈদ করছেন প্রবাসীরা। ছবি: সংগৃহীত
ঘরে ঘরে ঈদ করছেন প্রবাসীরা। ছবি: সংগৃহীত

এখানকার জাতীয় ঈদ উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক যে হাজী মো. আব্দুর রাজ্জাক ও সদস্যসচিব আব্দুর রব ফকির বলেন, আটটি জামাত সুসম্পন্ন হয়েছে। সরকারের দেওয়া প্রতিটি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেছি সবাই। এর ফলে বাংলাদেশিদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে।

রাষ্ট্রদূত আবদুস সোবহান সিকদার বক্তব্য রাখছেন। ছবি : সংগৃহীত
রাষ্ট্রদূত আবদুস সোবহান সিকদার বক্তব্য রাখছেন। ছবি : সংগৃহীত

প্রবাসী বাংলাদেশিরা ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করার চেষ্টা করলেও করোনা ভাইরাসের কারণে ছিলেন হতাশ এবং কিছুটা আতঙ্কিত। বিশেষ করে অনেকেরই এখনো কাজ শুরু হয়নি। সেই মার্চ থেকে তারা বেকার। এ দিকে অনেকেই ঘরে থেকেই ঈদের আনন্দ করেছেন। একে অন্যের বাসায় গিয়েছে, প্রতিটি বাসায় রকমারি বাঙালি খাবার পরিবেশন করেছে। মূলত ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতেই নিজেদের নিরাপদে ও সর্তক রাখার চেষ্টা করছেন সবাই। আবার দীর্ঘ আড়াই মাসের লকডাউনে থেকে অনেকে হাঁপিয়ে উঠেছিলেন বলেই পরিবার নিয়ে এদিক সেদিক ঘোরাফেরা করতে ও দেখা গেছে।