টিনএজারদের প্রতি আন্তরিক হোন

টিনএজ বয়সে মোহ থাকে, বাপ-মা ভাই বোনের ভালোবাসায় মুড়িয়ে থাকায়...বাস্তবতা জানা যায় না! হরমোন চেন্জের সঙ্গে থাকে তীব্র আবেগ! আমাদের বাস্তবতায় বাবা-মা কেউই জানে না আবেগ কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়! তারা সন্তানদের শেখাতেও পারেন না কিভাবে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করা যায়...এ জন্যই খেস্তি আর ঝাটার বাড়ি সবার কপালেই জোটে! সেটা ভিন্ন!
সেই তীব্র আবেগে আমরা ভুল মানুষকে সুতীব্রভাবে ভালোবাসি! মনে হয় জীবন বৃথা একে ছাড়া, ওঁকে ছাড়া! এটা কিন্তু টিনদের জন্য! তাদের সঙ্গে যদি বয়স্ক কেউ প্রেম করার চেষ্টা করে সেটা অন্যায়! যদিও আমাদের দেশে ১০ বছরের বালিকাকে ৩০ বছরের লোক বিয়ে করেন! কেউ জানেও না সেটা অন্যায়! ২০ বছরের মেয়ে যদি সজ্ঞানে, সেচ্ছায় কোনো ৬০ বছরের কাউকে বিবাহ করে-সেটা আলাদা! ১৫ বছর বয়সী কাউকে ২৫ বছর বয়সী কেউ প্রলুব্ধ করলে সেটাও শাস্তিযোগ্য!

তো যে সুতীব্র আবেগ ইমোশন নিয়ে বলছিলাম... টিনএজারদের ভালোবাসা ভুল মানুষের সঙ্গেই হয়! এরা নিজেদের চিনে না- অন্ধ আবেগে অন্য কাউকে কি চিনবে! স্বপ্ন ভঙ্গ হওয়ার তীব্র যন্ত্রনায় অনেকেই জীবন শেষ করে, অনেকে বিপথে যায়! কাউন্সেলিং তখন খুবই জরুরি! অথচ আমাদের তা নেই! আমরা আয়েশে বসে, পান চিবোতে (অন্য কিছু হতে পারে) চিবোতে করি সমালোচনা আর তার সঙ্গে জীবন্মৃত মানুষটার, ওপেন কাটা ঘায়ে মরিচ আর লবন ডলা! শুধু একবার ডলেই ক্ষ্যান্ত নই! বার বার ডলি, ঘা বানাই, নতুন ঘষায় নতুন ঘা বানিয়ে পৈশাচিক আনন্দ পাই! কারণ আমাদের জীবনে আসলে নির্মল আনন্দ নাই!

আমাদের জীবনে ভালোবাসা নাই! আমাদের জীবনে কোনকিছুই নাই, তাই অন্যের অপ্রাপ্তি আর কষ্ট আমাদের পৈশাচিক আনন্দ দেবার পাশাপাশি শক্তি যোগায়...পিশাচ হওয়ার! অথবা নিজেদের ভিতরের পিশাচটা নিজেকে প্রকাশ করার সুযোগ পায়! কতজন সে পিশাচটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে? আর টিনএজাররা নিজেদের মাঝে গুমড়ে মরে! প্লিজ নিজের বাচ্চাগুলোকে ভালোবাসতে শিখুন, তাদের গভীর ক্ষতে মমতার হাত রাখুন! এই পিশাচরুপী বন্ধুদের হাত থেকে রক্ষা করুন! তাদের জানতে দিন...ইট মে নট বি দেয়ার ফল্ট! এটা বড় হওয়ার একটা প্রক্রিয়া, অ্যান্ড দে উইল বি ওঁকে!

আমার বন্ধু তার প্রেমিকাকে ঠিকই বিয়ে করেছে ... কিন্তু কয়জনের সে ম্যাচুরিটি থাকে প্রতিটি বিশাল স্রোত সামলানোর? ওর কথা ছিলো.. “আমার হবে না, মানতে পারি, কিন্তু অন্যের হবে?- কিভাবে মানি!” খুব সুখি দম্পতি! বউ যখন তারে ইচ্ছামত ঝাড়ে, চুপ হয়ে থাকে... আমি ওদের দেখে হাসি! ভালোবাসার গভীরতাকে সম্মান করি!

সবাই যে সুখী হয় তাও নয়! ভালোবাসার স্রোত তারা সামলাতে পারলেও বিবাহের পর মোহভঙ্গ হয়...অনেক সময় হয়তো সেটা মোহও নয়...দৈনন্দিন জীবনের টানপোড়েনে...ভালোবাসাই গায়েব হয়ে যায়! জীবনে আসে অন্য মানব/মানবী! আবারও সে টানপোড়েন....সুখী কি কেউ হয়? আবারও সুখী হওয়ার নিরন্তর প্রচেষ্টা .... হয়তো কেউ সুখী হয়, অথবা কম্প্রোমাইজ করতে শেখে, সুখী হতে শেখে!

নিজেকে ভালোবাসুন, এতটাই ভালোবাসুন যাতে কারো ভালোবাসার কমতিতে- নিজেকে অপাংক্তেয় না মনে হয়! নিজেই যদি নিজেকে ভালোবাসতে না পারেন, তাহলে অন্যের কি দোষ যদি আপনাকে ভালোবাসতে না পারে? আর যদি ভালোওবাসে... এটা বিশ্বাস করার কোনো কারন নেই যে, সে কখনোই আপনার হাতটা ছাড়বে না! (চারটা বৌ মুসলমানের সুন্নত!)

পৃথিবীর প্রতিটা মানুষ ই স্বার্থপর... কারো স্বার্থে লাগলেই তার ভেতরের অমানুষটার মুখামুখি আপনাকে হতেই হবে! আর প্রেমাস্পদের মৃত্যুও অবিশংবাদিত! নিজেকে যোগ্য করে গড়ে তুলুন! যাতে আপনার কাউকে না লাগে, বরন্চ আপনি অন্যের দুর্বল হাতটা ধরে তার সাহায্য করতে পারেন!