৭ জুন থেকে করোনায় মৃত্যু নেই স্পেনে, স্বস্তি জনজীবনে

হাসপাতালে নার্সরা খেলছেন ছোট্ট শিশুর সঙ্গে। ছবি: সংগৃহীত
হাসপাতালে নার্সরা খেলছেন ছোট্ট শিশুর সঙ্গে। ছবি: সংগৃহীত

স্পেন রাষ্ট্রীয় জরুরি অবস্থার সমাপ্তি হবে ২২ জুন। সেই সঙ্গে ষষ্ঠবারের মতো লকডাউনে ইতি টানবে স্পেন। স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরবে স্পেনের জীবনযাত্রা। ৭ জুন থেকে কোনো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। তবে আক্রান্ত হচ্ছেন এখনো। স্বস্তি ফিরছে জনজীবনে।

এদিকে স্পেনের স্বাস্থ্য বিভাগ আগামী সেপ্টেম্বর থেকে করোনা মহামারি মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রাখবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। সরকারঘোষিত লকডাউনের শেষ ধাপে থাকায় খুলে দেওয়া হচ্ছে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, শপিং মল, অফিস-আদালত।

লকডাউনের মিরাকল সফলতা পেয়েছে স্পেন। স্পেনে মৃতের সংখ্যা শূন্যের কোঠায় নিয়ে এসেছেন কয়েকবার। করোনা নিয়ন্ত্রণে ইউরোপে স্পেন মডেল। অভূতপূর্ব সাফল্যে প্রশংসায় ভাসছেন স্পেনের প্রেসিডেন্ট পেদ্রো সানচেস। ষষ্ঠবারের মতো লকডাউন দিয়েছে স্পেন, যা ইউরোপে সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী। জরুরি অবস্থা ছাড়া মৃত্যুর সংখ্যা হতো ব্যাপক।

রাষ্ট্রীয় জরুরি অবস্থা জারি থাকায় করোনা মহামারিতে স্পেনে জীবন রক্ষা হয়েছে প্রায় তিন লাখের বেশি মানুষের বলে মন্তব্য করেছেন প্রেসিডেন্ট পেদ্রো সানচেস।

রাষ্ট্রীয় সতর্কতা জারি আর এক সপ্তাহ আগে করলে স্পেনে করোনা মহামারিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৬০ শতাংশ কম হতো। ফাউন্ডেশন ফর অ্যাপ্লাইড ইমোনমি স্টাডিজের (FEDEA) করা এক গবেষণায় এমনই তথ্য উঠে এসেছে। গবেষণায় বলা হয়েছে, ১৫ মার্চের পরিবর্তে যদি এক সপ্তাহ আগে ৭ মার্চ স্পেনকে লকডাউন করা হতো তাহলে স্পেনে আক্রান্তের সংখ্যা বর্তমান সংখ্যা থেকে ১ লাখ কম হতো। এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ২৮ হাজারেরও বেশি।

লকডাউনে যাওয়া ফ্রান্স, ইতালি ও যুক্তরাজ্য—এখনো তাদের মৃতের সংখ্যা শূন্যের কোঠায় নিয়ে আসতে পারেনি।

১৪ মার্চ থেকে লকডাউন শুরু হলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর অবস্থান নেয়, সরকারের পক্ষ থেকে কড়া বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। চারটি ধাপে লকডাউনের পরিকল্পনা হাতে নেয় স্পেন সরকার। রাজধানী মাদ্রিদ, বার্সেলোনা, মালাগা ও ভ্যালেন্সিয়ার মতো শহরগুলো লকডাউন শিথিল হয় ধীরগতিতে। যে কারণে সংক্রমণের বিস্তার লাগাম টেনে ধরতে সক্ষম হয়েছে। প্রথম থেকেই স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা দেওয়ার কারণে কম বয়সীদের ছোট একটি অংশ সংক্রমিত হয়েছে খুবই কম। স্বল্প সময়ের জন্য হলেও বৈশ্বিক লকডাউন অসংখ্য জীবন বাঁচিয়েছে। করোনা মহামারিতে স্পেন যত মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে তার ৯৫ শতাংশ℅মানুষ বৃদ্ধ এবং তাঁদের বয়সের ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে।