আব্বার আধো ছায়া স্মৃতি

স্মৃতিতে আমার আব্বার সঙ্গে হেঁটে চলা।
স্মৃতিতে আমার আব্বার সঙ্গে হেঁটে চলা।

বাবা দিবস উপলক্ষে বাবাকে নিয়ে লিখতে বসলাম। কোথা থেকে শুরু করব ভাবছি। আমার আব্বার সঙ্গে আমার খুব বেশি একটা স্মৃতি নেই। কারণ, আমার আব্বার সঙ্গে আমার বসত জীবনটা খুবই ছোট্ট ছিল। আর যতটুকু ছিল তার শেষটুকু ছিল বেদনার নীল আসমানে আষ্টেপৃষ্ঠে ঘেরা। আব্বার সঙ্গে আমার শুরুটা হয়ে ছিল এক অনাকাঙ্ক্ষিত পাওয়া নিয়ে।

আমাদের ছয় ভাই–বোনের মধ্যে আমি তৃতীয়। অর্থাৎ আমি বড় সন্তানও না আবার ছোট সন্তানও না। তারপরও আমি আমার আব্বার সবচেয়ে প্রিয় সন্তান ছিলাম। আমাকে দেখে আঁতুড়ঘরে আমার আব্বার ভালো লাগা ছিল, আর যার বিস্তৃতি ছিল তাঁর জীবনের শেষ পর্যন্ত।


শৈশবের স্মৃতি হাতড়ালেই দেখি আমাদের মানুষ করতে আব্বার আদর-যত্ন ছিল অপরিসীম। খুব মনে পড়ে আমাকে অনেক ডলে–কচলে গোসল করানোর পর ছিল গ্লিসারিন মাখানোর পালা। একটা শিশিতে গ্লিসারিনের সঙ্গে পানির অনুপাত ঠিক করে মেশানো তরল আমার হাত-পা এবং মুখে মালিশ করতেন। আব্বার অগোচরে আমি জিহ্বা দিয়া আমার মুখের আশপাশ থেকে মিষ্টি সাধের গ্লিসারিন চেটেপুটে রাখতাম। তারপর আসত চুল আঁচড়ানোর পালা।

আর চুল আঁচড়ানো শেষ করতেন আমার দুই কানের পাশ দিয়ে চুলগুলো পেছনের দিকে এঁটে–সেপ্টে দিয়ে। আমার খুবই অপছন্দের ছিল আব্বার এই চুল আঁচড়ানোর স্টাইলটা। তবে সেটা কোনো দিন আব্বাকে জানাতে দিইনি। মনে আছে পাশে বসে আমার লেখাপড়া শেখানোর পাশাপাশি অতি যত্নের সঙ্গে আব্বা আমাকে হাতের লেখা শেখাতেন। আব্বার সঙ্গে হাঁটার সময় আব্বার হাতের কনিষ্ঠ আঙুল ধরে হাঁটতাম।


স্কুলজীবনের হাতেখড়ি দ্বিতীয় শ্রেণিতে। প্রথম যেদিন স্কুলে ভর্তি করে আব্বা রেখে এলেন, সেদিন আমি সারা ক্লাস আব্বার জন্য কেঁদেছিলাম। সে রাতে ভীষণ জ্বর এসেছিল। আমার মনে পড়ে, আব্বাকে ছাড়া নানুবাড়িতে মায়ের সঙ্গে থাকলেও মন খারাপ করতাম। আবার আব্বারও আমাকে ছাড়া থাকতে কষ্ট হতো। একবার মা আর সব ভাইবোন একসঙ্গে নানুবাড়ি গেল। বাড়িতে আব্বার সঙ্গে একা থেকে গেলাম। ছোট চাচা আর আমরা পাশাপাশি থাকতাম। চাচাতো ভাইবোন আর আব্বার সঙ্গে আনন্দেই দিনগুলো কাটছিল। কিন্তু বিধি বাম। একদিন চাচাতো বোনের চিকেন পক্স উঠল। এই ছোঁয়াচে রোগ থেকে আমাকে কীভাবে রক্ষা করা যায়, তা নিয়ে আমার সঙ্গে বেশ চিন্তাভাবনা করলেন। এদিকে ব্যবসায়িক কাজেও আব্বার অনেক ব্যস্ততা। আর কী করা, এক আত্মীয়ের সঙ্গে আমাকে নানুবাড়িতে পাঠিয়ে দিলেন। অনেক আদর–সোহাগ করে বারবার বললেন যেন আমি মন খারাপ না করি। যাত্রাপথে আত্মীয় আমাকে ব্যস্ত রাখার জন্য অনেক বাংলা শব্দের ইংলিশ জানতে চেয়েছিলেন। আমার সব জানা সত্ত্বেও উত্তরই ছিল ‘আমি পারি না।’ সারা রাস্তা আমি তাঁর সঙ্গে একটি কথাও বলিনি। আব্বাকে ফেলে আসার কষ্ট আর বেদনা একত্রে দলা পাকিয়ে কথা বলার ইচ্ছা হারিয়ে গিয়েছিল। আমি যখন নানুবাড়ির উঠানে এসে দাঁড়ালাম আমার সব ভাইবোন এসে আনন্দে আমাকে ঘিরে ধরল। আমার কারও দিকে কোনো খেয়াল ছিল না। শুধু দেখলাম মা হালকা হাসিমাখা মুখে বেশ একটু দূরে স্থির দাঁড়িয়ে আছেন। মা মনে হয় আমার বুকের ভেতরের কষ্টটা বুঝতে পারছিলেন। আব্বাকে ফেলে আসা কষ্ট আর বেদনার দলা মহাপ্লাবনের বাঁধভাঙা ঢেউয়ের ধাক্কায় টুকরা টুকরা হয়ে বিশাল এক ‘আব্বা’ চিৎকার দিয়ে মাকে এক দৌড়ে এসে জাপটে ধরে কান্নায় ভেসে গিয়েছিলাম। আমার কান্নার মধ্যে একটাই কথা ছিল, ‘আমি আব্বার কাছে যাব।’ কিছুতেই মা আমার কান্না থামাতে পারছিলেন না।


বেশ কিছু ঘটনা স্মৃতিতে দাগ কেটে আছে। ঈদের আগের দিন আব্বা আর মা মেহেদি বাটা নিয়ে বসে যেতেন আমাদের দুই বোনের হাত সাজাতে। আব্বা আমাকে আর মা আমার বড় বোনকে হাতে মেহেদি দিয়ে দিতেন। ঈদের ময়দানে আমাকে পাশে নিয়ে আব্বা নামাজ পড়তেন। একবার ঈদের আগের দিন আমার পায়ে একটা পেরেক ফুটে ছিল। পায়ের ব্যথায় আমি দাঁড়াতে পারছিলাম না। আব্বা আমাকে কোলে করে ঈদগাহের সঙ্গে লাগোয়া এক বাড়িতে বসিয়ে রেখে ঈদগাহে নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন।

আব্বা মোটরসাইকেল নিয়ে কাজে বাইরে যেতেন, মাঝেমধ্যে আমাদের একটু ঘুরিয়ে আনতেন। আব্বার এ ধরনের অল্প কিছু স্মৃতি মনের আনাচকানাচে সব সময় ভেসে বেড়ায়। তবে আব্বার শারীরিক অসুস্থতার স্মৃতি আমাকে সব সময় ব্যথিত করে।

আমি যখন চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ি তখন কী এক অজানা রোগ আমার সতেজ, বলিষ্ঠ আব্বার শরীরে বাসা বাঁধল। সেই থেকে শুরু হলো আব্বার চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতালের কেবিনে আর বাড়িতে আমাদের জীবনসংগ্রাম। আর শেষ হলো আমি যখন কেবল অষ্টম শ্রেণিতে (ফেব্রুয়ারি) উঠেছি। আব্বা তৃতীয় শ্রেণিতে আমাকে নিয়মিত পড়ানো এবং প্রতিটি পরীক্ষার প্রতিটি প্রশ্ন বাসায় আসার পর খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে জানতে চাইতেন, সেই তিনিই আমার চতুর্থ শ্রেণি থেকে পড়ালেখার কোনোই খোঁজ নিতে পারলেন না। মোটামুটি সব সময় আব্বার অক্সিজেন সিলিন্ডারের প্রয়োজন হতো। সেই জন্য হাসপাতালের কেবিনই তাঁর জীবনচলার অংশ হয় গেল। হাসপাতালটা বাসা থেকে বেশি দূরে ছিল না। আমরা ভাইবোন মাঝেমধ্যে আব্বাকে দেখতে যেতাম। আব্বাও বাড়িতে আসা জন্য সব সময় অস্থির থাকতেন। তাই একটু ভালো অনুভব করলেই আব্বাকে বাড়িতে আনা হতো। আমরা ভাইবোনেরা খুব খুশি হতাম আব্বাকে পেয়ে। আব্বা হাঁটতে পারতেন না, সব সময় বিছানায় শুয়ে থাকতেন। আমরা ভাইবোন আর মা অনেক যত্ন করতাম আব্বাকে। এত অসুস্থতার মধ্যেও আব্বা বলতেন আমার হাতের ছোঁয়া নাকি আব্বার শরীরে সব থেকে আরাম লাগত। আমি আব্বার হাত-পা ডলে দিলে কিংবা মাথায় হাত দিলে আব্বা আরামে চোখ বুজে থাকতেন। মাঝেমধ্যে আমার ফুফু আর নানু আসতেন আব্বার সেবা-যত্ন করতে। কিন্তু অক্সিজেন সিলিন্ডারের প্রয়োজনে আব্বাকে আবার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হতো। তখন ইনহেলারের ব্যবহার বাংলাদেশে ছিল না। আব্বার সঙ্গে মা–ও হাসপাতালে থাকতেন। কেমন যেন এক অনিশ্চয়তার আর বিষণ্নতার মধ্য দিয়ে দিনগুলো কাটত। আমরা নিজেরাই নিজেদের অভিভাবক হয়ে বাঁচার সংগ্রাম করতে লাগলাম।

আমি ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ি, একদিন ভোররাতের দিকে নানু সব ভাইবোনকে ঘুম থেকে উঠিয়ে দিলেন। আব্বার অবস্থা ভালো না থাকায় ঢাকায় নিতে হবে। হাসপাতাল থেকে সরাসরি অ্যাম্বুলেন্সযোগে আব্বা-মাকে বাড়ির গেটে আনা হলো আমরা যেন আব্বাকে শেষ দেখাটা দেখি। মিনিট পাঁচেকের জন্য অ্যাম্বুলেন্সটা দাঁড়িয়ে ছিল বাড়ির সামনে। আব্বাকে দেখলাম শীর্ণ দেহে শুয়ে আছেন অক্সিজেন সিলিন্ডারসহ। আমার মায়ের মুখটা ছিল বেদনার মেঘে ঢাকা। সেই দিনের সেই ভোরের আলো-আঁধারিতে অ্যাম্বুলেন্সটা সাইরেন বাজিয়ে রাস্তার বুক চিরে ছুটে চলে গেল। আমার বুকের পাঁজর ভেদ করে এক নিদারুণ মর্মপীড়ায় আমি হতবিহ্বল হয়ে দাঁড়িয়ে অ্যাম্বুলেন্সটা চলে যাওয়া দেখলাম। সেদিন অসুস্থ আব্বার পাশাপাশি বিষণ্ন মায়ের মুখখানির ভাবনায় আমার দুচোখ ছাপিয়ে পানি পড়ল। আব্বা-মা ছাড়া আমরা ছোট ছোট ভাইবোনেরা বাড়িতে সবাই অনেক মন খারাপ করে থাকতাম। আমার এই বয়স অবধি আমি আজও অ্যাম্বুলেন্সের সাইরেনের শব্দে হকচকিত হই, ফিরে যাই আমার সেই বিষাদময় আলো–আঁধারিতে ভোরবেলায়। মাস দুয়েক চিকিৎসার পর একটু সুস্থ আব্বাকে নিয়ে মা ফেরত এসেছিলেন। এভাবে দিনের পর দিন রাজশাহী, ফরিদপুর, যশোর হাসপাতালে আব্বার চিকিৎসা চলেছে। সেই সঙ্গে চলেছে আব্বাকে বাঁচানোর জন্য আমার মায়ের অক্লান্ত নিরলস প্রচেষ্টা। আব্বার চিকিৎসার পেছনে যেখানে যত টাকাপয়সা ছিল সব শেষ হলো। তারপর শুরু হলো জিনিসপত্র আর জমি বিক্রি করে চিকিৎসা। তবে আমার মনে খুব দাগ কেটেছিল, যেদিন আমার আব্বার শখের টুটু বোর রাইফেলটা বিক্রি হয়ে গেল। সেদিন লুকিয়ে লুকিয়ে অনেক কেঁদেছিলাম। ঘরের যে কোনাটাতে রাইফেলের বক্সটা থাকত, সেদিকটা আমার কাছে খুব ফাঁকা লাগত।

আব্বা বুঝতে পারতেন ওনার বিদায়ের পালা কাছে চলে আসছে। শারীরিক অসুস্থতার পাশাপাশি আমাদের ভবিষ্যতের চিন্তায় অস্থির হয়ে পড়তেন। আর কিছুদিন বেঁচে থাকার জন্য আল্লাহর কাছে কতই না প্রার্থনা করতেন। আমাদের ভবিষ্যতের চিন্তায় সব সময় বিচলিত থাকতেন। আমার ফুফু-চাচাদের হাত ধরে আব্বা অঝোর ধারায় কাঁদতেন, ‘আমি দুনিয়াতে পাঁচটা বছর বাঁচতে চাই, আমার সন্তানেরা খুব ছোট, ওদেরকে একটু বড় দেখে যেতে চাই।’

ডাক্তারদের দুই ধরে হাউমাউ করে কাঁদতেন, ‘আমি আর পাঁচটা বছর দুনিয়াতে বাঁচতে চাই, আমার যে ছোট ছোট ছেলে মেয়ে।’ আব্বার একদিকে যেমন ছিল অসুস্থতার কষ্ট, অন্য দিকে তেমন ছিল আর পাঁচটা বছর বাঁচার আকুতি। কী এক বেদনা সব সময় মুখে লেপ্টে থাকত।

আব্বার বিদায়ের দিনটা আমার খুব মনে আছে। আব্বা জীর্ণ-শীর্ণ দেহে নিস্তেজ হয়ে শুয়ে আছেন। মা আমাদের সব ভাইবোনকে আব্বার পাশে থাকতে বলেন। আমার বড় দুই ভাইবোন আব্বার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছিল, মা আব্বার পায়ের নখ কেটে দিচ্ছিলেন আর আমি মার পাশে বসে আব্বার পা ডলে দিচ্ছিলাম, আমার ছোট দুই ভাইবোন আব্বার দুই পাশে দুই হাত ডলে দিচ্ছিল। আর সবচেয়ে ছোট বোনটা আশপাশেই শিশুসুলভ আচরণে ঘোরাঘুরি করছিল। আব্বা ওনার জীর্ণ হাতটা একটু উঁচু করে হাতের ইশারায় আমাকে কাছে ডাকলেন। আমি আব্বার মাথার কাছে বসে দুই হাতে আব্বার হাতটা জড়িয়ে ধরলাম। মনে হলো আব্বা কিছু বলতে চান। মুখের কাছে মুখ নিয়ে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, ‘আব্বা, আপনি কি কিছু বলবেন?’ আমার হাতটা একটু চেপে ধরে খুব কষ্টে অস্পষ্ট স্বরে বলেন, ‘আমি বলছি চঞ্চল, ললি (আমার বড় দুই বোনের নাম)...।’ আর বলতে পারলেন না, খুব চেষ্টা করলেন কথা বলতে। কথাগুলো জড়িয়ে গেল। আমি বললাম, ‘আব্বা, কী বললেন? আমি শুনতে পারি নাই।’ আব্বা জোরে একটা শ্বাস নিয়ে শক্তি সঞ্চয় করে আবার বললেন, ‘আমি বলছি চঞ্চল, ললি...।’ আবার শেষ করতে পারলেন না। আমি আবারও বললাম, ‘আব্বা, কী বললেন? আমি শুনতে পারি নাই।’ এবারও আব্বা জোরে একটা শ্বাস নিয়ে, সমস্ত শক্তি একত্রে করে বললেন, ‘আমি বলছি চঞ্চল, ললি...।’ কথা বলতে আব্বার খুব কষ্ট হচ্ছে দেখে পরম মমতায় মা নিষেধ করলেন, ‘থাক, এত কষ্ট হচ্ছে কথা বলতে, কথা বলার দরকার নাই।’ আব্বাকে দেখতে লাগল কেমন এক যুদ্ধে পরাভূত বীর যোদ্ধা সৈনিকের হতাশার গ্লানিতে মুখ থুবড়ে পড়া। এটি আমার আব্বার অব্যক্ত শেষ কথা ছিল।
আমার আজও জানতে ইচ্ছা করে আব্বা আমাকে কী বলতে চেয়েছিলেন, কী ছিল আব্বার শেষ ইচ্ছা! নিজের মনে নিজেই তৈরি করি আমার এই প্রশ্নের বিভিন্ন উত্তর।

আমার আব্বা-চাচারা ছয় ভাই। আমার আব্বা পাঁচ নম্বর ছিলেন। কিন্তু নিয়তির নির্মম পরিহাস, আমার আব্বাকেই পৃথিবী ছাড়তে হয়েছে সবার আগে। আব্বার এই অকালপ্রয়াণে ফুফু-চাচাদের দেখেছি অনেক শোকাহত। সংসার-সন্তানদের ফেলে যে নিরলস প্রচেষ্টায় মাকে দেখেছি আব্বাকে বাঁচানোর সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়তে। আব্বার চলে যাওয়ার পর মা সেই একই নিরলস প্রচেষ্টায় আমাদের বাঁচানোর সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। আমাদের টেনে তুলতে সেই সঙ্গে ছিল আমার নানু আর ফুফু-চাচাদের আন্তরিক সহযোগিতা।


দিন বদলেছে, কিন্তু স্মৃতিতে থেকে গেছে অতীত জীবনের অসম্পূর্ণ চাওয়া–পাওয়া। মনের গহিনে স্তরে স্তরে সাজানো আছে মা–সহ আমাদের ছোট ছোট ভাইবোনের সেই দুঃসময়ের দুর্গম অভিযান। যার প্রতিটি পরতে উঁকি দেয় অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থানের এক সীমাহীন দুর্ভাবনা। জীবন বাজি রেখে উত্তাল ঢেউয়ের প্রতিকূলে ভাসমান খড়কুটো অবলম্বন করে শরীরের সব মনোবল নিয়ে এগিয়ে ছিলাম আমরা ভাইবোন। ব্রত ছিল একটাই—বাঁচতে আমাদের হবেই।