লাল-সবুজের পতাকাবাহী বিমানে পর্তুগালে ফিরলেন ২৩০ বাংলাদেশি

প্রবাসীরা বাংলাদেশ বিমানের বিশেষ বিমানে লিসবন পৌঁছেছেন। ছবি: সংগৃহীত
প্রবাসীরা বাংলাদেশ বিমানের বিশেষ বিমানে লিসবন পৌঁছেছেন। ছবি: সংগৃহীত

সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশি প্রবাসীরা পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে বাংলাদেশ বিমানের (বিজি-৪১২৯ নম্বর) বিশেষ বিমানে পৌঁছেছেন। পর্তুগালে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে এবং আটকে পড়া প্রবাসীদের সহযোগিতায় আজ বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকাল নয়টায় লিসবনের হামবের্তো ডেলগাডা বিমানবন্দরে পৌঁছে বিশেষ বিমানটি।

মহামারির করালগ্রাসে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বিমান যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। তাই প্রবাস থেকে পরিবার, তথা আত্মীয়স্বজনের মায়ায় ছুটে গিয়ে বাংলাদেশে আটকে পড়েন অনেকে। অনেক সময় অতিবাহিত হলেও বিমান যোগাযোগ স্বাভাবিক না হওয়ায় তাঁরা ফিরতে পারছিলেন না।

রেসিডেন্ট কার্ডের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হওয়া, ভিসার মেয়াদ শেষপর্যায়ে, আবার অনেকে স্ত্রী-সন্তান পর্তুগালে রেখে পারিবারিক কাজে দেশে গিয়ে পরিবার থেকে দূরে থেকে আতঙ্কের মধ্যে দিন পার করছিলেন। এসব প্রবাসীকে ফেরাতে উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও ২৪ জুন বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বেলা ১১টায় ফ্লাইট ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও সঠিক সময় তা ছেড়ে যেতে পারেনি। কেননা লিসবন বিমানবন্দরে ফ্লাইট নামার অনুমোদন না পাওয়ায় বারবার সময় পরিবর্তন করে অবশেষে ২৪ জুন দিবাগত রাত ২টা ২০ মিনিটে বাংলাদেশের হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে লিসবনের উদ্দেশে বিমানের বিশেষ ফ্লাইটটি ছেড়ে যায়। প্রবাসীরা বর্তমান পরিস্থিতিতে সারাদিন খুব কষ্টের মধ্যে পার করলেও রাতের মধ্যেই বিমানে চড়ে ঢাকা ছাড়তে পেরে তাঁদের সব কষ্ট মুছে যায়।

লিসবন বাংলাদেশ দূতাবাসের তৃতীয় সচিব এবং দূতালয় প্রধান আবদুল্লাহ আল রাজি বলেন, ‘এই অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির জন্য আমরা দুঃখিত। তবে পুরো প্রক্রিয়ার শুরুতেই আমরা পর্তুগালের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে কূটনৈতিকভাবে আবেদন করি এবং তারা তাদের ইমিগ্রেশনের নিকট উক্ত যাত্রীদের ভিসা ও রেসিডেন্ট পারমিট যাচাই-বাছাইয়ের জন্য পাঠায়। সেখান থেকে সব যাচাই-বাছাই হওয়ার পর এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যবিধি–সম্পর্কিত সতর্কতা নিশ্চিত হওয়ার পর ফ্লাইট–সংশ্লিষ্ট সব বিষয় অনুমোদন করে। তা ছাড়া বর্তমান পরিস্থিতিতে সব দেশেই সাধারণ অফিস কার্যক্রম সীমিত আকারে পরিচালিত হচ্ছে, এসব প্রতিবন্ধকতার প্রেক্ষাপটে উক্ত অনুমোদন আসতে দেরি হয়।’

তবে ২৩৫ জন প্রবাসী ফেরার কথা থাকলেও ৫ জন যাত্রী টিকিট ক্রয় করার পরও উক্ত বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকা ছাড়তে পারেননি। তাঁদের মধ্য কয়েকজনের ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার কারণে এবং অপর এক যাত্রী ভিন্ন কারণে বিমানে উঠতে পারেননি।

প্রবাসী বাংলাদেশি যাত্রীদের স্বাগত জানানোর জন্য পর্তুগালে বাংলাদেশের নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত রুহুল আলম সিদ্দিকী ও তাঁর সহধর্মিণী, তৃতীয় সচিব ও দূতালয় প্রধান আবদুল্লাহ আল রাজি, দূতাবাসের অন্যান্য কর্মকর্তা–কর্মচারী, স্থানীয় নেরা এবং প্রবাসের বিভিন্ন সাংবাদিক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব লিসবন বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন।

সব প্রতিকূলতার অবসান ঘটিয়ে পর্তুগালে ফিরতে পেরে বাংলাদেশের প্রবাসীরা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন। প্রবাসীরা ঢাকা-লিসবন রুটে বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট চালু করার বিষয়ে বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইনস, তথা বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।