সাইপ্রাসের সঙ্গে প্রীতি ফুটবলে জয়ী প্রবাসী বাংলাদেশিরা

১৯৬০ সালের নভেম্বরে সাইপ্রাস ব্রিটিশ উপনিবেশ থেকে মুক্তি পায়। ফিফার অধীনে ওই বছরে ১৩ নভেম্বর ১৯৬২ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ইসরায়েলের সঙ্গে প্রথম অফিশিয়াল ম্যাচ খেলে সাইপ্রাস। সেই ম্যাচ ১-১ গোলে ইসরায়েলের সঙ্গে ড্র করে সাইপ্রাস। তবে এর আগে ১৯৪৯ সালের ৩০ জুলাই ইসরায়েলের সঙ্গে প্রথম ফুটবল ম্যাচ খেলেছিল সাইপ্রাস। সে ম্যাচে সাইপ্রাস ৩-১ গোলে হারলেও ম্যাচটি ছিল আন অফিশিয়াল একটি ম্যাচ।

সাইপ্রাস প্রথম আন্তর্জাতিকভাবে ম্যাচে জয়ের স্বাদ পায় গ্রিসের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে। ১৯৬৩ সালের ২৭ নভেম্বরের ওই ম্যাচে ৩-১ গোলে জয় পায় সাইপ্রাস। বর্তমানে ফিফা র‍্যাঙ্কিংয়ে ৯৫তম অবস্থানে আছে সাইপ্রাস। এর আগে ২০১০ সালে ৪৩তম অবস্থানে ছিল তারা। এটাই সাইপ্রাসের সর্বোচ্চ র‍্যাঙ্কিং রেকর্ড। সাইপ্রাস সর্বনিম্ন র‍্যাঙ্কিং রেকর্ডটি করেছিল ২০১৪ সালে। সে বছর ফিফা র‍্যাঙ্কিংয়ে ১৪২তম অবস্থানে চলে যায়।

এর পর থেকে সাইপ্রাসের ফুটবলকে আর পিছে ফিরে তাকাতে হয়নি। আন্তর্জাতিক কোনো ম্যাচে সর্বোচ্চ জয়ের রেকর্ড আছে সাইপ্রাসের এন্ডোরার সঙ্গে। ২০০০ সালের ১৫ নভেম্বর এন্ডোরার সঙ্গে বড় জয় পায় সাইপ্রাস। সে ম্যাচে ৫-০ গোলে জেতে তারা। এরপর ২০১৪ সালেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটায় সাইপ্রাস।

অন্যদিকে বড় ব্যবধানে হারের রেকর্ডও আছে সাইপ্রাসের। ১৯৬৯ সালে একটি প্রীতি ম্যাচে পশ্চিম জার্মানির কাছে ১২-০ গোলে হেরেছিল সাইপ্রাস। তবুও বাংলাদেশের সঙ্গে সাইপ্রাসের সমীকরণ মেলালে এ যেন মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠই থেকে যাবে। সারা রাত সমীকরণ মিলিয়েও হিসাবের মিল খুঁজে পাওয়া যাবে না। আর সেই চ্যালেঞ্জের জায়গা থেকে এখানকার প্রবাসী বাংলাদেশিরা সাইপ্রাসের সঙ্গে ফুটবল ম্যাচ খেলার যে দুঃসাহস দেখিয়েছেন, তা স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

গত শনিবার নিকোশিয়ার একটি স্কুলের ফুটবল স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ বনাম সাইপ্রাসের লিগ খেলা দলের একটি প্রীতি ম্যাচের আয়োজন করে প্রবাসী বাংলাদেশি রাসেল রহমান ও প্রবাসী সাংবাদিক মাহাফুজুল হক চৌধুরী। এটা ছিল সাইপ্রাসের সঙ্গে প্রবাসী বাংলাদেশিদের দ্বিতীয় প্রীতি ম্যাচ। করোনাভাইরাসের কারণে ম্যাচে প্রতি দলে ৭ জন করে খেলোয়াড় নির্ধারণ করা হয়। বাংলাদেশি খেলোয়াড়দের মধ্যে অতিরিক্ত খেলোয়াড়সহ সাহিব, আবু রাহাত, সাইফুল ইসলাম, তুহিন, রাজিব, শামিম আহমদ, সোহেল, শুভন, সোহরাব খেলায় অংশগ্রহণ করেন।

এর আগের ম্যাচে বাংলাদেশ ৬-১ গোলের ব্যবধানে হারলেও এবার তার উল্টোটা ঘটেছে। খেলার শুরুতেই সাইপ্রাসের খেলোয়াড়েরা বাংলাদেশের জালে ২ গোল দিয়ে বসেন। এতে বাংলাদেশি খেলোয়াড়েরা কিছুটা মানসিকভাবে ভেঙে পড়লেও তাঁরা হাল ছাড়েননি। বিরতির আগে বাংলাদেশ কোনো গোলের দেখা না পেলেও বিরতির পর আবু রাহাতের জোড়া গোলে একে একে বাংলাদেশ সাইপ্রাসের জালে ৩ গোল দিয়ে দেয়। বাকি ১ গোল করেন সোহেল। বাংলাদেশ ৩ সাইপ্রাস ২ গোলে খেলা শেষ হয়।


ইউরোপের মাটিতে ইউরোপের কোনো দেশের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের একটি জয় অনেক বড় একটি গৌরব বয়ে এনেছে বাংলাদেশের জন্য।