করোনা ডে-২

গত রাতে ঘুম হয়নি! চিলস ছিল! তার মাঝে বেনজি মাঝরাতে তার বন্ধু খুঁজতে এসে ঘুম ভাঙিয়ে গেছে। বন্ধুকে পায়নি বলে চলেও গেছে। আমি আধো ঘুম আধো জাগরণে রাত পার করলাম। মাথাব্যথা, সঙ্গে শরীরব্যথা! কেমন চিনচিনে গরম ভাব চামড়ায়! ঘুম আর হবে না বলে উঠে পড়লাম! ভাবলাম গোসল করলে ভালো লাগবে। পা ফেলা যায় না ফ্লোরে, ব্যথায়! গোসল করে নিচে নামছি, সিঁড়িতে এক পা এক পা দিয়ে। বাচ্চারা ঘুমে। বাচ্চার বাবা বাইরে। ওষুধ খেয়ে বললাম খিচুড়ি বানাতে। বানায় ভালো, ঝামেলা কম। খেয়ে মেয়েকে এক কাপ লেমন টি দিতে বললাম। মাস্ক পরে আছি ঘরে, সবাইকে পরতে বলছি। চেষ্টা করছি কিছু না ধরতে, কন্টামিনেশন কমাতে।

সবাই জিজ্ঞেস করছে, স্মেল ঠিক আছে? খাবারের স্বাদ পাচ্ছ? সেগুলো আপাতত ঠিক আছে।

শুনছি, জামাই বলছে, যদি তিন বেলা এভাবে রাঁধতে হয়, সে পাগল হয়ে যাবে। দুনিয়ার আইলসা মানুষ। রান্নায় তার কোনো ইন্টারেস্ট নাই। ঝাড়ু, মোছা, ধোয়াধুয়ি ছাড়া কোনো কিছু করতে রাজি না। অনেকটা ছুটা বুয়ার মতো! কিন্তু আমার একটা পার্মান্যান্ট বুয়া লাগবে। তার ৯০ শতাংশ সিঙ্গল লাইফে আমার ভীষণ হিংসা হয়। ১০ শতাংশ মানে নামেই শুধু সে ম্যারিড! ছয়–মাস তো এমনিতে বাইরে বাইরে কাটায়, করোনায় আটকে আছে আমার সঙ্গে! বলেছি ব্যাগ গুছায়ে চলে যেতে, দেখি কী করে!

বলে আমার নাকি যাবার জায়গা নেই! ভালোবাসার মানুষ নেই সে ছাড়া! ভাবছি এই করোনায় এক্সট্রা ম্যারিটালের চান্সটা নিয়েই নিব! (জাস্ট এ জোক! ডু নট টেক ইট সিরিয়াসলি!)

বললাম কাছে আস, ছুঁয়ে দিই, তোমার জীবনের কষ্ট শেষ হোক! না সেটা সে চায় না! পানিটা দিচ্ছে তিন ফুট দূর থেকে!

লেখক
লেখক

বললাম টেনশন না করতে, জীবনে প্রথম কয়েক দিন বউয়ের সেবা করার চান্স পেয়েছে, এনজয় করতে! বাচ্চা হওয়ার আগে রান্নাবান্না করে ইনডাকসনে গিয়েছি, এসে রেঁধেছি; তার সবকিছুতেই কমপ্লেন! তবু সবাই অসুস্থ না হলেই আমি খুশি। আমার শুয়েবসে থাকতে ভালো লাগে না। সারা দিন তো পড়েই আছে!

আই থিংক এই সময়ে সবচেয়ে বেশি মিস করব টোটো কোম্পানি না চালাতে পারা।

ওটা আমার জেনেটিক সমস্যা। আমার মায়ের নানা ঘরে থাকতে পারত না। আমার দাদি ও মন চাইলে ট্রাংক নিয়ে বাপের বাড়ি চলে যেত একা একাই!

মেয়ে গেল জিঞ্জার টি আনতে, ঘরে শুধু লেমন টি আছে। ফিরলে ভাত চড়িয়ে দিতে বললাম। খাবার আছে ঘরে। কখন ঘুমিয়ে গেছি, বুঝিনি। ঘুম থেকে উঠে বাপকে মাংস চড়িয়ে দিতে বললাম। সঙ্গে ইনস্ট্রাকশন। আধা ঘণ্নটার ব্যাপার। ঘণ্টাখানেক পর নেমে দেখি, ধোয়াধুয়ি চলছে। সবার ডিনার টাইম পাস হয়ে গেছে! যেহেতু তার ক্ষুধা নেই, তাই কারও খাবার নিয়ে তার মাথাব্যথা নেই!

এবার আধা ঘণ্টায় সব রেডি! মেয়েকে টেবিল সেট করতে বললাম।

মায়ের বাসায় রান্না হয়েছে। সারা দিন গ্রোসারিতে ছিল বলে এখন আর যাবে না অবশ্য আপাতত প্রয়োজন নেই। কাল গেলেও হবে। গরমের মাঝেও কাপড় পরেছি, কাঁপুনি হলে। আপাতত ঠান্ডার ওষুধ চলছে সঙ্গে পিআরএন ইনহেলার। চলবে...

আরও পড়ুন
করোনা ডে-১