করোনাজীবন ডে-৩

>করোনাভাইরাসে পাল্টে গেছে জীবনের বাস্তবতা। আক্রান্ত হয়েছেন অনেকেই। করোনায় জীবন নিয়ে লিখছেন অনেকেই। এই চিকিৎসকও করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর সিরিজ লিখছেন। আজ পড়ুন তৃতীয় পর্ব।

আজ ঘুমটা মোটামুটি হয়েছে। Thanks goodness for nighttime medicine। বেনজি এসেছিল, তবে আজ আর দরজা খুলি নাই। সকাল থেকে আবার চিলস আর শরীরব্যথা। সকালে আবার দেখি দরজায় টোকা। বেনজিকে বিছানা থেকেই চলে যেতে বলছি, দেখি সে মানুষের গলায় জিজ্ঞেস করে কেমন লাগছে। জানালার শেড খুলবে কি না। না করে দিলাম। একটু পর মেসেজ, বাইরে যাচ্ছি, একটু পানি গরম করে দিতে বললাম ওষুধের জন্য। ব্যথা বেড়ে গেলে মেজাজ খারাপ হয়ে যাবে। কষ্ট করে মাটিতে পা ছুঁইয়ে রেলিং ধরে নিচে নামলাম। বাইরের কুয়াশা পড়া ঘাস দেখে মন ভালো হয়ে গেছে।

বাইরে বসতেই বেনজি সঙ্গ দিতে হাজির।

ছেলেমেয়ে স্কুল বন্ধ হওয়ার পর থেকে সকালে ওঠে না, যদি না মেয়ের কাজ থাকে। মেয়েকে টেক্সট পাঠালাম নাশতা বানানোর জন্য। দেখি কখন ওঠে। এরা কোনো রকম দুধ সিরিয়াল খেয়ে নেয়। বাপ বলবে এরা কোনো কাজ করে না আবার সে তার আশপাশে কেউ ঘুরঘুর করে কাজ করবে, সেটাও পছন্দ করে না।

সারা দিন ঘুমিয়েছি, রাতে ঘুম ভাঙতে দেখি ব্যথা শুরু হয়েছে। এক কাপে ওষুধ দিতে বললাম সঙ্গে কিছু স্ন্যাক্স। তিনি এসে বলেন, তারও জ্বর জ্বর ভাব দুপুর থেকে! আমার আসলে রাগ চলে আসছে। এ ইচ্ছা করে অসুস্থ হচ্ছে—দৌড়াতে যাচ্ছে, খাবার ঠিকমতো খাচ্ছে না। আর আমি ভালোই জানি সে ননির পুতুল। সকালে দুই ঘণ্টা দৌড়ে এসেছে, দুপুরে দেখি পানিতে পা চুবিয়ে পেডিকিওর করছে, স্ট্রেসের ফল। বললাম কাল গিয়ে টেস্ট করাতে, যাবে না হয়তো। আমার নাশতা দিতেই রুম থেকে বের করে দিয়েছি, নো হেল্প, মাঝখানে অসুস্থ হয়ে সবার কাজ বাড়াবে।

ছেলেকে সারা দিন দেখিনি। মেয়ে কতক্ষণ পরপর জানতে এসেছে কিছু লাগবে কি না। সবাইকে মাস্ক পরে থাকতে বলছি ঘরে। নিজেও মাস্ক পরে থাকছি। আজ কাশিটা বেশি, ইনহেলার চলছে দরকারমতো। ওষুধ খেয়ে তাকেও ঘুমাতে বললাম।

ঘুম থেকে উঠে আমিও খেয়েদেয়ে আবার ঘুমাতে গেলাম। এর মাঝে আরও যে দুজন পজিটিভ তাদের খোঁজ নিলাম। একজন ভালো আরেকজনের সিম্পটম একটু খারাপ। তবে বেশি খারাপ না। পরামর্শ দিলাম কী করবেন তাঁরা।

*চিকিৎসক

আরও পড়ুন:
করোনা ডে-২