ইতিহাস বিকৃতির ষড়যন্ত্র সফল হবে না

ভিএজিবি আয়োজিত অনুষ্ঠানে অতিথিরা
ভিএজিবি আয়োজিত অনুষ্ঠানে অতিথিরা

কানাডার মন্ট্রিয়েলে মাতৃভূমির ৪৩ম বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে ভিএজিবি আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা বলেছেন, বাংলাদেশে নতুন প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করার হীন উদ্দেশ্যে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির নতুন ষড়যন্ত্র চলছে। তবে এই ষড়যন্ত্র কখনোই সফল হবে না। যারা এই নোংরা কাজে লিপ্ত, জাতি তাদের কখনোই ক্ষমা করবে না।
২১ ডিসেম্বর রোববার মন্ট্রিয়েলের ৬৭৬৭ কোট দ্য নেইজ মিলনায়তনে আয়োজিত এই আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের আহ্বায়ক শাহ মোস্তাইন বিল্লাহ। অনুষ্ঠানের শুরুতে মুক্তিযুদ্ধের ওপর ব্যাপক গবেষণা চালানো ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক অর্ধশত গ্রন্থ রচনার জন্য তাজুল মোহাম্মদকে বিশেষভাবে সম্মানিত করা হয়। তাঁকে ফুলের তোড়া ও একটি ক্রেস্ট উপহার দেওয়া হয়। এ ছাড়াও উপস্থিত প্রবাসী মুক্তিযোদ্ধাদের ফুল দিয়ে অভিনন্দিত করা হয়।
আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন তাজুল মোহাম্মদ, আবদুল মুত্তালিব, শওকত আলী, জিয়াউল হক জিয়া, শহীদুল ইসলাম খান, আবদুর রাজ্জাক হাওলাদার, অ্যাডওয়ার্ড কর্নেলিয়াস গোমেজ, জয়নুল আবেদীন খান, সাইফুদ্দিন আহমেদ খান, আলী আহমেদ, শামশাদ রানা ও মাহমুদা বেগম। ভিএজিবির পক্ষ থেকে আলোচনা করেন এহসানুল হক, অধ্যাপক বিদ্যুৎ ভৌমিক, শোয়েব সাঈদ ও নুরুল আমীন খান। সভায় উপস্থিত ছিলেন শামীম ওয়াহিদ, মহিউদ্দিন তালুকদার, সাঈদ, মমিনুল ইসলাম ভুইয়া, খান মাশরেকুল আলম, মো. শাফিউর রহমান, হামোম প্রমোদ সিনহা, জিয়াউর রেহমান, আরিয়ান হক, অধ্যাপক মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, আকলিমা বেগম, পুষ্পিতা দেব, আনোয়ার হোসেন চৌধুরী, সফেনা করিম সেফু, সানজিদা বানু লাবণী, নাহিদা আকতার, বিদ্যুৎপর্ণা সিং, তিথি পাল, প্রমথন ঘোষ ও অনিরুদ্ধ ঘোষ।
আলোচনাকালে বক্তারা আরও বলেন, মাতৃভূমির প্রতি যাদের প্রেমবোধ, মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি যাদের সম্মানবোধ এবং দেশবাসীর প্রতি যাদের কোনো দায়িত্ববোধ নেই, তারাই কেবল জাতীয় ইতিহাস বিকৃতির মতো ঘৃণ্য কাজে লিপ্ত হতে পারে। তবে প্রকৃত ইতিহাস হলো, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বেই জাতি স্বাধীনতার জন্য প্রস্তুত হয়েছিল৷ মুক্তিকামী জনতা ‘জয় বাংলা’ ও ‘জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দিয়েই মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। একাত্তরের ২৬ মার্চ রাত আটটায় রেডিও পাকিস্তানের করাচি থেকে দে​ওয়া ভাষণে জেনারেল ইয়াহিয়া খান বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানের শত্রু হিসেবে আখ্যায়িত করে তাঁর দল আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করেন। তিনি তাঁর ভাষণে বলেছিলেন, ‘শেখ মুজিবুর রহমান একটি সমান্তরাল সরকার গঠনের প্রয়াস চালিয়েছেন এবং তিনি পূর্ব পাকিস্তানকে একেবারেই বিচ্ছিন্ন করে ফেলতে চান। শেখ মুজিব রাষ্ট্রদ্রোহিতার কাজ করেছেন।’ বক্তারা বলেন, ‘অথচ এই ইতিহাসকে বিকৃত করে আজ কেউ কেউ বলছেন, শেখ মুজিব ছিলেন রাজাকার ও পাকবন্ধু। ধৃষ্টতারও একটা সীমা থাকা দরকার! যাঁরা এই নোংরা কাজে লিপ্ত হয়েছেন, তাঁরা বর্জ্য পদাথের্র মতো শুধু দুর্গন্ধই ছড়াতে পারবেন। জাতি তাঁদের কাছ থেকে কিছুই প্রত্যাশা করে না।’
আলোচনা শেষে ভিএজিবি কালচারাল ফ্রন্টের সদস্যরা সংগীত পরিবেশন ও কবিতা আবৃত্তি করেন। এই পর্বে অংশ নেন পুষ্পিতা দেব, আরিয়ান হক, সফেনা করিম, সানজিদা বানু লাবণী, পপি সাহা,
মাসুম আনাম, আবুল আলম ও শাহ মোস্তাইন বিল্লাহ।
আরিয়ান হক
মন্ট্রিয়েল, কানাডা