ব্লক মার্কেটের প্রভাব লেনদেনে

আগের দিনের মতো ব্লক মার্কেটে শত কোটি টাকার লেনদেন ছিল না। ফলে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল মঙ্গলবার লেনদেনও কমে গেছে। কমে গিয়েও তা ৬০০ কোটির ওপরেই ছিল।
গত সোমবার ডিএসইর ব্লক মার্কেটে বহুজাতিক কোম্পানি ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর (বিএটি) এককভাবে ৯৯ কোটি টাকার লেনদেন হয়। সেখানে গতকাল ব্লক মার্কেটে তিন কোম্পানির লেনদেনের পরিমাণ ছিল প্রায় সোয়া এক কোটি টাকা।
ডিএসইতে গতকাল দিন শেষে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৬০৯ কোটি টাকা, যা আগের দিনের চেয়ে ৩৬ কোটি টাকা কম। লেনদেন কমার পাশাপাশি সূচকও কমেছে। ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১২ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৬৮২ পয়েন্টে।

>তিন দিনে ডরিন পাওয়ারের প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়েছে প্রায় ৩০ টাকা

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) লেনদেনও আগের দিনের চেয়ে ৩ কোটি টাকা কমে নেমে এসেছে ৩৪ কোটিতে। সেখানকার সার্বিক সূচকটি প্রায় ২৫ পয়েন্ট কমে গতকাল দিন শেষে দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৩৯৪ পয়েন্টে।
এদিকে ঢাকার বাজারে আবার লেনদেনের শীর্ষে ফিরে এসেছে বিদ্যুৎ খাতের কোম্পানি ডরিন পাওয়ার। মঙ্গলবারও দিন শেষে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ১০ শতাংশ বা ১০ টাকা ১০ পয়সা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১১ টাকা ২০ পয়সা। তিন দিন ধরে কোম্পানিটির শেয়ারের দামে উল্লম্ফন চলছে। গত তিন দিনে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম প্রায় ৩০ টাকা বেড়েছে। শুধু যে দাম বেড়েছে তা নয়, গত এপ্রিলে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার পর এখন সর্বোচ্চ দামে উঠেছে এটির শেয়ার।
বিদ্যুৎ খাতের অন্য কোম্পানিগুলোর চেয়েও বাজারমূল্যের দিক থেকে কয়েক গুণ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে অপেক্ষাকৃত নতুন কোম্পানি ডরিন পাওয়ারের শেয়ার। তালিকাভুক্ত এ খাতের সামিট পাওয়ার, খুলনা পাওয়ার, বারাকা পাওয়ার, জিবিবি পাওয়ারের শেয়ার সর্বনিম্ন ১৫ থেকে সর্বোচ্চ প্রায় ৬৩ টাকায় লেনদেন হচ্ছে। এ ছাড়া শাহজিবাজার ও ইউনাইটেড পাওয়ার কোম্পানির শেয়ারের দাম ডরিনের দামের চেয়ে বেশি রয়েছে।
গত রোববার ডরিনের লভ্যাংশ ঘোষণা ও শেয়ারপ্রতি আয়ের (ইপিএস) খবর প্রকাশ হওয়ার পর থেকে এটির শেয়ারের দামের বড় ধরনের উল্লম্ফন শুরু হয়। তাতে এটি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের কেন্দ্রে চলে আসে। যদিও বাজার-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা কোম্পানিটির এভাবে লাফিয়ে লাফিয়ে দাম বাড়াকে অস্বাভাবিক বলেই মনে করছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্রোকার হাউসের শীর্ষ ব্যক্তি জানান, এভাবে এক নাগাড়ে লাফিয়ে লাফিয়ে দাম বাড়ার লক্ষণ মোটেই স্বাভাবিক নয়। হঠাৎ করে এটির শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীর আগ্রহ তৈরি হওয়ায় দামের এমন উল্লম্ফনের সুযোগ তৈরি হয়েছে।
গতকাল ডিএসইতে ডরিন পাওয়ারের ৪১ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। তাতে এটি লেনদেনের শীর্ষে ফিরে আসে। রোববারেও এটি শীর্ষস্থানে ছিল। মাঝে সোমবার ডরিনকে সরিয়ে শীর্ষ স্থানটি দখলে নেয় নতুন তালিকাভুক্ত অপর কোম্পানি ফরসুন শুজ। যদিও গতকাল কোম্পানিটি লেনদেনের দিক থেকে পঞ্চম স্থানে নেমে আসে।
সার্বিক বাজার পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে বেসরকারি ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য অনুষদের ডিন মোহাম্মদ মুসা বলেন, বাজারে লেনদেনের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে নিষ্ক্রিয় বিনিয়োগকারীদের অনেকে এখন নতুন করে বাজারে সক্রিয় হয়েছেন। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর অংশগ্রহণও বেড়েছে। তবে একটি-দুটি কোম্পানির মূল্যবৃদ্ধির প্রবণতাকে অস্বাভাবিক বলেও মনে করছেন এই বাজার বিশ্লেষক।