দেড় লাখ কোটি টাকার নতুন এডিপি হচ্ছে

আবার বড় উন্নয়ন কর্মসূচি নিতে যাচ্ছে সরকার। আগামী অর্থবছরে (২০১৭-১৮) উন্নয়ন প্রকল্পের খরচ দেড় লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।

আগামী অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার ১ লাখ ৫৩ হাজার ৩৩১ কোটি টাকার মধ্যে রাখতে চায় সরকার।

এর মধ্যে স্থানীয় উৎস থেকে জোগান দেওয়া হবে ৯৬ হাজার ৩৩১ কোটি টাকা। আর উন্নয়ন-সহযোগীদের কাছ থেকে পাওয়া যাবে ৫৭ হাজার কোটি টাকা। এটি মূল এডিপি হিসেবে পরিচিত। এর বাইরে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ থাকবে বলে জানা গেছে। সব মিলিয়ে এডিপির আকার ১ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা হবে।

আগামী অর্থবছরের মূল এডিপির বরাদ্দ চলতি এডিপির চেয়ে সাড়ে ৪২ হাজার কোটি টাকা বেশি হচ্ছে। আর সার্বিক এডিপির আকার বাড়বে ৪৫ হাজার কোটি টাকা।

সম্প্রতি আর্থিক, মুদ্রা ও মুদ্রা বিনিময়-সংক্রান্ত সমন্বয় কাউন্সিল এবং সম্পদ কমিটিতে আগামী অর্থবছরের এডিপির বরাদ্দ চূড়ান্ত করা হয়েছে। ইতিমধ্যে তা পরিকল্পনা কমিশনকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন পরিকল্পনা কমিশন বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দাবি অনুযায়ী বরাদ্দ সমন্বয় করছে।

৮ মে পরিকল্পনা কমিশনের বর্ধিত সভায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর চাহিদা অনুযায়ী বরাদ্দ চূড়ান্ত করা হবে। চলতি মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় আগামী অর্থবছরের এডিপি অনুমোদন দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী এনইসি সভায় সভাপতিত্ব করেন। গত কয়েক বছর ধরে দেখা গেছে, ওই সভায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বরাদ্দ বাড়িয়ে দেওয়ার দাবি জানান। পরে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে তাঁদের বাড়তি বরাদ্দ দিয়ে এডিপি পাস করা হয়। পরে পরিকল্পনা কমিশন ওই বাড়তি বরাদ্দ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অনুকূলে বরাদ্দ দেন।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, আগামী অর্থবছরে সড়ক ও রেল অবকাঠামো, বিদ্যুৎ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, পল্লী উন্নয়ন, স্বাস্থ্য খাতে বড় আকারের বরাদ্দ দেওয়া হবে। পদ্মা সেতু প্রকল্পে আগামী অর্থবছরে ৫ হাজার ৫২৪ কোটি টাকা এবং পদ্মা রেলসংযোগ প্রকল্পে ৭ হাজার ৬১০ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকছে। এ ছাড়া মেট্রোরেল নির্মাণে বরাদ্দ থাকতে পারে ৩ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা। রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হতে পারে।

বিশাল এডিপি নেওয়া হলেও বাস্তবায়ন সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। প্রতিবছর বিশাল এডিপি নেওয়া হয়, কিন্তু বাস্তবায়ন শতভাগ করা সম্ভব হয়। চলতি অর্থবছরে ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) এডিপির ৫২ শতাংশ বাস্তবায়িত হয়েছে। টাকার অঙ্কে এর পরিমাণ ৬২ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ে এডিপি বাস্তবায়ন হার ছিল ৫০ শতাংশ। টাকার অঙ্কে ৪৭ হাজার ১১৫ কোটি টাকা।