সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প তৈরি

চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকার বিশেষ প্রকল্প নিচ্ছে সরকার। দুর্বল পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থার কারণে অল্প বৃষ্টিতেই শহরের অধিকাংশ এলাকা হাঁটু থেকে কোমরপানিতে তলিয়ে যায়। জোয়ারের সময় শহরের নিম্নাঞ্চল নিয়মিত জলাবদ্ধ হয়ে পড়ে। চলতি বর্ষা মৌসুমে চট্টগ্রাম শহরের এই দুরবস্থা আরও প্রকট হয়েছে। এসব সমস্যার সমাধানে এই বড় প্রকল্পটি নিয়েছে সরকার।

এই ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন প্রকল্প’ অনুমোদনের জন্য আজ বুধবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় উঠছে। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক) এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে। মোট খরচ হবে ৫ হাজার ৬১৬ কোটি টাকা। ২০১৭ সালের জুলাই মাসে শুরু হয়ে ২০২০ সালের জুন মাসের মধ্যে সরকার নিজের টাকায় এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে।

এই প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রামের ৩৬টি খালের ৫ লাখ ২৮ হাজার ঘনমিটার মাটি খনন করা হবে। একই সঙ্গে সোয়া ৪ লাখ ঘনমিটার কাদা অপসারণ করা হবে। অন্যদিকে ৮৫ কিলোমিটার পাকা রাস্তা নির্মাণ করা হবে। অর্ধশতাধিক সেতু ও কালভার্ট তৈরি করা হবে। এর পাশাপাশি বন্যার পানি সংরক্ষণের জন্য তিনটি জলাধারও হবে।

এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো, শহরের জলাবদ্ধতা দূর করা, খালের পারে রাস্তা নির্মাণের পাশাপাশি খাল পরিষ্কার রাখার স্থায়ী ব্যবস্থা করা; বৃষ্টির পানি দ্রুত নিষ্কাশনের জন্য ড্রেনেজ ব্যবস্থা শক্তিশালী করা। এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে বৃষ্টি ও জোয়ারের জলাবদ্ধতা থেকে চট্টগ্রাম শহর স্থায়ীভাবে মুক্ত হবে বলে প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে।

তবে এই প্রকল্প সম্পর্কে পরিকল্পনা কমিশন কিছু মতামত দিয়েছে। চট্টগ্রাম শহরের জন্য নেওয়া অন্য প্রকল্পে একই ধরনের কাজ হলে তা এই প্রকল্প থেকে বাদ দেওয়ার সুপারিশ করেছে পরিকল্পনা কমিশন। উদাহরণ দিয়ে পরিকল্পনা কমিশন বলেছে, গত ১ জুলাই চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক এবং সেতু উন্নয়নসহ যান যন্ত্রপাতি ও সড়ক আলোকায়ন প্রকল্প নিয়ে পরিকল্পনা কমিশনে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই প্রকল্পের সঙ্গে জলাবদ্ধতা নিরসনের প্রকল্পে বেশ কয়েকটি খাতের কাজের দ্বৈততা আছে। এগুলো জলাবদ্ধতা নিরসনের প্রকল্প থেকে বাদ দিতে হবে। জানা গেছে, জলাবদ্ধতা নিরসনের প্রকল্পে ৮৮০টি সড়ক বাতি লাগানোর পাশাপাশি সড়ক উন্নয়ন করা হবে।

এ ছাড়া পরামর্শক সেবা বাবদ ওই প্রকল্পে ১০০ কোটি টাকা এবং জরিপ বাবদ ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এই দুটি খাতে বিপুল বরাদ্দ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে পরিকল্পনা কমিশন।