নতুন নীতিমালা কমবে সুদ হার

বিকাশমান ক্রেডিট কার্ডের ব্যবসায় শৃঙ্খলা ফেরাতে নীতিমালা করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক, যা ২০১৮ সালের ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে। ব্যাংকগুলো এ নীতিমালা বাস্তবায়ন করলে গ্রাহকেরা সে অনুযায়ী সুযোগ-সুবিধা পাবেন।

নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, ব্যাংকের যেকোনো ঋণের সুদ হারের চেয়ে ক্রেডিট কার্ডের সুদ হার সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ বেশি হবে। অর্থাৎ অন্য ঋণের সুদ হার ১৫ শতাংশ হলে ক্রেডিট কার্ডের সুদ হার হবে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ। এতে করে কার্ডের সুদ হার নিয়ে গ্রাহকদের মধ্যে যে অসন্তোষ রয়েছে, তা অনেকটাই কেটে যাবে বলে মনে করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বর্তমানে ব্যাংকভেদে ক্রেডিট কার্ডে সুদ হার ৩৬ শতাংশ পর্যন্ত।

নীতিমালা অনুযায়ী, ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের বৈদেশিক মুদ্রার অতিরিক্ত কার্ড দিতে পারবে। গ্রাহকের বিল পরিশোধের শেষ দিন শুক্রবার বা সরকারি ছুটির দিন হলে ব্যাংক খোলার দিন পর্যন্ত তাঁকে পরিশোধের সুযোগ দিতে হবে। এ সময়ে কোনো সুদ আরোপ করা যাবে না। কার্ড নেওয়ার সময় গ্রাহক যে সময়কে সুবিধাজনক হিসেবে উল্লেখ করবেন, শুধু ওই সময়েই বিল আদায়ে গ্রাহককে ফোন দেওয়া যাবে।

নতুন নীতিমালায় বিধান করা হয়েছে, ব্যাংক গ্রাহককে ক্রেডিট কার্ডে যে অর্থ সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে, তার ৫০ ভাগ গ্রাহককে নগদ টাকা উত্তোলনের সুবিধা দিতে হবে। সুদ হিসাবের পদ্ধতি ও বকেয়া পরিশোধের শেষ সময়সীমা গ্রাহককে সুস্পষ্টভাবে অবহিত করতে হবে।

নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, ১৮ বছরের কম বয়সী কাউকে ক্রেডিট কার্ড দেওয়া যাবে না। তবে কোনো শিক্ষার্থীর লেখাপড়া যদি কার্ডের লেনদেনের ওপর নির্ভরশীল হয়, তাহলে ১৮ বছরের কম বয়সের শিক্ষার্থীর বিপরীতে কার্ড ইস্যু করা যাবে। তা ছাড়া ক্রেডিট কার্ডে কোনো সংশোধনী আনতে হলে তা বাস্তবায়নের ৩০ দিন আগে গ্রাহককে জানাতে হবে। কার্ড গ্রহীতার সম্মতি ছাড়া কোনো ধরনের চার্জ কর্তন করা যাবে না। কোনো সংবিধিবদ্ধ সংস্থার আবগারি শুল্ক বা কর অথবা চার্জ কর্তন করতে হলেও গ্রাহকের সম্মতি গ্রহণ করতে হবে। কার্ডের নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিষয়ে নীতিমালায় বলা হয়েছে, একটি পিন কোডের মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

নীতিমালায় আরও বলা হয়, কার্ড গ্রহীতাকে প্রতি মাস শেষে (বিলিং পিরিয়ড) লিখিতভাবে অথবা ইলেকট্রনিকভাবে লেনদেনের চিত্র ও সুদ কর্তনের বিস্তারিত বিবরণী পাঠাতে হবে। স্টেটমেন্ট পাঠানোর পর বিল পরিশোধে অন্তত ১৪ দিন সময় দিতে হবে। কোনো গ্রাহক বিলিং স্টেটমেন্ট না পাওয়ার অভিযোগ করলে পাঁচ দিনের মধ্যে বিনা মূল্যে নতুন স্টেটমেন্ট দিতে হবে। ক্রেডিট কার্ডের প্রত্যেক লেনদেনের তথ্য এসএমএস বা ই-মেইলের মাধ্যমে প্রেরণের কথাও বলা হয়েছে নীতিমালায়।