আবার বাড়ল পেঁয়াজের ঝাঁজ

রাজধানীর বাজারে আবার বেড়েছে পেঁয়াজের ঝাঁজ। গত পাঁচ দিনে নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যের দাম প্রতি কেজিতে ১৫ টাকা বেড়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার এক কেজি ভারতীয় পেঁয়াজ ৫০ এবং দেশি পেঁয়াজ ৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
সবজি ও মাছের দাম বেশ কয়েক দিন ধরেই চড়া। চালের দামও তেমন কমছে না। এর ওপর পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধি সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় আরেকটু বাড়াল। এর আগে গত আগস্টে দাম বাড়তে বাড়তে দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৬৫-৭০ এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ৫৫ টাকায় উঠেছিল। পবিত্র ঈদুল আজহার কয়েক দিন পর দাম কমতে থাকে। চলতি মাসের প্রথম দিকে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৪০ এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ৩৫ টাকায় বিক্রি হয়।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, পেঁয়াজের এই মূল্যবৃদ্ধির কারণ ভারতে দাম বেড়ে যাওয়া। ভারতীয় দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়ার গত মঙ্গলবারের খবর অনুযায়ী, দেশটির মহারাষ্ট্রের নাসিকের লাসালগাঁও পাইকারি বাজারে ১০ দিনে পেঁয়াজের দাম ৮০ শতাংশ বেড়েছে। সোমবার সেখানে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে সাড়ে ২৪ রুপি দরে। সেখানকার পাইকারি ব্যবসায়ীদের দাবি, চাহিদা ও জোগানের মধ্যে সামঞ্জস্য না থাকায় দাম বাড়ছে।
পশ্চিম আগারগাঁও কাঁচাবাজারের দোকানি সিরাজ মিয়া গতকাল প্রতি কেজি ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি করেন ৫০ টাকায়। দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকায়। তিনি বলেন, পাঁচ দিন ধরে পেঁয়াজের দাম বাড়ছে।
সিরাজ মিয়ার দোকান থেকে আধা কেজি পেঁয়াজ কিনে ফিরছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা শাহাবুদ্দিন আহমেদ। জানতে চাইলে তিনি অনেকটা ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘সবকিছুর দামই বাড়ছে। পেঁয়াজ আর বাকি থাকবে কেন?’
ঢাকার কৃষিপণ্যের পাইকারি বাজার শ্যামবাজারকেন্দ্রিক আমদানিকারক মো. মাজেদ প্রথম আলোকে বলেন, পেঁয়াজ পচনশীল বলে আমদানি করে দ্রুত বিক্রি করতে হয়। দাম বাড়লেও আমদানিকারকদের এখনো লোকসান হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘৪০ টাকা দরে পেঁয়াজ আমদানি করে আমি কিছুদিন আগে কেজি ১০-১২ টাকায় বিক্রি করেছি। এতে বিপুল লোকসান হয়েছে। এখনো ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি করে কারও লাভ হচ্ছে না।’
এদিকে বাজারে সবজির দাম এখনো চড়া। বেশির ভাগ সবজির কেজিপ্রতি দাম ৬০ টাকার ওপর। ভালো মানের বেগুন, বরবটি, ঢ্যাঁড়স, ঝিঙে, চিচিঙ্গা, করলা, শসা ইত্যাদির প্রতি কেজির দাম ৭০ থেকে ৮০ টাকা। একটি লাউ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকায়। একটি জালি কুমড়া কিনতে খরচ হচ্ছে ৪০ টাকা। কম দামি সবজির মধ্যে আছে কাঁচা পেঁপে, প্রতি কেজি ২০-২৫ টাকা।
কাঁচা মরিচের দাম সামান্য কমেছে। ১০০ গ্রাম ২০ টাকা ও ২৫০ গ্রাম ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক কেজি কিনলে দাম পড়ছে মানভেদে ১৩০ থেকে ১৬০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ২৫০ টাকায় উঠেছিল। আগারগাঁও বাজারের দোকানি রাসেল শেখ বলেন, কাঁচা মরিচের দাম ওঠানামার মধ্যে আছে।
মাছের দামও কমেনি। গতকাল কারওয়ান বাজারের বিক্রেতারা বলেন, কয়েক দিন পরেই ইলিশ ধরা আবার শুরু হবে। পাশাপাশি খালবিলের পানি শুকাতে থাকায় মাছ ধরা বাড়বে। এতে দাম কমবে।
কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা যায়, আদার দাম বেড়েছে, তবে রসুনের দাম কমেছে। প্রতি কেজি চীনা ও ভারতীয় আদা ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা এবং চীনা রসুন ৯০ টাকা ও দেশি রসুন ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে, আদার দাম কেজিতে ২০ টাকা বেড়েছে। রসুনের দাম কমেছে কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা।