শিগগিরই বিশেষ ট্রাইব্যুনালের যাত্রা শুরু

পুঁজিবাজারের মামলা নিষ্পত্তিতে শিগগিরই যাত্রা শুরু করছে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল। ইতিমধ্যে এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে আইন মন্ত্রণালয়। জনবল কাঠামোও তৈরি করা হয়েছে। এখন অপেক্ষা বিচারক ও জনবল নিয়োগের। এ দুটি কাজ শেষ হলেই যাত্রা শুরু করতে পারবে বিশেষ এই ট্রাইব্যুনাল।

বিএসইসি ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৬ এবং ২০১০-১১ সালের শেয়ারবাজারে কেলেঙ্কারির মামলা এবং পুঁজিবাজার-সংশ্লিষ্ট মামলাগুলো বিশেষ এই ট্রাইব্যুনালে নিষ্পত্তি হবে।

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার আরিফ খান প্রথম আলোকে বলেন, বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিষয়ে এরই মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। জনবলের কাঠামোও প্রস্তুত করা হয়েছে। বিচারক ও জনবল নিয়োগ হওয়ার পরই ট্রাইব্যুনাল যাত্রা শুরু করতে পারবে। দু-এক মাসের মধ্যেই এর কার্যক্রম শুরু হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক প্রথম আলোকে বলেন, বর্তমানে বিচার বিভাগ স্বাধীন। তাই বিচারক নিয়োগের জন্য প্রধান বিচারপতির কাছে এ-সংক্রান্ত যাবতীয় কাগজপত্র পাঠানো হয়েছে।

অর্থ মন্ত্রণালয় ও আইন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ৭ জানুয়ারি আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় বিচার শাখা-৪ এ-সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এতে বলা হয়, ‘এসআরও নং ০১ আইন/২০১৪ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিনেন্স (নং এক্স—৭ অব ১৯৬৯)-এর সেকশন ২৫বি-এর সাব সেকশন (১)-এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সরকার ঢাকায় একটি স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল স্থাপিত করিল। সমগ্র বাংলাদেশ উহার স্থানীয় অধিভুক্ত হিসেবে গণ্য।’

সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন অধ্যাদেশ ১৯৬৯-এর ২৫ বি ধারার প্রথম উপধারা  অনুযায়ী প্রয়োজনে সরকার এক বা একাধিক ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারে।

দ্বিতীয় উপধারায় বিচারক নিয়োগের বিষয়ে বলা হয়। এতে বলা হয়, ‘সরকার বিশেষ ট্রাইব্যুনালে একজন দায়রা জজ অথবা অতিরিক্ত দায়রা জজ নিয়োগ দেবে। তিনি ১৮৯৮ সালের ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষমতা রাখবেন।’ বর্তমানে দায়রা আদালতের বিচারাধীন কমিশনের ফৌজদারি মামলাগুলো ওই ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরিত হবে বলে এতে আরও বলা হয়।

২০১২ সালের ১০ ডিসেম্বর এই ১৯৬৯ সালের অধ্যাদেশের সংশোধনী সংশ্লিষ্ট গেজেট প্রকাশ করা হয়।

এ দিকে গত বছরের ২৪ নভেম্বর সচিব কমিটির সভায় বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনের জন্য একজন বিচারকসহ ৬ সদস্যের জনবল কাঠামো অনুমোদন দেওয়া হয়।

বিএসইসির ২০১২-১৩ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী বর্তমানে বিএসইসি সংশ্লিষ্ট ৪২৯টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে ১৫টি, হাইকোর্ট বিভাগে ১৭৮টি এবং বিশেষ জজ আদালত ও পরিবেশ আপিল আদালতে একটি মামলা রয়েছে। এ ছাড়া ২০৫টি মামলা সাধারণ সার্টিফিকেট আদালতে বিচারাধীন। বাকিগুলো বিভিন্ন আদালতে বিচারাধীন বলে ওই প্রতিবেদন উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৯৯৬-এর শেয়ার কেলেঙ্কারির ১৫টি এবং ২০১০-১১ সালের শেয়ার কারসাজির ছয়টি মামলাও রয়েছে।