হিমাগারের আলু খাচ্ছে গরু

বাজারে দাম কম হওয়ায় লোকসানের ভয়ে ঠাকুরগাঁওয়ের চাষি ও ব্যবসায়ীরা আলু তুলতে হিমাগারমুখী হচ্ছেন না। এতে বিপাকে পড়েছেন হিমাগারের মালিকেরা। কৃষককে দেওয়া ঋণ, ঋণের বিপরীতে সুদ ও হিমাগারের ভাড়া আদায় করতে পারছেন না তাঁরা। লোকসান কমাতে অনেক মালিক হিমাগারে রাখা আলু নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করে দিচ্ছেন।

ঠাকুরগাঁওয়ে হিমাগার পর্যায়ে বর্তমানে প্রতি বস্তা (৮৪ কেজি ওজনের) গ্র্যানুলা আলু বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১৮০ টাকায়। এতে কেজিপ্রতি দাম পড়ছে ২ টাকার কিছু বেশি। এ সুযোগে গবাদিপশুর খামারিরা হিমাগার থেকে গরুকে খাওয়াতে আলু কিনে নিচ্ছেন।

ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর জেলায় ২৩ হাজার ৪১৫ হেক্টর জমিতে আলু আবাদ হয়েছে। এসব আলুর একটা বড় অংশ চাষি ও ব্যবসায়ীরা হিমাগারে সংরক্ষণ করেছেন। জানা গেছে, জেলার ১৩টি বেসরকারি হিমাগারে গত মৌসুমে ১৩ লাখ ৬৯ হাজার বস্তা আলু সংরক্ষণ করা হয়।

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার মধুপুর এলাকার আলু ব্যবসায়ী আবু রাইহান বলেন, দেড় হাজার বস্তা আলু একটি হিমাগারে রেখেছিলেন। প্রতি বস্তা আলু কিনেছিলেন ৭৫৬ টাকা দামে। তার সঙ্গে বস্তাপ্রতি হিমাগার ভাড়া ৩৬০ টাকা, বস্তার দাম ও পরিবহন খরচ যোগ দিলে প্রতি বস্তার আলুর পেছনে ১ হাজার ১৫০ টাকা খরচ হয়েছে। এখন বাজারে আলুর যে দাম, তাতে লোকসানের ভয়ে হিমাগার থেকে আলু তুলছেন না তিনি।

শহরের পাইকারি বাজারের আড়তদার জাহাঙ্গীর আলম জানান, বাজারে পুরোনো আলুর বিক্রি তেমন একটা নেই। হিমাগার থেকে গত শনিবার ৮৪ কেজি ওজনের প্রতি বস্তা গ্র্যানুলা আলু ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়, কার্ডিনাল ৪০০ টাকা এবং ডায়মন্ড ৫০০ টাকা দরে বিক্রি হয়।

সদর উপজেলার কাজীপাড়া গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, পুরোনো আলু এখন আর কেউ খাচ্ছেন না। মালিকেরা হিমাগারে পড়ে থাকা আলু কম দামে বিক্রি করে দিচ্ছেন। সেটা কিনে অনেকে গরুকে খাওয়াচ্ছেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ঠাকুরগাঁও কার্যালয়ের উপপরিচালক কে এম মাউদুদুল ইসলাম জানান, গত মৌসুমে সারা দেশেই আলুর বাম্পার ফলন হয়েছিল। এ কারণে বাজারে আলুর চাহিদা কম।