ন্যাশনাল ব্যাংক এমডি পাবে কবে?

বেসরকারি খাতের ন্যাশনাল ব্যাংকের উদ্যোক্তারা ব্যাংক পরিচালনার জন্য ‘যোগ্য’ ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) খুঁজে পাচ্ছেন না। ফলে এক বছর ধরে পূর্ণাঙ্গ এমডি ছাড়াই চলছে ব্যাংকটি। ব্যাংকটির উদ্যোক্তারা কয়েকজন এমডির সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তাঁদের কেউ ন্যাশনাল ব্যাংকে কাজ করতে আগ্রহী হননি। এতে প্রথম প্রজন্মের এ ব্যাংকের সার্বিক অবস্থার অবনতিই ঘটছে। খেলাপি ঋণ ছাড়িয়েছে ৩ হাজার কোটি টাকা।

এদিকে ব্যাংকটি চৌধুরী মোসতাক আহমেদকে পূর্ণাঙ্গ এমডি করার সিদ্ধান্ত নিলেও তাতে অনুমোদন দিচ্ছে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফারমার্স ব্যাংকের এমডি থাকাকালে তাঁকে ১০ হাজার টাকা আর্থিক জরিমানা করেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ জন্যই তাঁকে এমডি করতে আগ্রহী নয় নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। বর্তমানে ন্যাশনাল ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত এমডি পদে দায়িত্ব পালন করছেন চৌধুরী মোসতাক।

আবার এখন তিনি নাম পরিবর্তন করে ‘চৌধুরী রাসেল আহমেদ’ হয়েছেন। এ নামেই তাঁকে এমডি করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন চেয়েছে ব্যাংকটি। ব্যাংকটির উপব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম বুলবুল সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চিঠি দিয়ে বলেছেন, চৌধুরী মোসতাক আহমেদ নাম পরিবর্তন করে চৌধুরী রাসেল আহমেদ হয়েছেন। ব্যাংকটির সব শাখায় চিঠি দিয়েও নাম পরিবর্তনের বিষয়টি জানিয়েছে ন্যাশনাল ব্যাংক। এ নিয়ে পুরো ব্যাংক খাতে হাস্যরস তৈরি হয়েছে।

এ বিষয়ে চৌধুরী মোসতাক আহমেদ তথা রাসেল আহমেদের বক্তব্য জানতে ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়ে একাধিকবার গেলেও তিনি দেখা করেননি। যোগাযোগ করা হলে ব্যাংকটির উপব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম বুলবুল প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, ‘সব সূচকেই ব্যাংকটির উন্নতি ঘটছে। এমডি নিয়োগের বিষয়টি অনুমোদনের পর্যায়ে আছে।’

সূত্র জানায়, চৌধুরী মোসতাক আহমেদ ফারমার্স ব্যাংকের এমডি থাকাকালে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়াই ১ কোটি ৯২ লাখ টাকা অফিস ভাড়া পরিশোধ করেন। তবে তিনি বিষয়টি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নজরে আনেননি। এ কারণে তাঁকে ব্যক্তিগতভাবে ১০ হাজার টাকা আর্থিক জরিমানা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর কিছুদিন পরই এক ধাপ নিচে অতিরিক্ত এমডি হিসেবে ন্যাশনাল ব্যাংকে যোগ দেন তিনি।

ন্যাশনাল ব্যাংকের এমডি শরিফুল ইসলামের মেয়াদ ২০১৭ সালের ৩১ জানুয়ারি শেষ হয়। ১ ফেব্রুয়ারি ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত এমডি হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয় চৌধুরী মোসতাক আহমেদকে। তবে এখনো ভারমুক্ত হতে পারেননি মোসতাক, নতুন করেও কাউকে এমডি নিয়োগ দেয়নি ন্যাশনাল ব্যাংক। ফলে প্রায় এক বছর ধরে এমডি ছাড়াই চলছে ব্যাংকটি।

ব্যাংক কোম্পানি আইনের ১৫ক ধারার ২ উপধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যাংকের এমডি পদ একাধারে তিন মাসের বেশি শূন্য রাখা যাবে না। ৩ উপধারায় বলা হয়েছে, এ সময়ের মধ্যে এমডি পদ পূরণ না হলে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রশাসক নিয়োগ দিতে পারে, যিনি ব্যাংকের এমডির দায়িত্ব পালন করবেন। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ পথে এগোয়নি।

গত বছরের ৩১ জুলাই ন্যাশনাল ব্যাংকের ৪০২তম পরিচালনা পর্ষদ সভায় চৌধুরী মোসতাক আহমেদকে পূর্ণাঙ্গ এমডি হিসেবে অনুমোদন দেওয়া হয়। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়। সম্প্রতি এসে ব্যাংকটি এক চিঠির মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে জানিয়েছে, চৌধুরী মোসতাক আহমেদ নাম পাল্টে এখন চৌধুরী রাসেল আহমেদ হয়েছেন।