বাংলাদেশে যাত্রীবাহী গাড়ির কারখানা করতে চায় টাটা

>

ভারতের উত্তর প্রদেশের গ্রেটার নয়ডায় এখন চলছে ‘অটো এক্সপো: দ্য মোটর শো ২০১৮’ শীর্ষক গাড়ি প্রদর্শনী। সেখানে ভারতের শীর্ষস্থানীয় গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টাটার যাত্রীবাহী পরিবহনের আন্তর্জাতিক ব্যবসা বিভাগের প্রধান সুজন রায় প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেন। তাঁর সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন ফারুক হোসেন

সুজন রায়
সুজন রায়

বাংলাদেশে যাত্রীবাহী গাড়ির কারখানা করতে চায় টাটা

ফারুক হোসেন, গ্রেটার নয়ডা, উত্তর প্রদেশ, ভারত থেকে

পণ্যবাহী বাণিজ্যিক পরিবহনের পর এবার বাংলাদেশে যাত্রীবাহী গাড়ির বাজারেও শক্ত অবস্থান গড়ে তুলতে চাইছে ভারতের অন্যতম বৃহৎ গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান কোম্পানি টাটা মোটরস। এ জন্য ভারতীয় কোম্পানিটি বাংলাদেশে যাত্রীবাহী পরিবহন তৈরির একটা কারখানা স্থাপনের পরিকল্পনা করছে।
টাটার যাত্রীবাহী পরিবহনের আন্তর্জাতিক ব্যবসা বিভাগের প্রধান সুজন রায় প্রথম আলোর সঙ্গে আলাপকালে কোম্পানির এই পরিকল্পনার কথা জানান। বাংলাদেশে যাত্রীবাহী পরিবহন তৈরির কারখানা স্থাপনের পরিকল্পনা সম্পর্কে তিনি জানান, বিষয়টি এখন সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর্যায়ে আছে। আলোচনা এগিয়ে নিতে গত ডিসেম্বরে বাংলাদেশ সফর করে গেছেন টাটা মোটরসের চেয়ারম্যান মায়াংক পারেক।
টাটার এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘এখন আমরা বাংলাদেশে যাত্রীবাহী পরিবহন বাজারের নিয়ন্ত্রণ নিতে চাই। এ লক্ষ্যে সেখানে একটি কারখানা স্থাপনের পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছি। তবে বাংলাদেশে কারখানা হলেও যন্ত্রাংশ যাবে ভারত থেকেই। তারপরও সেখানে কারখানা করতে পারলে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় বাজারেও সেখান থেকে গাড়ি সরবরাহ করা যাবে।’
ভারতের উত্তর প্রদেশের গ্রেটার নয়ডায় ‘১৪ তম অটো এক্সপো: দ্য মোটর শো ২০১৮’ শীর্ষক প্রদর্শনীতে নিজেদের প্যাভিলিয়নে সুজন রায় কথা বলেন। টাটার এই কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশে এখন মাসে গড়ে ৫০ টির মতো যাত্রীবাহী পরিবহন বিক্রি করে টাটা। প্রতিটির দাম গড়ে ২০ লাখ টাকা। বাংলাদেশে যাত্রীবাহী পরিবহন বিক্রিতে টাটা বর্তমানে তৃতীয় স্থানে আছে। তারা এ দেশে মোট চাহিদার ২০ শতাংশ গাড়ি সরবরাহ করে। তবে এটা দ্রুত বাড়ছে, বছরে গড়ে ১৭ শতাংশের মতো।
প্রদর্শনীটি গত বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়, চলবে ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। স্থানীয় কোম্পানি এবং ভারতে কারখানা আছে এমন বহুজাতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান মিলিয়ে শতাধিক প্রতিষ্ঠান এতে অংশ নিয়েছে। দুই বছর পরপর এটির আয়োজন করে সোসাইটি অব ইন্ডিয়ান অটোমোবাইল ম্যানুফ্যাকচারার্স (সিয়াম)।
সুজন রায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাংলাদেশের বাজারে পণ্যবাহী বাণিজ্যিক পরিবহন বিক্রির ক্ষেত্রে আমরা সবার চেয়ে এগিয়ে।’ তিনি জানান, বর্তমানে বাংলাদেশের যশোরে ছোট ট্রাক সংযোজনের একটি কারখানা রয়েছে টাটার।
উত্তর-পূর্ব ভারতের সেভেন সিস্টারখ্যাত সাত রাজ্যের কোথাও এখনো পর্যন্ত কোনো কারখানা নেই টাটার। যে কারণে ভারতের অন্য রাজ্যগুলো থেকে তুলনামূলক দুর্গম ওই সাত রাজ্যে পরিবহন সরবরাহ করতে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। কাজেই বাংলাদেশে একটি কারখানা করতে পারলে একই সঙ্গে বাংলাদেশের এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের বাজার আরও বেশি নিয়ন্ত্রণে নেওয়া টাটার জন্য সহজ হবে বলে মনে করেন সুজন রায়।
বাংলাদেশের বাজার সম্পর্কে সুজন রায়ের পর্যবেক্ষণ হলো, এখানকার জনগোষ্ঠীর বড় অংশ তরুণ। তাঁদের গাড়ির প্রয়োজন। আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নতির কারণে তাঁদের সামর্থ্য বাড়ছে। কাজেই বাংলাদেশে যাত্রীবাহী গাড়ির চাহিদা দ্রুত বাড়ছে।