ভারত নয়, চীনের প্রতিষ্ঠানকেই চায় ডিএসই

কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে চীনের সেনজেন ও সাংহাইয়ের সমন্বয়ে গঠিত কনসোর্টিয়াম বা জোটকে বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালনা পর্ষদ। গতকাল সোমবার ডিএসইর মালিকানার শেয়ার কেনার আগ্রহী প্রতিষ্ঠানগুলোর দরপ্রস্তাব নিয়ে আলোচনার পর এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। তবে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চূড়ান্ত অনুমোদনের পরই কেবল এ সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে।
ডিএসইর মালিকানার অংশীদার হতে চীনের দুই প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি ভারতে ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ, যুক্তরাষ্ট্রের নাসডাক ও দেশীয় প্রতিষ্ঠান ফ্রন্টিয়ার বাংলাদেশের সমন্বয়ে গঠিত জোটও আগ্রহ দেখায়। তবে দরপ্রস্তাবে চীনের দুই প্রতিষ্ঠানের চেয়ে বেশ পিছিয়ে ছিল ভারত, যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের তিন প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে গঠিত জোটটি। দরপ্রস্তাবে পিছিয়ে থেকে এ জোটটি ডিএসইর অংশীদার হতে নানাভাবে চাপ তৈরি করে। তাতে এ নিয়ে একধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। এ অবস্থায় গতকাল পর্ষদ সভা করে চীনের সেনজেন ও সাংহাইকে বেছে নেওয়ার পক্ষে জোরালো অবস্থান গ্রহণ করে ডিএসই।
ডিএসইর একাধিক পরিচালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, নানা দিক থেকে চীনের প্রস্তাবটিই বেশ আকর্ষণীয়। প্রতিটি শেয়ারের জন্য ২২ টাকা দরপ্রস্তাবের পাশাপাশি ৩ কোটি ৭০ লাখ মার্কিন ডলার বা ৩০৮ কোটি টাকা সমমূল্যের কারিগরি সহায়তা দেওয়ারও প্রস্তাব দিয়েছে। এর বিপরীতে শুধু ১৫ টাকা দামে শেয়ার কেনার প্রস্তাব জমা দিয়েছে ভারত, যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের তিন প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে গঠিত জোট।
এর আগে গত ১০ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত সভায়ও চীনের দুই প্রতিষ্ঠানকে কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে মালিকানার অংশীদার করতে একমত হয় ডিএসই পর্ষদ। কিন্তু পরে দরপ্রস্তাবে পিছিয়ে থাকা জোটের নানামুখী চাপের কারণে পরিস্থিতি কিছুটা অস্বস্তিকর পর্যায়ে পৌঁছে যায়। এ অবস্থায় গতকাল পুনরায় বৈঠক করে দরপ্রস্তাবের নানা দিক আরও অধিকতর যাচাই-বাছাই করে চীনের দুই প্রতিষ্ঠানকে অংশীদার করার আগের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত করা হয়।
জানা গেছে, কৌশলগত বিনিয়োগকারীর জন্য সংরক্ষিত শেয়ার বিক্রির জন্য গত সেপ্টেম্বরে দরপত্র আহ্বান করে ডিএসই। আইন অনুযায়ী, আগামী ৮ মার্চের মধ্যে বেঁধে দেওয়া সময়ের ভেতরে কৌশলগত বিনিয়োগকারীদের কাছে শেয়ার বিক্রির প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। তিন দফা বাড়িয়ে এ সময়সীমা নির্ধারণ করেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বিএসইসির নির্দেশনায় এ সময়সীমা আরও বাড়ার আইনি সুযোগ রয়েছে।
ডিমিউচুয়ালাইজেশন আইন অনুযায়ী, মালিকানা থেকে ব্যবস্থাপনা আলাদা করার পর ডিএসইর মোট শেয়ার ২৫০ সদস্যের মধ্যে সমানভাবে বণ্টন করা হয়। এসব শেয়ারের মধ্যে ৪০ শতাংশ সদস্যদের নিজেদের জন্য আলাদা করা হয়। বাকি ৬০ শতাংশ শেয়ার সদস্যদের বাইরে বিক্রির জন্য আলাদা করে ব্লক হিসেবে রাখা হয়। এ ৬০ শতাংশ শেয়ারের মধ্যে ২৫ শতাংশ শেয়ার কৌশলগত বা স্ট্র্যাটেজিক বিনিয়োগকারীর কাছে বিক্রির জন্য আইনিভাবে নির্দিষ্ট করা ছিল। বাকি ৩৫ শতাংশ শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে বিক্রির জন্য আইনিভাবে নির্দিষ্ট করে রাখা হয়েছে।