ভ্যাট দিতে রবির অস্বীকৃতি

>
  • বকেয়া ভ্যাট পরিশোধে ১৮ এপ্রিল রবিকে চিঠি দেয় বিটিআরসি।
  • বকেয়া পরিশোধে রবিকে সাত দিনের সময় বেঁধে দেওয়া হয়।
  • সময়সীমা আজ বুধবার শেষ হওয়ার কথা।

দুটি সেবার বিপরীতে মোবাইল ফোন অপারেটর রবি আজিয়াটার কাছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) দাবি করা ১৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকা মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) অযৌক্তিক বলছে অপারেটরটি। তাই এই ভ্যাট দিতে অস্বীকৃতি প্রকাশ করেছে রবি।

অপারেটরটি বলছে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) যে পরিপত্রের মাধ্যমে এই ভ্যাট চাওয়া হচ্ছে, সেই পরিপত্র জারি হওয়ার আগেই সেবা দুটির মূল্য পরিশোধ করা হয়েছে। এ ছাড়া বিটিআরসির ভ্যাট নিবন্ধন না থাকায় সংস্থাটির বকেয়া দাবির যৌক্তিকতা নেই বলেও জানিয়েছে রবি।

চতুর্থ প্রজন্মের (ফোর-জি) টেলিযোগাযোগ সেবার লাইসেন্স ও তরঙ্গের প্রযুক্তি নিরপেক্ষতার মূল্যের ওপর মোট ১৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকা বকেয়া ভ্যাট পরিশোধে ১৮ এপ্রিল রবিকে চিঠি দেয় বিটিআরসি। এই বকেয়া পরিশোধে রবিকে সাত দিনের সময় বেঁধে দেওয়া হয়। এই সময়সীমা আজ বুধবার শেষ হওয়ার কথা। তার আগেই গতকাল মঙ্গলবার এ বিষয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে চিঠি দিয়ে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরে রবি।

ভ্যাট না দেওয়ার যুক্তি হিসেবে রবির চিঠিতে বলা হয়েছে, তরঙ্গ ব্যবহারে প্রযুক্তি নিরেপক্ষতা সুবিধার জন্য নির্দেশনা অনুযায়ী গত ৫ ফেব্রুয়ারি বিটিআরসিকে নির্ধারিত অর্থ পরিশোধ করা হয়েছে। আর প্রযুক্তি নিরপেক্ষতার ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট দেওয়ার বিষয়ে এনবিআরের বিশেষ পরিপত্র জারি করা হয় ১৯ ফেব্রুয়ারি। আইন অনুযায়ী ভূতাপেক্ষ সময়ে জারি করা পরিপত্রের ওপর ভ্যাট দেওয়ার সুযোগ নেই। তাই প্রযুক্তি নিরপেক্ষতার জন্য ১৮ কোটি ৪৩ লাখ টাকার ভ্যাট রবির ওপর প্রযোজ্য হতে পারে না।

বিটিআরসির ভ্যাট নিবন্ধন না থাকার বিষয়ে রবির চিঠিতে বলা হয়েছে, যেকোনো সেবামূল্যের ওপর ভ্যাট পরিশোধ করা হলে সেটির চালান পাওয়া ভ্যাট পরিশোধকারীর অধিকার। কিন্তু বিটিআরসির এ ধরনের কোনো নিবন্ধন নেই।

জানতে চাইলে রবি আজিয়াটার ভাইস প্রেসিডেন্ট ও মুখপাত্র ইকরাম কবীর প্রথম আলোকে বলেন, দেশের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল প্রতিষ্ঠান হিসেবে রবি সব সময় আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে যেকোনো সমস্যার সমাধান করতে চায়। কিন্তু নিয়ন্ত্রক সংস্থা রবির কাছে বকেয়া যে ভ্যাট দাবি করেছে, সেটির আইনগত ভিত্তি নেই। বিষয়টি চিঠি দিয়ে বিটিআরসিকে জানানো হয়েছে। এনবিআরের সঙ্গেও এ বিষয়ে আলোচনা চলছে।

ফোর-জি লাইসেন্স ও তরঙ্গের প্রযুক্তি নিরপেক্ষতার ওপর ভ্যাট দেওয়া নিয়ে দুই মাস ধরে রবির সঙ্গে এনবিআর ও বিটিআরসির জটিলতা চলছে। এ বিষয়ে বিটিআরসির সর্বশেষ চিঠিতে বলা হয়, গত ১ মার্চ এনবিআরের বৃহৎ করদাতা ইউনিট (এলটিইউ) থেকে বকেয়া ভ্যাট পরিশোধে রবিকে প্রথম চিঠি দেওয়া হয়। এরপর ২১ মার্চ বিটিআরসিকে এই বকেয়া আদায়ের উদ্যোগ নিতে আরেকটি চিঠি দেয় এলটিইউ। প্রায় দুই মাস চলে গেলেও রবি এই ভ্যাট পরিশোধে কোনো উদ্যোগ নেয়নি।