গৃহঋণের জন্য পরিপত্রের কপিতে অর্থমন্ত্রীর মন্তব্য, 'পরিপত্র শিগগিরই বাতিল করা হোক'

সরকারি ব্যাংক থেকে গৃহ নির্মাণ ঋণ নিতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের তড়িঘড়ি করে জারি করা পরিপত্রটি বাতিল হয়ে গেছে।

বিভাগটি গত সোমবার পরিপত্র জারি করলে গতকাল বুধবার এর একটি কপি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের নজরে আসে। পরিপত্রের কপির ওপরই অর্থমন্ত্রী মন্তব্য করেন, ‘এই পরিপত্র শিগগিরই বাতিল করা হোক।’

আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ পরিপত্রটি জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ সোনালী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক এবং বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশনে (বিএইচবিএফসি) পাঠায়। বাধ্যবাধকতা থাকলেও এটি জারির আগে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের মতামত নেওয়া হয়নি।

জানতে চাইলে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব ইউনুসুর রহমান আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘অর্থমন্ত্রীর নির্দেশনা হাতে পেয়েছি। এটি বাতিল।’

‘সরকারি কর্মচারীদের জন্য ব্যাংকিং-ব্যবস্থার মাধ্যমে গৃহ নির্মাণ ঋণ প্রদান-সংক্রান্ত নীতিমালা-২০১৮’-এর একটি খসড়া গত মাসে তৈরি করেছে অর্থ বিভাগ। অনুমোদনের জন্য এই খসড়া এখন মন্ত্রিসভার বৈঠকে যাওয়ার অপেক্ষায়। তার আগেই আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের এই পরিপত্র জারিকে সচিবালয়ের কর্মচারীরা ‘অতি চালাকি’ বলে গণ্য করছেন।

অর্থ বিভাগের খসড়ায় বাড়ি তৈরি বা ফ্ল্যাট কেনার জন্য ৫ম থেকে প্রথম গ্রেডের সরকারি কর্মচারীদের জন্য সর্বোচ্চ ৭৫ লাখ টাকা এবং ২০তম থেকে অষ্টাদশ গ্রেডের কর্মচারীর জন্য ৩০ লাখ টাকা ঋণসীমার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের জারি করা পরিপত্র বলছে, এ বিভাগের প্রশাসনিক কর্মকর্তা (এও) এবং ব্যক্তিগত সহকারীরাই (পিও) পাবেন ৭৫ লাখ টাকা ঋণ। আর সচিব ঋণ পাবেন ১ কোটি টাকা।

সরকারি কর্মচারীদের জন্য গৃহ নির্মাণ ঋণের খসড়ায় সুদের হার ১০ শতাংশ ধরে নিয়ে ঋণগ্রহীতাদের কাছ থেকে ৫ শতাংশ সুদ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। বাকি ৫ শতাংশ সরকার ভর্তুকি আকারে দেবে। কিন্তু আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের পরিপত্রে সুদের হার উল্লেখ না করে ব্যাংক হারে ঋণ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। ব্যাংক হারের মানে হচ্ছে সুদের হার ৫ শতাংশ। ব্যাংকগুলোর তহবিল ব্যয় (কস্ট অব ফান্ড) গড়ে ১০ শতাংশ হলে বাকি ৫ শতাংশের কী হবে, তা বলা হয়নি।

প্রথম আলোতে বৃহস্পতিবার ‘গৃহঋণের জন্য অদ্ভুত পরিপত্র জারি’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।