চাঁদপুরে ইলিশের বাজারে আগুন

চাঁদপুর শহরের বিপণিবাগ বাজারে উঠতে শুরু করেছে পদ্মা-মেঘনার তাজা তাজা ইলিশ। কিন্তু এসব ইলিশের দাম চাওয়া হচ্ছে আকাশছোঁয়া। দাম শুনেই সাধারণ ক্রেতারা ফিরে যাচ্ছেন বাড়িতে। 
সরেজমিনে দেখা গেছে, বিপণিবাগ বাজারে ইলিশসহ নানা ধরনের তাজা মাছের সমারোহ। তাজা মাছ মেলে বলে এখানে সব সময় অন্যান্য বাজারের তুলনায় একটু দাম বেশিই রাখা হয়। তবে এবার যেন অন্য সময়ের তুলনায় ইলিশের দাম অনেক বেশি চাওয়া হচ্ছে। গত মঙ্গলবার বিকেলে বাজার ঘুরে দেখা যায়, মাছ বিক্রেতারা ছোট-বড় নানা আকারের ইলিশ নিয়ে বসে আছেন। কিন্তু দাম বেশি হওয়ায় ক্রেতা খুবই কম।

মাছ বিক্রেতা নুরুল ইসলাম অন্যান্য মাছের সঙ্গে দেড় থেকে প্রায় ২ কেজি ওজনের ছয়টা ইলিশ নিয়ে বসে ছিলেন। ক্রেতাদের কাছে প্রতি কেজি মাছ ২ হাজার ৫০০ টাকা করে দাম চাচ্ছেন। 
আরেক মাছ বিক্রেতা ফারুক জানান, দু-তিন দিন ধরে ইলিশ নিয়ে এই বাজারে বসছেন তিনি। কিন্তু দাম বেশি বলে ইলিশের ক্রেতা কম পাচ্ছেন। তিনি আরও জানান, ক্রেতারা ইলিশ দামাদামি করে শেষ পর্যন্ত অন্য মাছ নিয়ে বাড়ি ফিরছেন।

বাজারে ইলিশ কিনতে আসা শেখ মহিউদ্দিন বলেন, ‘রমজানে ইলিশ খাওয়ার ইচ্ছে হলেও দামের কারণে কিনতে পারছি না।’
নাজির পাড়ার দেলোয়ার আহমেদ জানান, বাসায় মেহমান আসায় পকেটের দিকে না তাকিয়ে বেশি দাম দিয়েই একটি ইলিশ কিনেছেন।
চাঁদপুর বড়স্টেশন মাছঘাটের ইলিশ ব্যবসায়ী আবদুল মালেক খন্দকার জানান, অন্যান্য বছর এ সময় নদীতে কিছু ধরা পড়ত। কিন্তু এ বছর তাও ধরা পড়ছে না। বর্তমানে এক কেজি আকারের ইলিশ ১ হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। ৮০০ থেকে ৯০০ গ্রামের ইলিশ ১ হাজার থেকে ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

চাঁদপুর মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আনিসুর রহমান বলেন, নদীতে এখনো ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ আসার মতো পানি বাড়েনি। স্রোতও অত ধারাল হয়নি। নদীতে পানির প্রবাহ কম থাকায় ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে না। 

আনিসুর রহমান আরও বলেন, তা ছাড়া ইলিশ পড়ার এখনো মৌসুম শুরু হয়নি। আশা করা যাচ্ছে, সামনে পানির প্রবাহ ও নদীর স্রোত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ইলিশের সংখ্যা বাড়বে। ইলিশ তীব্র স্রোতে আসে। তাই জেলে, ব্যবসায়ী ও ইলিশপ্রিয়দের মনের মতো ইলিশ পেতে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।