সবচেয়ে দ্রুত গতিতে বাড়ছে ভারতের সম্পদ

  • ২০১৭ সালে সবচেয়ে বেশি সম্পদ বেড়েছে ভারতের, যার হার ২৫ শতাংশ। 
  • যদিও সে বছর পৃথিবীর সম্পদ বেড়েছে ১২ শতাংশ।

ভারত এখন বিশ্বের ষষ্ঠ সম্পদশালী দেশ। ২০১৭ সালে তার মোট সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ২৩০ বিলিয়ন ডলার। শুধু তা-ই নয়, ২০১৭ সালে সবচেয়ে বেশি সম্পদ বেড়েছে ভারতের, যার হার ২৫ শতাংশ। যদিও সে বছর পৃথিবীর সম্পদ বেড়েছে ১২ শতাংশ। সম্প্রতি আফ্রাসিয়া ব্যাংক গ্লোবাল ওয়েলথ মাইগ্রেশন রিভিউ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
এই প্রতিবেদন অনুসারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের সবচেয়ে সম্পদশালী দেশ, যার মোট সম্পদের পরিমাণ ৬২ হাজার ৫৮৪ বিলিয়ন ডলার। ২৪ হাজার ৮০৩ বিলিয়ন ডলার নিয়ে চীন দ্বিতীয় ও ১৯ হাজার ৫২২ বিলিয়ন ডলার নিয়ে জাপান এই তালিকায় তৃতীয় স্থানে আছে। দেশের নাগরিকদের ব্যক্তিগত সম্পদ, নগদ টাকা, ইকুইটি, ব্যবসায়িক স্বার্থ—এসব যোগ করে সম্পদ নির্ধারণ করা হয়। তবে দায়দেনা বাদ দিয়ে এই সম্পদ পরিমাপ করা হয়। তার সঙ্গে সরকারি তহবিলও হিসাব করা হয় না। ব্যক্তির সম্পদ পরিমাপ করে এই হিসাব করা হয় বলে বড় দেশগুলো এই তালিকায় ওপরের দিকে আছে।
সম্পদ বৃদ্ধির তালিকায় ভারতের পর দ্বিতীয় স্থানে আছে মাল্টা, গত বছর যাদের সম্পদ বেড়েছে ২২ শতাংশ। চীনের সম্পদও একই হারে বেড়েছে। এরপর ২০ শতাংশ বৃদ্ধি নিয়ে চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে আছে যথাক্রমে মরিশাস ও পোল্যান্ড।
আগামী ১০ বছরে কোন দেশের সম্পদ কত বাড়বে, সেই ভবিষ্যদ্বাণীর তালিকায়ও শীর্ষে আছে ভারত। ভবিষ্যদ্বাণী অনুসারে, এই সময়ে তাদের সম্পদ ২০০ শতাংশ বেড়ে দাঁড়াবে ২৪ হাজার ৬৯১ বিলিয়ন ডলার। ফলে তখন মূল তালিকায় সে চতুর্থ অবস্থানে থাকবে। আর চীনের সম্পদ ১৮০ শতাংশ হারে বেড়ে দাঁড়াবে ৬৯ হাজার ৪৪৯ বিলিয়ন ডলার। তবে এই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পদ বৃদ্ধির প্রাক্কলন ২০ শতাংশ করা হলেও মোট সম্পদের দিক থেকে যথারীতি তারাই শীর্ষে থাকবে। ভবিষ্যদ্বাণী অনুসারে, ১০ বছর পর তার সম্পদের পরিমাণ দাঁড়াবে ৭৫ হাজার ১০১ বিলিয়ন ডলার।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের বিপুলসংখ্যক উদ্যোক্তা, ভালো শিক্ষাব্যবস্থা, তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সম্ভাবনা, ব্যবসায়িক আউটসোর্সিং, আবাসন, স্বাস্থ্যসেবা ও গণমাধ্যম খাতের প্রবৃদ্ধির কারণে তার মোট সম্পদের পরিমাণ ২০০ শতাংশ বাড়বে।
এখন সারা পৃথিবীতে মোট ব্যক্তিসম্পদের পরিমাণ ২১৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। পৃথিবীতে বিপুল সম্পদের মালিক এমন মানুষের সংখ্যা দেড় কোটির মতো বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, যাঁদের প্রত্যেকের সম্পদের পরিমাণ ১০ লাখ মার্কিন ডলার বা তার বেশি। এ ছাড়া পৃথিবীতে কয়েক মিলিয়ন ডলার সম্পদের মালিক আছেন ৫ লাখ ৮৪ হাজার। তাঁদের প্রত্যেকের সম্পদের পরিমাণ ১০ মিলিয়ন ডলার বা তার বেশি। এ ছাড়া শতকোটি ডলারের মালিকের সংখ্যা ২ হাজার ২৫২। তাঁদের প্রত্যেকের সম্পদের পরিমাণ কমপক্ষে ১০০ কোটি বা এক বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
প্রতিবেদনের ভবিষ্যদ্বাণী অনুসারে, আগামী ১০ বছরে অস্ট্রেলিয়া কানাডাকে ছাড়িয়ে যাবে। এই সময়ে বৈশ্বিক সম্পদ বাড়বে ৫০ শতাংশ। অর্থাৎ ২০২৭ সালে বিশ্বের মোট সম্পদের পরিমাণ দাঁড়াবে ৩২১ ট্রিলিয়ন ডলার। আফ্রাসিয়া ব্যাংক বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল দেশ হিসেবে শ্রীলঙ্কা, ভারত, ভিয়েতনাম, চীন ও মরিশাসকে চিহ্নিত করেছে। অর্থাৎ এসব দেশের সম্পদ সবচেয়ে বেশি হারে বাড়বে।
সম্পদের তালিকায় যুক্তরাজ্য ও জার্মানি আছে চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে। আর ভারতের পর সপ্তম স্থানে আছে ফ্রান্স, অষ্টম স্থানে কানাডা, নবম স্থানে অস্ট্রেলিয়া ও দশম স্থানে ইতালি। এই দেশগুলোর সম্পদ বৃদ্ধির পাশাপাশি কিছু দেশের সম্পদ কমেছেও। সেই তালিকায় সবার ওপরে আছে পাকিস্তান, যার সম্পদ কমেছে ১০ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা নাইজেরিয়ার সম্পদও কমেছে ১০ শতাংশ। এ ছাড়া ভেনেজুয়েলার সম্পদ কমেছে ৮ শতাংশ, তুরস্কের ৬ শতাংশ; কাতার, রাশিয়া ও ইরানের ৫ শতাংশ ও সৌদি আরবের ২ শতাংশ।