করমুক্ত আয়সীমা ৩ লাখ টাকা করার সুপারিশ সিপিডির

সিপিডি
সিপিডি

ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের জন্য করমুক্ত আয়সীমা ৩ লাখ টাকা উন্নীত করার সুপারিশ করেছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। বর্তমান আড়াই লাখ টাকা পর্যন্ত বার্ষিক করমুক্ত থাকে।

খাদ্য মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি ও প্রকৃত আয় কমে যাওয়ায় নিম্নমধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্তকে স্বস্তি দিতে করমুক্ত আয়সীমা বৃদ্ধি করার তাগিদ দিয়েছে এই গবেষণা সংস্থাটি। এ ছাড়া সর্বনিম্ন করহার ১০ শতাংশ থেকে নামিয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

আজ রোববার অর্থনীতির সামগ্রিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে সংবাদ সম্মেলন করেছে সিপিডি। মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। সেখানে চলতি অর্থবছরের সর্বশেষ কিস্তির ‘বাংলাদেশ উন্নয়নের স্বাধীন পর্যালোচনা’ প্রকাশ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে সিপিডি বলেছে, তাড়াহুড়ো করে করপোরেট করহার কমানো ঠিক হবে না। করপোরেট কর কমালে বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়বে—এটা ঠিক নয়। সার্বিকভাবে ব্যবসার পরিবেশ উন্নত হলেই বিনিয়োগ বাড়বে।

সিপিডি আরও বলছে, সার্বিকভাবে চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি থাকবে ৫০ হাজার কোটি টাকা।

রাজস্ব খাত সম্পর্কে সিপিডির বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, নির্বাচনের বছরে রাজস্ব খাতে জোরালো সংস্কার হবে না। বিগত বছরগুলোতেও বড় ধরনের সংস্কার হয়নি। মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট, আয়কর ও শুল্ক—এই তিন নতুন আইন হওয়ার কথা। তবে এবার না হলেও প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে। অতীতে দেখা গেছে, ভ্যাট আইনটি বাস্তবায়নের শেষ সময়ে এসে বলা হয়েছিল, পর্যাপ্ত প্রস্তুতির অভাব আছে।

সামষ্টিক অর্থনীতির চারটি খাতে ঝুঁকি ও দুর্বলতা আছে বলে মনে করে সিপিডি। এগুলো হলো আর্থিক ও বাজেটীয় কাঠামো, মুদ্রানীতি ও ব্যাংক খাতের পারফরম্যান্স, শেয়ারবাজার ও বৈদেশিক লেনদেন পারফরম্যান্স।

ব্যাংক খাত নিয়ে সিপিডির বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, রোগের চিকিৎসা করার পরিবর্তে উপসর্গের পেছনে দৌড়াচ্ছি। ব্যাংক খাতে যে তারল্য-সংকটের কথা বলা হচ্ছে, সেটা তো রোগ নয়। সমস্যা এটি নয়। সমস্যা হলো সুশাসনের অভাব। তিনি বলেন, ব্যাংকব্যবস্থার দেখভাল করার কথা বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের। তারাই নষ্টভ্রষ্টদের জন্য কাজ করছে। প্রথমেই রাজনৈতিক অর্থনীতির শৃঙ্খলা আনতে হবে।

সিপিডি আরও বলছে, বাজেট বড়—এটা বলা হচ্ছে না। এবারের বাজেটে মাথাপিছু বরাদ্দ ৩০ হাজার টাকা। বাংলাদেশের মতো অর্থনীতিতে এই সংখ্যা বড় নয়। বাস্তবতার নিরিখে বাজেট প্রণয়ন করা উচিত।

সিপিডি আরও বলছে, মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হলেও কর্মসংস্থান বাড়ছে না। কর্মসংস্থানের প্রবৃদ্ধি কমছে। আঞ্চলিক বৈষম্যও বাড়ছে। খুলনা ও বরিশালের কিছু এলাকায় দারিদ্র্য বাড়ছে। রংপুর এলাকায় দারিদ্র্য পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে না।

কালোটাকা প্রসঙ্গে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘আমরা কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া সমর্থন করি না। এতে সৎ করদাতাদের ওপর অন্যায় করা হয়। সুযোগ দিলেও খুব বেশি টাকা ঘোষণায় আসে না।’