ব্যক্তিশ্রেণির করসীমা বৃদ্ধি না করায় হতাশ মেট্রো চেম্বার

আগামী ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে ব্যক্তিশ্রেণির করমুক্ত আয়সীমায় কোনো পরিবর্তন করেননি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এতে হতাশা প্রকাশ করে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) বলেছে, করমুক্ত আয়সীমা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।

ঘোষিত বাজেট নিয়ে গতকাল শুক্রবার এমন প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে এমসিসিআই। একই সঙ্গে ব্যাংক, বিমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্য খাতের প্রতিষ্ঠানের করপোরেট কর না কমানোয় হতাশা প্রকাশ করেছে তারা।

করপোরেট কর নিয়ে এমসিসিআই বলেছে, প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যাংক, বিমা এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য কর হ্রাস করা হয়েছে, যা সন্তোষজনক। তবে ব্যবসায়ীদের বারবার অনুরোধ ও পরে আশ্বাস দিয়েও অন্য খাতের করপোরেট কর না কমানোয় এমসিসিআই হতাশ। বিদ্যমান করপোরেট করহার এই অঞ্চলের মধ্যে অনেক বেশি।

প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যাংক খাতের সংস্কারে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি উল্লেখ করে এমসিসিআই বলেছে, সংস্কারের উদ্যোগ না নিয়ে উল্টো ঘাটতি পূরণের জন্য বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। এই নীতি করদাতাদের জন্য অবিবেচনাকর এবং দক্ষ পরিচালনাকে নিরুৎসাহিত করে।

আগামী অর্থবছরের বাজেটে জাতীয় রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ২ লাখ ৯৬ হাজার ২০১ কোটি টাকা। এটি চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের চেয়ে ৩১ দশমিক ৬৪ শতাংশ বেশি। এমসিসিআই বলছে, করদাতার সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও আগামী অর্থবছর করের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে থাকবে। তবে কর প্রদানে আগ্রহী উদ্যোক্তাদের ওপর অতিরিক্ত বোঝা না চাপিয়ে করের আওতা বাড়ানো প্রয়োজন।

প্রস্তাবিত বাজেটে সুপারশপে কেনাকাটায় মূল্য সংযোজন কর (মূসক) ৪ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে আগের হার বহাল রাখার সুপারিশ করে এমসিসিআই বলেছে, কর বৃদ্ধি পেলে সুপারশপের উদ্যোগ নিরুৎসাহিত হবে। একই সঙ্গে অ্যাপভিত্তিক পরিবহন সেবায় ভ্যাট আরোপের সিদ্ধান্তটি সঠিক হয়নি বলে মন্তব্য করেছে এমসিসিআই।

এমসিসিআই মনে করে, বাংলাদেশের অর্থনীতি সন্তোষজনকভাবে এগিয়ে চলেছে। অপ্রতুল যোগাযোগব্যবস্থা এবং জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের স্বল্পতা অর্থনীতির অগ্রগতির বড় বাধা। রাজস্ব সংগ্রহে ঘাটতি ও এডিপির দুর্বল বাস্তবায়নও বর্তমানে অর্থনীতির জন্য বড় দুশ্চিন্তা। বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হতে হলে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগসহ বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই।

আগামী অর্থবছরের বাজেটে মানবসম্পদ উন্নয়নের জন্য শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ খাতকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে ৪৬ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এতে মানুষের জীবনমানের গুণগত উন্নয়নে সহায়ক হবে এবং নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে বলে মনে করে এমসিসিআই।