মাংসের দাম বেড়েছে, মাছের বাজারও চড়া

ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়ে কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকায়। গতকাল বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে।  ছবি: প্রথম আলো
ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়ে কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকায়। গতকাল বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে। ছবি: প্রথম আলো
>
  • গরুর মাংস বেড়ে ৫০০-৫২০ টাকা
  • ব্রয়লার মুরগি বেড়ে ১৬০-১৭০ টাকা
  • এক কেজির ইলিশ প্রতিটি ১,৮০০ টাকা
  • চিনির দর কেজিতে ২ টাকা বেড়েছে
  • পেঁয়াজ, রসুন ও সুগন্ধি চালের দাম স্থিতিশীল

পবিত্র ঈদুল ফিতর ঘনিয়ে আসতেই লাগামছাড়া হলো গরুর মাংসের দাম। ঢাকার বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস এখন ৫০০ থেকে ৫২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রমজান মাস উপলক্ষে গরুর মাংসের দাম ৪৫০ টাকায় বেঁধে দিয়েছিল সিটি করপোরেশন।
গরুর মাংসের সঙ্গে বেড়েছে মুরগির মাংসের দামও। ব্রয়লার, লেয়ার, কক ও দেশি—সব ধরনের মুরগির দামই বাড়তি। ঈদের বাজারে মাছ কিনতেও ক্রেতাদের চড়া দাম দিতে হচ্ছে। অবশ্য পেঁয়াজ, রসুন ও সুগন্ধি চালের দাম স্থিতিশীল আছে। কিছুটা বেড়েছে আদা ও চিনির দাম। তরল দুধ আজ বৃহস্পতিবার কিনতে গেলে বাড়তি দাম দিতে হতে পারে। প্রতিবছরই ঈদের দু-এক দিন আগে তরল দুধের দাম বেড়ে যায়। শেষ দিকে মাংসের দামও বেশ চড়া দিতে হয় ক্রেতাদের।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে শনিবার অথবা রোববার দেশে ঈদুল ফিতর উদ্‌যাপিত হবে। রাজধানীর বাজারগুলোতে এখন মাংস ও মাছ বিক্রি বেশ বেড়েছে। ঈদের দিন ভালো খাবার রান্নার জন্য সব শ্রেণির মানুষই মাংস কিনে থাকেন। সঙ্গে বাড়ে ইলিশ, চিংড়ি, রুই-কাতলা, রুপচাঁদা, আইড়, পাবদা, কোরালসহ বিভিন্ন মাছের চাহিদা।
ঢাকার বিভিন্ন বাজারে ব্রয়লার মুরগির মাংস প্রতি কেজি ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা, লেয়ার মুরগি ১৯০ থেকে ২০০ টাকা এবং মাঝারি কক মুরগি প্রতিটি ২৭০ থেকে ২৮০ টাকা ও মাঝারি দেশি মুরগি প্রতিটি ৪২০ থেকে ৪৫০ টাকা দরে মিলছে। বিক্রেতাদের তথ্য অনুযায়ী, এক সপ্তাহ আগের তুলনায় প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম ১৫ থেকে ২০ টাকা বাড়তি। কক ও দেশি মুরগির দাম আগে থেকেই চড়া। এখন প্রতিটিতে আরও ২০ টাকার মতো বেড়েছে বলে জানান বিক্রেতারা।


মিরপুর ৬ নম্বর সেকশনের বাজারে দেখা যায়, বিক্রেতারা প্রতি কেজি গরুর মাংস ৫০০ টাকা দরে বিক্রি করছেন। এ ছাড়া প্রতি কেজি খাসির মাংস ৮৫০ টাকা ও বকরির মাংস ৭৫০ টাকা চাচ্ছেন তাঁরা। একই বাজারে ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১৬০ টাকা দরে বিক্রি করতে দেখা যায়। একই বাজারে একটি বড় ইলিশ কিনতে কমপক্ষে ৭টি কক মুরগির দাম দিতে হচ্ছে। এক কেজি ওজনের ইলিশের দাম ১ হাজার ৮০০ টাকা হাঁকেন বিক্রেতা।
মাছ বিক্রেতা দেলোয়ার হোসেন বলেন, গত শুক্রবারের সঙ্গে তুলনা করলে ইলিশের দাম বেড়েছে। তবে এখন মাছ ধরা পড়ছে কম। ফলে অনেক দিন ধরেই দাম চড়া।
বাজারে প্রতি কেজি নদীর চিংড়ি ৯০০-১২০০ টাকা, চাষ করা গলদা চিংড়ি ৭০০-১০০০ টাকা, নদীর মাঝারি বেলে ৮০০-১০০০ টাকা, বড় আইড় ৮০০ টাকা, মাঝারি রুপচাঁদা ১০০০ টাকা ও চাষ করা কোরাল প্রতি কেজি আকারভেদে ৬০০-৮০০ টাকা চাইছেন বিক্রেতারা। তাজা ও বড় রুই মাছ সে তুলনায় সস্তা। প্রতি কেজির দাম ৩৫০-৪০০ টাকা। যদিও আগের চেয়ে প্রতি কেজি ২০-৩০ টাকা বেড়েছে।
ঈদের বাজারে চাহিদা বেড়েছে চিনির। প্রতি কেজিতে ২ টাকা বেড়ে চিনি আবারও ৬০-৬২ টাকায় উঠেছে। রমজান মাসের শুরুতে চিনির এ দরই ছিল। মাঝামাঝিতে তা প্রতি কেজি ২ টাকা কমে। এখন বাড়তি চাহিদার কারণে আবার বেড়েছে। প্রতি কেজি ১০ টাকা বেড়েছে আদার দাম, বিক্রি হচ্ছে ১১০-১২০ টাকা দরে। বাজারে দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৪৫-৫০ টাকা, ভারতীয় বড় পেঁয়াজ ২৫-৩০ টাকা ও মাঝারি পেঁয়াজ ৪০ টাকা কেজিতে মিলছে। দেশি রসুন প্রতি কেজি ৭০-৮০ টাকা ও চীনা বড় রসুন ১১০-১২০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছেন বিক্রেতারা।
ঈদে বাড়তি চাহিদা তৈরি হয় সুগন্ধি চালের। বাজারে প্রতি কেজি খোলা সুগন্ধি চাল ৮০-৯০ টাকা এবং বিভিন্ন কোম্পানির প্যাকেটজাত সুগন্ধি চাল ১১০-১১৫ টাকা দরে বিক্রি করছেন খুচরা বিক্রেতারা।
ঈদে ভালো খাবারের সঙ্গে সালাদ ও লেবুর চাহিদা বাড়ে। বাজারে শসার দাম কিছুটা বেড়েছে। তবে লেবু ও কাঁচা মরিচের দাম স্থিতিশীল। দেশি কচি শসা ৭০-৮০ টাকা ও হাইব্রিড শসা ৪০-৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। মাঝারি লেবু প্রতি হালি ২০ টাকা ও আড়াই শ গ্রাম কাঁচা মরিচ ২০ টাকায় মিলছে।
কারওয়ান বাজারে কেনাকাটা করতে যাওয়া আশিকুর রহমান বলেন, ‘গত বছরও ঈদে গরুর মাংস প্রতি কেজি ৫০০ টাকায় কিনেছিলাম। এ বছরও একই দর। তবে এবার মুরগির দাম অনেক বেশি।’ তিনি বলেন, ‘বাসা থেকে ইলিশ মাছ নিতে বলেছিল। দাম চড়া বলে নিইনি।’