এটা মূলত মজুরি কমানোর প্রস্তাব

সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহম্মদ
সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহম্মদ

পোশাকশ্রমিকদের জন্য মালিকপক্ষ যে মজুরি প্রস্তাব করেছে, তা মূলত কমানোরই প্রস্তাব। বিগত মজুরিকাঠামোর সময় বলা হয়েছিল, প্রতিবছর মজুরি ৫ শতাংশ হারে বাড়বে। সে হিসাবে এখন শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ৬ হাজার ৪০০ টাকার মতো হয়। মালিকপক্ষের প্রস্তাবে তা ৬ হাজার ৩৬০ টাকা করার কথা বলা হয়েছে। মালিকদের প্রস্তাব মেনে নিলে অন্যান্য গ্রেডে মজুরি আরও কমবে।

মালিকপক্ষ তাদের প্রস্তাবের মাধ্যমে শ্রমিকদের সঙ্গে মূলত তামাশা করল। এর মাধ্যমে তাঁদের উসকানি দেওয়া হলো, যাতে তাঁরা ক্ষুব্ধ হয় এবং মালিকপক্ষ সরকারকে বিভ্রান্ত করতে পারে।

নিম্নতম মজুরি বোর্ড কোনো দর-কষাকষির জায়গা নয়। মালিকপক্ষ এক প্রস্তাব দেবে, শ্রমিকপক্ষ এক প্রস্তাব দেবে, তারপর দর-কষাকষির মাধ্যমে তারা একমত হয়ে ৪০ লাখ শ্রমিকের ভাগ্য নির্ধারণ করবে, বিষয়টি সে রকম নয়। নিম্নতম মজুরি বোর্ড শ্রমিকের জীবনযাত্রার ব্যয়, শিল্পের সামর্থ্য, অন্যান্য খাতের মজুরি ইত্যাদি অনেক কিছু বিবেচনা করে মজুরি নির্ধারণ করবে। এ জন্য সেখানে একজন অর্থনীতিবিদ নিরপেক্ষ সদস্য হিসেবে রয়েছেন। আমি আশা করব, এসব বিষয়ের পাশাপাশি সম্প্রতি রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পে ঘোষিত মজুরি বিবেচনায় নিয়ে পোশাক খাতের মজুরি নির্ধারণ করা হবে।

আমাদের গবেষণা অনুযায়ী, এখন একটি পরিবারের জীবন ধারণের জন্য ১৬ হাজার টাকার বেশি প্রয়োজন হয়। মজুরি বোর্ডে শ্রমিকপক্ষ কী বিবেচনায় ১২ হাজার টাকা মজুরির প্রস্তাব দিয়েছে, তা জানা নেই। বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন নিম্নতম মজুরি ১৬ হাজার টাকার বেশি দাবি করেছে। পোশাক খাতে শ্রমিকদের কাজের চাপ বেশি। এ খাতের সামর্থ্য বেশি। পাশাপাশি পোশাক খাতের মজুরি জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকে। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে পোশাক খাতের মজুরি নির্ধারণ করতে হবে।