বগুড়ায় চামড়া নিয়ে বিপাকে বিক্রেতারা

বগুড়ায় কোরবানির পশুর চামড়া বিক্রি করা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন অনেকেই। সকাল থেকেই চামড়া ক্রেতাদের (ফড়িয়ারা) জন্য অনেকেই অপেক্ষা করেন। শেষমেশ বিকেলে বগুড়ার দুপচাঁচিয়া সদরে পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে চামড়া বিক্রি করতে এসে নামমাত্র দাম নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন অনেকেই। পশ্চিম বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলা সদরের সিও অফিস বাসস্ট্যান্ড, পুরোনো বাজার তেমাথায় চামড়া বেচাকেনার মোকাম হিসেবে পরিচিত। ঈদের দিনের বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ফড়িয়ার সঙ্গে পাইকারিদের বচসা করতে দেখা গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতিবছর ঈদের দিনে কোরবানির পশু জবাই করার পর পরই ফড়িয়ারা হাজির হন চামড়া কেনার জন্য। কিন্তু এবার উল্টো চিত্র দেখা গেছে। পৌর সদরের বাসিন্দা ওষুধ ব্যবসায়ী মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমার বয়সে এই প্রথম দেখলাম চামড়া নিয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত বসে থাকতে হলো। গত দুই বছরের চেয়ে এবার চামড়ার দাম খুবই কম।’ তিনি ৬২ হাজার টাকার গরুর পশুর চামড়া বিক্রি করেছেন ৭০০ টাকায়, ১১ হাজার টাকার খাসির চামড়া ৩০টাকায় বিক্রি করেছেন। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, গরিব তাঁদের হকের টাকা থেকে এবার বঞ্চিত হবে।

উপজেলার বড় ফড়িয়া লংলান রবিদাস বলেন, ঢাকার বড় বড় চামড়া ব্যবসায়ীরা গত বছরের চামড়াই গুদাম থেকে সরাতে পারেননি। এবার কোনো মহাজনই চামড়া নেবেন না। তাই চামড়ার দাম গত দুই বছরের তুলনায় খুবই কম। তিনি বলেন, এবার বড় আকারের পশুর চামড়ার দাম ৮০০ টাকা থেকে ৯০০ টাকা, মাঝারি আকারের দাম ৪০০ টাকা থেকে ৪৫০ টাকা এবং ছোট আকারের দাম ২০০ টাকা থেকে ২৫০ টাকায় তিনি চামড়া কিনেছেন।

বিকেলে কয়েকজন ছোট ফড়িয়ারা গ্রাম থেকে চামড়া কিনে পাইকারদের কাছে বিক্রি করতে এসে বিপাকে পড়েন। এঁদের মধ্যে উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের বেলাল হোসেন জানান, ‘গ্রামে ঘুরে ৪৭টি চামড়া কিনেছেন তিনি। কম দামে চামড়া কেনার পরও পাইকারদের কাছে বিক্রি করতে এসে তাঁর কয়েক হাজার টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে।’

উপজেলার চামড়া পাইকার ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘গত বছরের চামড়াই বিক্রি করতে পারিনি। গতবার ঢাকায় কোটি টাকার চামড়া দিয়ে এখনো টাকা তুলতে পারিনি মহাজনদের কাছ থেকে। এবার ঢাকার পার্টিই চামড়া কেনার জন্য কোনো চাহিদা দেননি।’