এই ঔদ্ধত্য তারা কোথায় পেল, প্রশ্ন বিজিএমইএর

জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন নামের একটি সংগঠন পোশাকশ্রমিকদের মজুরি নিয়ে ‘আংশিক সত্য, বিকৃত ও ভুল তথ্যসংবলিত’ একটি প্রচারপত্র জনসাধারণের মাঝে বিলি করেছে বলে অভিযোগ করেছে পোশাক কারখানার মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। সংগঠনটির সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান সংবাদ সম্মেলন করে লিখিত বক্তব্যে বলেছেন, ‘একটি স্পর্শকাতর শিল্প খাত সম্পর্কে এ ধরনের ভুল ও বিকৃত তথ্য পরিবেশনের উদ্দেশ্য কী? এই ঔদ্ধত্য তারা কোথায় পেল, তা আমরা জানতে চাই।’

আজ সোমবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বিজিএমইএ ভবনে সংবাদ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়। সম্প্রতি পোশাক শ্রমিকদের নিম্নতম মজুরি আট হাজার টাকা নির্ধারণ করে নিম্নতম মজুরি বোর্ড। বেশ কিছু শ্রমিক সংগঠন এ হারের বিরোধিতা করে সভা সমাবেশ করছে। তারা মজুরিতে মূল মজুরির অনুপাত কমানোর সমালোচনা করছে। সংগঠনগুলোর দাবি, নিম্নতম মজুরি ১৬ হাজার টাকা করা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিজিএমইএ এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

লিখিত বক্তব্যে সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শত ব্যস্ততার মাঝেও উদ্যোগী হয়ে সকল পক্ষের সঙ্গে কথা বলে পোশাকশিল্পের জন্য নিম্নতম মজুরি নির্ধারণ করে দিয়েছেন। আর আমরা অনেক প্রতিকূলতা ও ব্যবসার কষ্ট থাকা সত্ত্বেও নতুন মজুরি কাঠামো মেনে নিয়েছি এবং নতুন এই মজুরি কাঠামো প্রশংসিতও হয়েছে।’

বিজিএমইএর অভিযোগ, জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন তাদের প্রচারপত্রে বলেছে, নতুন মজুরি কাঠামোতে মূল মজুরি বৃদ্ধি পায়নি। প্রচারপত্রে তারা ১৯৯৪, ২০০৬ সালের মূল মজুরির তুলনা করেছে, কিন্তু কৌশলে ২০১৩ সালের মূল মজুরির বিষয়টি এড়িয়ে গেছে। তারা আরও বলেছে, সপ্তম গ্রেডের শ্রমিকের হার মোট শ্রমিকের ৩ থেকে ৫ শতাংশ। অথচ এদের হার ২০ শতাংশের ওপরে।

এ বিষয়ে বিজিএমইএ আইনগত ব্যবস্থা নেবে কি না? জানতে সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা আইনি পথে যেতে চাই না। দেশবাসীকে সঠিক তথ্য জানাতে চাই।’ তিনি বলেন, ‘ভুল তথ্যের মাধ্যমে প্রমাণিত হয় ওই শ্রমিকনেতাদের আসলে পোশাক খাত সম্পর্কে ধারণা নেই।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি আমিরুল হক আমিন বলেন, ‘আমি ৩৩ বছর ধরে পোশাক খাতে শ্রমিকদের সঙ্গে কাজ করি। এ খাতের সঙ্গে যোগাযোগ না থাকলে বিজিএমইএ আমাকে তাদের আরবিট্রেশন কমিটির সদস্য বানিয়েছে কেন?’ তিনি বলেন, ‘মূল মজুরি বাড়েনি, এটা আমরা কখনো বলিনি। আমরা বলেছি, ১৯৯৪, ২০০৬ ও ২০১০ সালে মোট মজুরিতে মূল মজুরি ছিল যথাক্রমে ৬০, ৬৫ ও ৬৬ শতাংশ। সেটা কমে এবার মূল মজুরি মোট মজুরির ৫১ শতাংশে নেমেছে। ২০১৩ সালেও মূল মজুরি মোট মজুরির ৫৭ শতাংশ ছিল।’

আমিরুল হক আরও বলেন, ‘আমরা কোনো কৌশল করিনি। মালিকেরা সুকৌশলে মূল মজুরির অনুপাত কমিয়েছেন, যাতে ওভারটাইম, অবসরকালীন সুবিধা, উৎসব ভাতা ও ছাঁটাইয়ের ক্ষেত্রে শ্রমিকেরা কম টাকা পান।’ তিনি বলেন, ‘আমরা কোনো প্রচারপত্র বিলি করিনি। আর্থিক সংগতি থাকলে সেটা করতাম।’