দুধ উৎপাদনে ঋণের সুদ ৪%

দুধ উৎপাদনে খামারিরা এখন মাত্র ৪ শতাংশ সুদে ঋণ পাবেন, আগে যা ছিল ৫ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের পুনঃ অর্থায়ন কর্মসূচির আওতায় ব্যাংকগুলো থেকে এ ঋণ মিলবে। দেশকে দুধে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে গতকাল এক প্রজ্ঞাপনে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের দেওয়া সুবিধার ফলে এখন ৪ শতাংশ সুদে গাভি-বকনা বাছুর কেনা ও লালনপালনের জন্য ব্যাংক ও বিশেষায়িত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে ঋণ নিতে পারবেন দুধ উৎপাদন এবং কৃত্রিম প্রজননের সঙ্গে জড়িত খামারিরা। একক ও যৌথ নামে এই ঋণ নেওয়া যাবে। একটি বকনা বাছুর কেনার জন্য ৪০ হাজার টাকা এবং লালনপালনের জন্য ১০ হাজার টাকা করে ঋণ নেওয়া যায়। ফলে একজন খামারি সর্বোচ্চ চারটি বকনা বাছুরের জন্য সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা ঋণ নিতে পারেন। এ ঋণ পুরোপুরি জামানতবিহীন।

জানা গেছে, এই ঋণ বিতরণ করতে গিয়ে ব্যাংক ও বিশেষায়িত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বাজারের প্রচলিত সুদের তুলনায় কম সুদে ঋণ বিতরণ করায় তাদের যে পরিমাণ সুদ ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে, সেই পরিমাণ অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংক ভর্তুকি হিসেবে প্রদান করবে।

দেশকে দুধে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার জন্য ২০১৫ সালে ৫ শতাংশ সুদে ঋণ দেওয়ার লক্ষ্যে একটি পুনঃ অর্থায়ন কর্মসূচি হাতে নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ওই সময় এ–সংক্রান্ত নীতিমালায় ঋণের সুদহার নির্ধারণের ক্ষেত্রে বলা হয়েছিল, এ কর্মসূচির আওতায় ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ব্যাংক রেটে পুনঃ অর্থায়ন সুবিধা পাবে (বর্তমানে ব্যাংক রেট ৫ শতাংশ, যা পরিবর্তনশীল)। অর্থাৎ গ্রাহক পর্যায়ে তখন এই ঋণের সুদের হার ছিল সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ।

ওই নির্দেশনা অনুযায়ী, ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বিতরণ করা ঋণের বিপরীতে সুদ ক্ষতি বা ভর্তুকি বাবদ বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে অতিরিক্ত ৫ শতাংশ দাবি করতে পারত। গতকালের নির্দেশনায় গ্রাহক পর্যায়ে সুদের হার ১ শতাংশীয় মাত্রা কমিয়ে ৪ শতাংশ নির্ধারণ করা হয় এবং সরাসরি ৫ শতাংশ সুদ ক্ষতি দাবির বিষয়টি উঠিয়ে দিয়ে সেখানে কৃষি ও পল্লিঋণ নীতিমালায় প্রযোজ্য সুদহারের তুলনায় প্রকৃত সুদ ক্ষতি বাবদ অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে দাবি করা যাবে বলে জানানো হয়। আগামী ১ নভেম্বর থেকে নতুন এই নির্দেশনা কার্যকর হবে।

ঋণের তহবিল জোগান দিতে ২০০ কোটি টাকার একটি তহবিলও গঠন করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কর্মসংস্থানের বিষয়টি বিবেচনায় রেখে দুধের আমদানিনির্ভরতা কমাতে উৎপাদন বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া হয়।