তথ্যপ্রযুক্তিতে আরও কর সুবিধা

বর্তমান সরকারের মেয়াদের শেষ মুহূর্তে ভোটের আগে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের জন্য কর-সুবিধা আরও বাড়ানো হয়েছে। এখন থেকে যেকোনো হাইটেক পার্কে কোনো কোম্পানি স্থাপন করা হলে প্রথম সাত বছর কোনো কর দিতে হবে না। ওই সাত বছর শতভাগ কর অব্যাহতি পাবে ওই তথ্যপ্রযুক্তি খাতের কোম্পানিগুলো। এর পরের তিন বছর বার্ষিক যে আয় হবে, সেই আয়ের ৩০ শতাংশের ওপর শুধু কর দিতে হবে। বাকি ৭০ শতাংশ আয়ের ওপর ওই তিন বছর কর অব্যাহতি সুবিধা  পাওয়া যাবে।

সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রজ্ঞাপনটি প্রকাশ করা হয়।

এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের জুলাই মাসে এনবিআর হাইটেক পার্কে স্থাপিত তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বিশেষ কর-সুবিধা ঘোষণা করে। ওই সময় এনবিআরের পক্ষ থেকে কোম্পানি স্থাপনের প্রথম তিন বছরের জন্য শতভাগ কর অব্যাহতি সুবিধা দেওয়া হয়েছিল। এ ছাড়া চতুর্থ বছরে ৮০ শতাংশ, পঞ্চম বছরে ৭০ শতাংশ, ষষ্ঠ বছরে ৬০ শতাংশ, অষ্টম বছরে ৪০ শতাংশ, নবম বছরে ৩০ শতাংশ এবং দশম বছরে ২০ শতাংশ হারে কর অব্যাহতি মিলত। এখন নতুন প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী কোম্পানি স্থাপনের প্রথম সাত বছর মিলবে শতভাগ কর অব্যাহতি সুবিধা। আর পরের তিন বছর আয়ের মাত্র ৩০ শতাংশের ওপর কর দিতে হবে।

এনবিআরের নতুন প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী কর অব্যাহতি সুবিধা পেতে কোম্পানিগুলোকে কিছু শর্ত পালন করতে হবে। প্রথমত, সংশ্লিষ্ট কোম্পানির অবশ্যই কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) থাকতে হবে। দ্বিতীয়ত, আয়কর অধ্যাদেশের ৩৫ ধারা অনুযায়ী যথাযথভাবে হিসাব সংরক্ষণ করতে হবে এবং ৭৫ ধারা অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আয়কর রিটার্ন সংশ্লিষ্ট আয়কর কর্তৃপক্ষের কাছে দাখিল করতে হবে।

তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ব্যাপক সম্প্রসারণে ২০১০ সালে বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করা হয়। ২০১৭-১৮ সালের হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্ক ও যশোরে শেখ হাসিনা সফটওয়্যার পার্কও স্থাপন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ৫২টি আইটি কোম্পানি দুই হাইটেক পার্কে তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে। অন্যদিকে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্ব (পিপিপি) মডেলে হাইটেক পার্ক (সিলেট ইলেকট্রনিকস সিটি) গঠনের মৌলিক অবকাঠামো নির্মাণের কাজ চলছে। এ ছাড়া প্রতিটি জেলায় হাইটেক পার্ক স্থাপনের লক্ষ্যে প্রাথমিক পর্যায়ে ময়মনসিংহ, জামালপুর, রংপুর, নাটোর, খুলনা, বরিশাল, গোপালগঞ্জ, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সিলেট ও ঢাকার কেরানীগঞ্জে কাজ চলছে।