মেরামত করে ব্যাংক খাত চালানো যাবে না: পরিকল্পনামন্ত্রী

আ হ ম মুস্তফা কামাল । ফাইল ছবি
আ হ ম মুস্তফা কামাল । ফাইল ছবি

পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, মেরামত করে ব্যাংক খাত চালানো যাবে না। এ খাতের ব্যাপক সংস্কার করতে হবে। এই সংস্কার এখন সময়ের দাবি, সংস্কারের বিকল্প নেই। আজ রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী এসব কথা বলেন। শেরেবাংলা নগরের পরিকল্পনা কমিশনের এনইসির সম্মেলনকক্ষে এ সংবাদ সম্মেলন হয়।

ব্যাংক খাতের বিভিন্ন অনিয়ম সম্পর্কে আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ব্যাংক খাতে নীতির দুর্বলতা ছিল না। কিন্তু তদারকি খুবই দুর্বল ছিল। যদি শক্তিশালী তদারক–ব্যবস্থা থাকত, তাহলে এসব ঘটনা ঘটত না। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, একটি খাতের (আর্থিক খাত) জন্য দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে খুব বেশি প্রভাব পড়বে না। গত অর্থবছরের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) ব্যাংক খাতে মূল্য সংযোজন ৭১ হাজার ৭৫৪ কোটি টাকা; যা জিডিপির মাত্র ২ দশমিক ৯৭ শতাংশের সমান।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) ২০ দশমিক ১৫ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে; যা গত পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) সূত্রে এ হিসাব করেছে।

আইএমইডির হিসাব অনুযায়ী, গত জুলাই-নভেম্বর সময়ে ৩৬ হাজার ৪৩৮ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। গতবার একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ৩২ হাজার ৯৯৭ কোটি টাকা। স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যয়সহ চলতি অর্থবছরে মোট এডিপির মোট আকার ১ লাখ ৮০ হাজার ৮৬৯ কোটি টাকা।

পরিকল্পনামন্ত্রী আরও জানান, চলতি অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে ৮ দশমিক ৩০ শতাংশ হতে পারে। তিনি বলেন, ‘এ বছর দীর্ঘদিনের ছয়ের বৃত্ত ভেঙে আটের ঘরে ঢুকব। ২০২১ সালের মধ্যে ১০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি পৌঁছাবে বলে আশা করি। আর অর্থনীতির এসব ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারলে ২০৩০ সালের মধ্যে দারিদ্র্যমুক্ত হবে দেশ।’ অর্থনীতি নিয়ে তিনি বলেন, অর্থনীতির প্রায় সব সূচকই ইতিবাচক ধারায় আছে। নতুন মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট আইন বাস্তবায়িত হলে রাজস্ব আদায় আরও বাড়ত। গত ১০ বছরে আশানুরূপ কর্মসংস্থান হয়নি। তবে এখন বিদ্যুতের ঘাটতি নেই। তাই ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল হলে কর্মসংস্থানে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে।

আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, মেগা প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন মসৃণ করার জন্য সরকারের ধারাবাহিকতা রক্ষা করা প্রয়োজন। হোলি আর্টিজানের ট্র্যাজেডি না হলে মেগা প্রকল্পগুলো আরও দৃশ্যমান হতো। তাঁর মতে, অন্য দেশে সরকার পরিবর্তন হলেও অর্থনীতি হোঁচট খায় না। আগের সরকার যেখানে শেষ করে, নতুন সরকার সেখান থেকে শুরু করে। কিন্তু এখানে দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, যারা ক্ষমতায় আসে, তারা মনে করে, আগের সরকার যা করেছে সবই খারাপ।