একাধিক ভ্যাট হার হচ্ছে

নতুন মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট আইনের সংশোধনের বিষয়ে একমত হয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও ব্যবসায়ীরা। এনবিআর নতুন ভ্যাট আইনে যেসব সংশোধনী আনতে চায়, সেই সব সংশোধনী প্রস্তাব শিগগিরই ব্যবসায়ীদের কাছে পাঠাবে। সংশোধনী প্রস্তাবের মধ্যে অন্যতম হলো একক ১৫ শতাংশ ভ্যাটের পরিবর্তে একাধিক ভ্যাট হার। এ ছাড়া ভ্যাট অব্যাহতিপ্রাপ্ত পণ্যের তালিকা যেমন বাড়বে, তেমনি সম্পূরক শুল্কের আওতা বৃদ্ধি করার প্রস্তাবও আছে। কেন্দ্রীয়ভাবে ব্যবসায় নিবন্ধনের বদলে এলাকাভিত্তিক ভ্যাট কমিশনারেট থেকে ভ্যাটদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর নিবন্ধন নেওয়া যাবে।

গতকাল বুধবার ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের নেতাদের সঙ্গে ভ্যাট আইন নিয়ে বিশেষ বৈঠক করেছেন এনবিআরের কর্মকর্তারা। সেগুনবাগিচার এনবিআর কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এই সভা হয়। এফবিসিসিআইয়ের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন সংগঠনের সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন। সভায় এনবিআরের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়াসহ সংস্থার একাধিক সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

সভার দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, এনবিআরের পক্ষ থেকে নতুন ভ্যাট আইনে কী ধরনের পরিবর্তন আনা যেতে পারে, সেই সংশোধনী প্রস্তাবগুলো তুলে ধরা হয়। এরপর ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সংশোধনী প্রস্তাবগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে পাওয়ার পর নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে মতামত দেওয়া হবে। ব্যবসায়ীদের মতামত পাওয়ার পর এনবিআর ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি ওয়ার্কিং কমিটি তৈরি করবে। ওই কমিটি সংশোধনী প্রস্তাবগুলো চূড়ান্ত করবে।

বৈঠক সূত্রে আরও জানা গেছে, আগামী জুলাই মাস থেকে নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়নের বিষয়ে ব্যবসায়ীরা নমনীয় মনোভাব দেখিয়েছেন। তাঁদের দাবি, আইনটি চালুর আগেই ব্যবসায়ীদের মত নিয়ে সংশোধনীগুলো চূড়ান্ত করা।

কিছুদিন আগে ঢাকা কাস্টমস হাউসের কমিশনার আবদুল মান্নান শিকদারকে প্রধান করে ভ্যাট আইনের সংশোধনীসংক্রান্ত কমিটি গঠন করে এনবিআর। গত সপ্তাহে ওই কমিটি সংশোধনী প্রস্তাবগুলোর প্রতিবেদন জমা দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতেই গতকাল ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে এনবিআর।

২০১২ সালের ভ্যাট আইনটি দুই দফা পেছানোর পর ২০১৭ সালের জুলাই মাস থেকে বাস্তবায়ন করার কথা ছিল। নতুন ভ্যাট আইনে কিছু ক্ষেত্রে অব্যাহতি দিয়ে সব পণ্য ও সেবায় ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট বসানো হয়। ব্যবসায়ীরা প্রথম থেকেই এই আইনের বিরোধিতা করে আসছে। তাই ব্যবসায়ীদের তীব্র আপত্তির মুখে সরকার শেষ মুহূর্তে নতুন আইনটি বাস্তবায়ন আরও দুই বছর পিছিয়ে দেয়। নতুন আইনটি চালুর মাত্র দুই দিন আগে অর্থাৎ গত বছরের ২৯ জুন অর্থমন্ত্রী ভ্যাট আইন পিছিয়ে দেওয়ার এই ঘোষণা দেন। আগামী জুলাই মাস থেকে নতুন আইনটি বাস্তবায়নের কথা আছে।