ঋণ পরিশোধে সব ব্যবসায়ীর সমান সুযোগ চান এফবিসিসিআই সভাপতি

এফবিসিসিআই
এফবিসিসিআই

ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেছেন, ‘যাঁরা অবৈধভাবে ব্যাংকের টাকা লুটপাট করেছেন, তাঁদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। তবে অনিচ্ছাকৃতভাবে পারিপার্শ্বিক কারণে যাঁরা খেলাপি হয়েছেন, তাঁদের পাশে আমরা আছি।’ আজ রোববার রাজধানীর ঢাকা ক্লাবের স্যামসন এইচ চৌধুরী সেন্টারে অ্যাসোসিয়েশনের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

ব্যাংকের ঋণ পরিশোধে বড়দের মতো ক্ষুদ্র-মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্যও সমান সুযোগ দেওয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বড় ব্যবসায়ীদের ৫০০ কোটি টাকার বেশি ঋণ যদি ২০ বছরের জন্য পুনঃ তফসিল করা যায়, তাহলে ক্ষুদ্র-মাঝারি ব্যবসায়ীরা কেন সেই সুযোগ পাবেন না। আমরা সবার জন্য সমান সুযোগ চাই।’

আগামী জাতীয় বাজেটে বিভিন্ন ব্যবসা খাতের সুপারিশমালা সমন্বয়, পাঁচ বছরের জন্য দেশের ব্যবসা উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং এফবিসিসিআইয়ের ভিশন-২০৪১ বিষয়ে আলোচনার জন্য এ সভার আয়োজন করা হয়। তবে শেষ পর্যন্ত ফেডারেশনের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি শেখ ফজলে ফাহিমকে পরবর্তী সভাপতি হিসেবে সমর্থন ও আগামী বাজেটে বিভিন্ন দাবিদাওয়া বাস্তবায়নই আলোচনায় প্রাধান্য পায়। এতে অধিকাংশ পণ্যভিত্তিক ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতা এফবিসিসিআইয়ের পরবর্তী সভাপতি হিসেবে শেখ ফজলে ফাহিমকে সমর্থন দেন।

মুক্ত আলোচনায় ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা বিভিন্ন দাবিদাওয়া তুলে ধরেন। চিনি ব্যবসায়ী মো. আবুল হাশেম বলেন, ‘আমরা ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে ব্যবসা করি। প্রধানমন্ত্রী এক অঙ্কের সুদে ঋণ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু বাস্তবে আমরা তা পাচ্ছি।’ বাংলাদেশ ক্রোকারিজ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মনির হোসেন বলেন, ‘আমরা যাঁরা ঋণ নিয়ে সময়মতো পরিশোধ করি, তাঁদের কোনো মূল্যায়ন করা হয় না। ঋণখেলাপিদের জন্য সব সুবিধা দেওয়া হয়।’ খেলাপি ঋণ বন্ধ করে ভালো ব্যবসায়ীদের সুবিধা দেওয়ার দাবি করেন তিনি।

বাংলাদেশ অটো রি-রোলিং অ্যান্ড স্টিল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহজাহান বলেন, ‘কাঁচামালের ট্যারিফ মূল্যের ওপর ভ্যাট দেওয়ার ব্যবস্থা ভবিষ্যতে বহাল থাকলে আমাদের জন্য ভালো হয়। এ ছাড়া টার্নওভার কর দশমিক ৩ থেকে বাড়িয়ে দশমিক ৬ শতাংশ করা হয়েছে। এটি আমাদের জন্য বোঝা।’
বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধি এ বি এম মাসুদ বলেন, হেমায়েতপুরের পরিবেশবান্ধব চামড়াশিল্প নগরীতে হাজারীবাগের ট্যানারি স্থানান্তর করা হয়েছে। আগামী জুনে কেন্দ্রীয় বর্জ্য পরিশোধনাগার বুঝিয়ে দেওয়ার কথা। তবে এখনো কাজ শেষ হয়নি। ডাম্পিং ইয়ার্ড করার কথা থাকলেও হয়নি। ফলে ধলেশ্বরী নদীসহ আশপাশের এলাকা ধ্বংস হচ্ছে। চামড়াশিল্প নগরীর সমস্যা সমাধানে এফবিসিসিআইকে একটি কমিটি গঠন করার অনুরোধ করেন তিনি।

ভোজ্যতেলের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে কমিটি গঠন করার দাবি করেন পাইকারি ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম মাওলা। তিনি বলেন, বাজারে ভোজ্যতেলের দাম ৫০-১০০ টাকা বেড়ে গেলে গোয়েন্দারা খোঁজখবর নেওয়া শুরু করে। পত্রপত্রিকায় সমালোচনা করা হয়। কিন্তু যখন দাম কমে গিয়ে ব্যবসায়ীরা লোকসান গোনেন, তখন কোনো কথা হয় না।