ঢাকায় ভোট, চট্টগ্রামে নেই

তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর নির্বাচনে অবশেষে খণ্ডিত ভোটাভুটি হচ্ছে। সংগঠনটির নির্বাচনকেন্দ্রিক বড় দুই জোট সম্মিলিত পরিষদ ও ফোরাম সমঝোতার মাধ্যমে একটি প্যানেল দিয়েছিল। তার বিপরীতে নতুন জোট স্বাধীনতা পরিষদ খণ্ডিত প্যানেল দিয়েছে। এতে বিজিএমইএর ঢাকা অঞ্চলের ২৬ পরিচালক নির্বাচিত হবেন সাধারণ সদস্যদের ভোটের মাধ্যমে। তবে স্বাধীনতা পরিষদ চট্টগ্রাম অঞ্চলের জন্য প্রার্থী না দেওয়ায় সেখানে সম্মিলিত পরিষদ ও ফোরামের জোটগত প্যানেলের নয়জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পরিচালক পদে নির্বাচিত হয়েছেন।

বিজিএমইএর নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ছিল গতকাল বুধবার। শেষ দিনে ফোরাম ৫ জনের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে। আর সম্মিলিত পরিষদ প্রত্যাহার করে ১ জনের প্রার্থিতা। পরে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। এতে দেখা যায়, ঢাকা ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের জন্য ৩৫ পরিচালক পদের বিপরীতে প্রার্থী সংখ্যা ৫৩ তে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে ফোরামের ১৯ জন, সম্মিলিত পরিষদের ১৬ জন এবং স্বাধীনতা পরিষদের ১৮ জন ব্যবসায়ী রয়েছেন। ঢাকার ২৬ পরিচালক পদের বিপরীতে ৪৪ জন প্রার্থী হওয়ায় এসব পদে ভোট হবে।

২০১৯-২১ মেয়াদে বিজিএমইএর ৩৫ পরিচালক পদের ভোটাভুটি আগামী ৬ এপ্রিল। এবার মোট ভোটার ১ হাজার ৯৫৬ জন। তার মধ্যে ঢাকার ১ হাজার ৫৯৭ এবং ৩৫৯ জন চট্টগ্রামের। গত শনিবার মনোনয়নপত্র জমার শেষ দিনে সম্মিলিত পরিষদের ১৭ জন, ফোরামের ২৩ জন এবং স্বাধীনতা পরিষদের ১৮ জন ব্যবসায়ী পরিচালক পদের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন।

মো. সিদ্দিকুর রহমানের নেতৃত্বে বিজিএমইএর বর্তমান কমিটি ২০১৫ সালের ২২ সেপ্টেম্বর দায়িত্ব গ্রহণ করে। ২০১৩ সালে সদস্যদের ভোটে সংগঠনটির পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচিত হলেও ২০১৫ সালে তা হয়নি। সম্মিলিত পরিষদ ও ফোরামের নেতারা সমঝোতার ভিত্তিতে কমিটি করার সিদ্ধান্ত নেন। দুই মেয়াদের জন্য সমঝোতা হয়। তার ভিত্তিতে সম্মিলিত পরিষদ ও ফোরাম যৌথভাবে প্যানেল দিয়েছে। প্যানেল নেতা ও সভাপতি প্রার্থী মোহাম্মদী গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুবানা হক। তবে স্বাধীনতা পরিষদ প্রার্থী দেওয়ায় হিসাব–নিকাশ পাল্টে যায়। জানতে চাইলে গতকাল রুবানা হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘ফোরাম ও সম্মিলিত পরিষদ যৌথভাবে প্যানেল দিয়েছে। যৌথভাবেই আমরা ভোটারদের কাছে যাব।’

স্বাধীনতা পরিষদের আহ্বায়ক মো. জাহাঙ্গীর আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিজিএমইএর সদস্যদের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আমরা প্রার্থী দিয়েছি।’

নির্বাচন কমিশনের চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা অনুযায়ী ফোরামের প্রার্থীরা হলেন রুবানা হক, ইকবাল হামিদ কোরেশী আদনান, এম এ রহিম, রেজওয়ান সেলিম, ফয়সাল সামাদ, এনামুল হক খান, শিহাব উদ্দিন চৌধুরী, শহীদুল হক মুকুল, নজরুল ইসলাম, মোহাম্মদ আবদুল মোমেন, এ কে এম বদিউল আলম, শরীফ জহির, আসিফ ইব্রাহিম ও কামাল উদ্দিন। ফোরামের মোহাম্মদ আব্দুস সালাম, মোহাম্মদ আতিক, এনামুল আজিজ চৌধুরী, খন্দকার বেলায়েত হোসেন ও এ এম মাহবুব চৌধুরী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।

সম্মিলিত পরিষদের প্রার্থীরা হলেন এস এম মান্নান, মোহাম্মদ নাছির, আরশাদ জামাল দিপু, মশিউল আলম সজল, রফিকুল ইসলাম, মুনির হোসেন, মোশারফ হোসেন ঢালী, সাজ্জাদুর রহমান মৃধা, মিরান আলী, নাছির উদ্দিন, মাসুদ কাদের ও মহিউদ্দিন রুবেল। সম্মিলিত পরিষদের এ এম চৌধুরী, অঞ্জন শেখর দাস, মোহাম্মদ মেরাজ-ই-মোস্তফা ও মোহাম্মদ মুসা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।

অন্যদিকে স্বাধীনতা পরিষদের প্রার্থীরা হলেন জাহাঙ্গীর আলম, দেলোয়ার হোসেন, হুমায়ুন রশীদ, সাইফুল ইসলাম, জাহিদ হাসান, মাহমুদ হোসাইন, কাজী মাহজাবিন মমতাজ, হাসান সাব্বির মাহমুদ, শরিফুল আলম চৌধুরী, খন্দকার ফরিদুল আকবর, আয়েশা আক্তার, জাহাঙ্গীর কবির, কাজী আব্দুস সোবহান, ওমর নাজিম হেকমত, মো. ওয়ালিউল্লাহ, এস শহিদুজ্জামান, শওকত হোসেন ও জহিরল ইসলাম।