সূচকের সামান্য উত্থানে চলছে লেনদেন

শেয়ারবাজার
শেয়ারবাজার

দেশের দুই পুঁজিবাজারে আজ সোমবার সূচকের কিছুটা উত্থানের মধ্য দিয়ে লেনদেন চলছে। সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস দুপুর ১২টা পর্যন্ত ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে সাড়ে ৯ পয়েন্ট। তবে লেনদেনের গতি বেশ কম। দুই ঘণ্টায় লেনদেনের পরিমাণ মাত্র ১৫৯ কোটি ১৭ লাখ টাকা।

একই সময় পর্যন্ত চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১০ পয়েন্ট। তা অবস্থান করছে ১৬ হাজার ৮৯৮ পয়েন্টে। লেনদেনের পরিমাণ ৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা।

ডিএসই ওয়েবসাইট সূত্রে জানা যায়, দুপুর ১২টা পর্যন্ত হাতবদল হওয়া শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৫৫টির। কমেছে ১০৮টির। অপরিবর্তিত ৬৯টির।

দুপুর ১২টা পর্যন্ত লেনদেনের শীর্ষে রয়েছে সিঙ্গারবিডি, গ্রামীণফোন, বিএটিবিসি, ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি, মুন্নু সিরামিকস, জেএমআই সিরিঞ্জেস, লিগ্যাসি ফুটওয়্যার, স্টাইল ক্রাফট, ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড ও আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড।

গত কার্যদিবসে লেনদেন শেষে ডিএসইএক্স সূচক ৫৮ পয়েন্ট কমে অবস্থান করে ৫ হাজার ৫১২ পয়েন্টে। গত ২ জানুয়ারির পর গতকালই সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমে আসে ডিএসইএক্স সূচকটি। সর্বশেষ ২ জানুয়ারি ডিএসইএক্স সূচকটি ৫ হাজার ৪৯৬ পয়েন্টের সর্বনিম্ন অবস্থানে ছিল। গতকাল মোট লেনদেন হয় ৩৫৪ কোটি ৩৫ লাখ টাকা।

প্রায় এক মাসেরও বেশি সময় ধরে বাজারে মন্দাভাব বিরাজ করছে। গত তিন কার্যদিবসে সূচক কমেছে ১১৯ পয়েন্ট।

বাজারের এ মন্দাভাবের বিষয়ে জানতে চাইলে বেসরকারি ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য অনুষদের অধ্যাপক মোহাম্মদ মুসা বলেন, বাজারের সাম্প্রতিক এ উত্থান-পতনের সঙ্গে অর্থনীতির মৌলিক কোনো সম্পর্ক বা যোগসূত্র পাওয়া যাবে না। বরং এ উত্থান-পতন ঘটছে বিনিয়োগকারীদের আচরণগত পরিবর্তনের কারণে।

মোহাম্মদ মুসা বলেন, বর্তমানে দেশের অর্থনীতির প্রায় সব সূচকই ইতিবাচক অবস্থায় রয়েছে। রপ্তানি ভালো, রেমিট্যান্স প্রবাহও আগের চেয়ে ভালো অবস্থায় রয়েছে। রাজনৈতিক কোনো অনিশ্চয়তা নেই। মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি প্রথমবারের মতো ৮ শতাংশের বেশি হবে বলে প্রাক্কলন করা হচ্ছে। তা সত্ত্বেও ব্যতিক্রম শুধু শেয়ারবাজার। তাতে বোঝা যাচ্ছে, মৌলিক কোনো কারণ ছাড়াই বিনিয়োগকারীদের আচরণগত কারণই বাজারকে বেশি প্রভাবিত করছে।

বাজারসংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, টানা পতনের কারণে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থাহীনতা দেখা দিয়েছে। ব্যক্তিশ্রেণির বিনিয়োগকারীদের পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণও বাজারে উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে। যার প্রভাব পড়েছে লেনদেনে।

ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের পর বাজারে চাঙাভাব দেখা দেয়। তাতে জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে ঢাকার বাজারে লেনদেন পৌঁছে যায় প্রায় ১ হাজার ২০০ কোটি টাকার ঘরে। গতকাল দিন শেষে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৩৫৪ কোটি টাকায়। তিন মাসের ব্যবধানে এটিই ডিএসইতে সর্বনিম্ন লেনদেন। এর আগে সর্বশেষ ২৩ ডিসেম্বর ঢাকার বাজারে ৩৫৩ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছিল। বর্তমানে লেনদেন যে পর্যায়ে নেমে এসেছে, তাতে উদ্বিগ্ন বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।