বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সবাই নির্বাচিত

ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) ২০১৯-২০২১ মেয়াদের দ্বিবার্ষিক নির্বাচনে ৪২ পরিচালক পদে সবাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১ জনের মনোনয়ন ঋণখেলাপির অভিযোগে বাতিল হয়েছে। একই অভিযোগে ২ মনোনীত পরিচালকের মনোনয়নও বাতিল হয়েছে। অবশ্য ৩ জনই মনোনয়ন ফিরে পেতে আপিল করতে পারবেন। মতিঝিলে এফবিসিসিআই ভবনে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে জয়ী প্রার্থীদের তালিকা টানিয়ে দেয় নির্বাচন কমিশন।

বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত পরিচালকেরা এবার ভোট দিয়ে এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি ও ২ সহসভাপতি নির্বাচন করবেন। এ ক্ষেত্রেও সাম্প্রতিক কালে ভোটাভুটি হয়নি। এবার সংগঠনটির সভাপতি পদে এখনকার সহসভাপতি শেখ ফজলে ফাহিমের বিরুদ্ধে কেউ প্রার্থী হচ্ছেন না বলে জানা গেছে। শেখ ফজলে ফাহিম ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমের ছেলে। তাঁর নেতৃত্বে এবার এফবিসিসিআইয়ের নির্বাচনে সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ নামে একটি প্যানেল গঠিত হয়।

সব মিলিয়ে সংগঠনটিতে মোট পরিচালক পদ ৭২টি। এসব পদ আবার দুই ভাগে বিভক্ত। এক ভাগে ৩৬টি পদে পরিচালক হন দেশের জেলাভিত্তিক বাণিজ্য সংগঠন বা চেম্বার থেকে। আর ৩৬টি পদ সংরক্ষিত পণ্যভিত্তিক ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর জন্য। ৭২টি পরিচালক পদের মধ্যে ৪২টিতে সাধারণ সদস্যরা ভোট দিয়ে নেতা নির্বাচন করেন। বাকি ৩০টি পদে দেশের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য সংগঠন থেকে মনোনীত পরিচালক হন।

২৭ এপ্রিল এফবিসিসিআইয়ের নির্বাচনের ভোটাভুটির কথা ছিল। তবে ভোটাভুটির যে প্রয়োজন হচ্ছে না তা জানা গিয়েছিল গত ২৫ মার্চ। ওই দিন মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল। ৪২টি পরিচালক পদে ৪২ জনই শেষ পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দেন। এর আগে ২০১৭ সালের ১৪ মে এফবিসিসিআইয়ের দ্বিবার্ষিক নির্বাচন হয়েছিল। পরিচালক পদে চেম্বার অংশে ভোটাভুটি ছাড়া বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থীরা নির্বাচিত হন। তবে অ্যাসোসিয়েশন অংশে তখন ভোটাভুটি হয়েছিল।

জানতে চাইলে নবনির্বাচিত একজন পরিচালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, অ্যাসোসিয়েশন অংশ থেকে এফবিসিসিআইয়ের প্রথম সহসভাপতি এবং চেম্বার থেকে দ্বিতীয় সহসভাপতি নির্বাচিত হবে। সহসভাপতি থেকে ২ অংশের ৪ জন করে মোট ৮ জন পরিচালক চেষ্টা করছেন।

চেম্বার অংশের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত পরিচালকেরা হলেন শেখ ফজলে ফাহিম, হাসিনা নেওয়াজ, মাসুদুর রহমান মিলন, আজিজুল হক, দিলিপ কুমার আগারওয়ালা, মাসুদ পারভেজ খান, এ এইচ আহমেদ জামাল, মোহাম্মদ আনোয়ার সাদাত সরকার, মো. রেজাউল করিম রেজনু, গাজী গোলাম আশরিয়া, মো. কোহিনুর ইসলাম, প্রবীর কুমার সাহা, মো. আতাউর রহমান ভূঁইয়া, তাবারাকুল তোসাদ্দেক হোসাইন খান, মোহাম্মদ রিয়াদ আলী, শারিতা মিল্লাত, সজীব রঞ্জন দাস, মো. হাসানুজ্জামান, শরিফুল ইসলাম ও হ‌ুমায়ূন রশিদ খান পাঠান। তবে রাঙামাটি চেম্বারের সভাপতি মোহাম্মদ বজলুর রহমানের মনোনয়ন বাতিল হয়।

অ্যাসোসিয়েশন অংশের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পরিচালক হলেন মুনতাকিম আশরাফ, খন্দকার মইনুর রহমান, এস এম জাহাঙ্গীর হোসাইন, শাফকাত হায়দার, মেহেদি আলী, মীর নিজাম উদ্দিন আহমেদ, মো. আবুল আয়েস খান, মোহাম্মদ আমজাদ হুসাইন, কাজী শোয়েব রশিদ, মো. শফিকুল ইসলাম ভরসা, হাফেজ হারুন অর রশিদ, আবু মোতালেব, মো. হাবিব উল্লাহ ডন, খন্দকার রুহুল আমিন, নিজামউদ্দিন রাজেশ, আবদুল হক, হেলেনা জাহাঙ্গীর, শমী কায়সার, মো. মুনির হোসাইন, আবু নাসের ও রাশেদুল হোসাইন চৌধুরী।

অন্যদিকে চেম্বার অংশ থেকে মনোনীত পরিচালকেরা হলেন সালাউদ্দিন আলমগীর, প্রীতি চক্রবর্তী, মঈনুউদ্দিন আবদুল্লাহ, নিজাম উদ্দিন, মোহাম্মদ নুরুন নেওয়াজ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, মনোয়ারা হাকিম আলী, হোসেন খালেদ, নাজ ফারহানা আহমেদ, কাজী আমিনুল হক, গোলাম মঈনুদ্দিন, সামিউল হক সাফা, মঞ্জুর রহমান ও খন্দকার শিপার আহমেদ। তবে রংপুর চেম্বারের সভাপতি মোস্তফা সোহরাব চৌধুরীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে।

অ্যাসোসিয়েশন অংশ থেকে মনোনীত পরিচালকেরা হলেন নজরুল ইসলাম মজুমদার, বেনজির আহমেদ, সৈয়দ সাদাত আলমাস কবির, এস এম শফিউজ্জামান, কাজী বেলায়েত হোসেন, কে এম আক্তারুজ্জামান, সিদ্দিকুর রহমান, শেখ কবির হোসেন, মোহাম্মদ শামস-উজ জোহা, এ কে এম সেলিম ওসমান, কাজী এরতেজা হাসান, ফেরদৌস ওয়াহেদ, খন্দকার এনায়েত উল্লাহ ও আলমগীর শামসুল আলামিন। তবে বিটিএমএর সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকনের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে।