ধনীরা যে পাঁচ ভুল করেন না

মানুষমাত্রই ভুল করে। ধনী-গরিবনির্বিশেষে সবাই তা করে। মানুষ ভুল করে বলেই সে মানুষ। কিন্তু ধনী মানুষেরা কিছু কিছু ভুল এড়ানোর সর্বাত্মক চেষ্টা করেন। অন্য কথায়, ধনী হতে গেলে কিছু ভুল এড়াতে হয়। সিএনবিসির এক প্রতিবেদনে বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রথমত, পুঁজিবাজারে যদি আপনার বিনিয়োগ থাকে এবং বাজার পড়তে শুরু করে, তাহলে সব জেনেবুঝে আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তা না হলে হাত পুড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। দিনের নির্দিষ্ট কিছু সময় যদি বাজারের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করতে না পারেন, তাহলে ভালো একজন আর্থিক উপদেষ্টা রাখাই যেতে পারে।

ওয়াশিংটন ডিসির ডেলান্সি ওয়েলথ ম্যানেজমেন্টের প্রতিষ্ঠাতা আইভরি জনসন বলেন, অধিকাংশ ধনী মানুষই সম্পদ ব্যবস্থাপনা নিজেরা করেন না। তাঁরা সম্পদের সুরক্ষায় এবং ঝুঁকি কমাতে আর্থিক পরিকল্পনাকারী, আইনজীবী, পরামর্শক—এঁদের নিয়োগ দিয়ে থাকেন।

আইভরি জনসন আরও বলেন, ‘বিনিয়োগকারীরা চাপে থাকলে ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রবণতা বাড়ে। সে জন্য ধনী মানুষেরা তা এড়াতে ভালো উপদেষ্টা নিয়োগ দিয়ে থাকেন।’ অনেকে হয়তো এই পরামর্শ ফি দিতে গাঁইগুঁই করবেন, কিন্তু অধিকাংশ সময়েই তার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি টাকা ফেরত পাওয়া যায়।

দ্বিতীয়ত, ধনীরা সাধারণত এক জায়গায় বিনিয়োগ করেন না। অতি ধনীরা বন্ডের বাইরে রিয়েল এস্টেট, লিমিটেড কোম্পানিসহ নানা জায়গায় বিনিয়োগ করে থাকেন। মানে পুঁজিবাজারে মন্দা থাকলে তা যেন আবাসন খাতের মুনাফা দিয়ে কাটিয়ে নেওয়া যায়, সে জন্যই এ ব্যবস্থা। বিশেষ করে আবাসন খাত অতি মুনাফাজনক হওয়ায় অতি ধনীদের এদিকে বিশেষ নজর আছে।

তৃতীয়ত, অতি ধনীরা সময়ের হাওয়ায় ভেসে যান না। বিটকয়েনের কথাই ধরা যাক। ২০১৭ সালে বাজারে আসায় অনেকেই এ থেকে অনেক টাকা কামিয়েছেন। কিন্তু গত বছর বিটকয়েনের বাজার ৭০ শতাংশ পড়ে গেছে। এ ব্যাপারে মার্কিন বিনিয়োগ গুরু ওয়ারেন বাফেটের কথা স্মরণ করা যায়। গত বছর সিএনবিসিকে তিনি বলেছিলেন, ‘ক্রিপ্টোকারেন্সির ক্ষেত্রে আমি বলতে পারি, এর পরিণতি নিশ্চিতভাবেই খারাপ হবে।’ বাফেটের দৃঢ়প্রত্যয়: আপনি যা মনে করেন জানেন, তা সত্যি আপনাকে জানতে হবে এবং সেই পথে থাকতে হবে।

চতুর্থত, ধনী বিনিয়োগকারীরা ক্ষণিকের মুনাফার কথা না ভেবে ধৈর্য ধরে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করে থাকেন। তাঁরা শুধু নিজেদের জন্যই সম্পদ করার কথা ভাবেন না। নাতি-নাতনি বা তারও পরবর্তী প্রজন্মের জন্যও তাঁরা ভাবেন। তাঁরা কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা দিয়ে ক্লাবের সদস্যও হন এ কারণে। এতে যে সম্পর্ক তৈরি হয়, তার কাছে এই টাকা কিছুই নয়।

পঞ্চমত, শেয়ারবাজারে উথাল-পাতাল শুরু হলে মধ্যবিত্তরা হয়তো এদিক-সেদিক ছোটাছুটি করেন। কিন্তু ধনীরা আতঙ্কিত হন না। নানা জায়গায় বিনিয়োগ থাকায় তাঁরা এই অভয় পান। তবে এর জন্য প্রচুর টাকা থাকতে হয়।