সঞ্চয়পত্র যাঁদের জন্য, তাঁরাই তা কিনবেন

আ হ ম মুস্তফা কামাল । ফাইল ছবি
আ হ ম মুস্তফা কামাল । ফাইল ছবি

অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ এবং জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, সমাজের যেসব মানুষের জন্য উচ্চ সুদের সঞ্চয়পত্র চালু করা হয়েছে, তার সুবিধা অনেক ক্ষেত্রে ধনীরাও ভোগ করছেন। তবে ধনীদের জন্য এ সুযোগ সীমিত করে আনতে সঞ্চয়পত্র খাতের সংস্কারকাজে হাত দিয়েছে সরকার। এ ব্যাপারে অর্থ বিভাগের ‘সরকারি ব্যয় ব্যবস্থাপনা শক্তিশালীকরণ: অগ্রাধিকার কার্যক্রমগুলোর ধারাবাহিকতা রক্ষা’ শীর্ষক একটি কর্মসূচি কাজ করছে।

গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এক প্রাক্-বাজেট আলোচনায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানান, এমন ব্যবস্থা করা হচ্ছে যে সঞ্চয়পত্র যাঁদের জন্য চালু করা হয়েছে, তাঁরাই এখানে বিনিয়োগ করতে পারবেন।

আগামী ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে সঞ্চয়পত্রের সুদহারে কোনো পরিবর্তন আনা হবে না বলেও ইঙ্গিত দেন মুস্তফা কামাল। বলেন, ‘সঞ্চয়পত্রের সুদহার যেভাবে ছিল, তাতে হাত দিইনি, হাত দেবও না।’

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া অবশ্য গত ফেব্রুয়ারিতে ‘জাতীয় সঞ্চয় সপ্তাহ ২০১৯’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, ‘সুদহার সমন্বয় ও সঞ্চয়পত্র কেনার ক্ষেত্রে অনিয়ম খতিয়ে দেখাসহ সার্বিক বিষয়ে কাজ করতে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সুপারিশে যদি সুদহার কিছুটা কমানো হয়, তারপরও সেটা ব্যাংকের সুদহার থেকে বেশি থাকবে।’

বর্তমানে সঞ্চয়পত্রগুলোর মধ্যে পাঁচ বছর মেয়াদি পরিবার সঞ্চয়পত্রের মেয়াদ শেষে সুদহার ১১ দশমিক ৫২, পাঁচ বছর মেয়াদি পেনশন সঞ্চয়পত্রের সুদের হার ১১ দশমিক ৭৬, পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রের সুদহার ১১ দশমিক ২৮, তিন বছর মেয়াদি সঞ্চয়পত্রের সুদহার ১১ দশমিক শূন্য ৪ এবং তিন বছর মেয়াদি ডাকঘর সঞ্চয়পত্রের সুদহার ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ।

সঞ্চয়পত্রের বিনিয়োগকারীদের জন্য জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি এবং কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সঞ্চয়কারীর ব্যাংক হিসাব নম্বর, মোবাইল ফোন নম্বরও দিতে হবে। নতুন ব্যবস্থায় ৫০ হাজার পর্যন্ত টাকা দিয়ে সঞ্চয়পত্র কেনা যাবে নগদ টাকায়। এর বেশি হলেই তা পরিশোধ করতে হবে চেকের মাধ্যমে। এ উদ্যোগের ফলে এ খাতে কালোটাকা বিনিয়োগকারীরাও চিহ্নিত হয়ে যাবেন।

আগামী অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র কেনাবেচা স্বয়ংক্রিয় করা হবে এবং ১ জুলাই থেকে সঞ্চয়পত্রের আসল ও সুদ চলে যাবে গ্রাহকের ব্যাংক হিসাবে।