খেলাপিদের জন্য সুবিধা, ব্যাংক ও গ্রাহকের জন্য ভালো হবে: ডেপুটি গভর্নর

বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস এম মুনিরুজ্জামান বলেছেন, আগে ৫০০ কোটি টাকার বেশি ঋণে পুনর্গঠন সুবিধা দেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে কয়টা সফল হয়েছে? যাঁরা দীর্ঘদিন ব্যাংকের টাকা শোধ করতে পারছেন না, তাঁদের জন্য এখন ২ শতাংশ ডাউনপেমেন্ট দিয়ে ঋণ পরিশোধের সুযোগ আসছে। সুদহার হবে বাজারভিত্তিক, যা ব্যাংক ও গ্রাহক সবার জন্য ভালো হবে। অর্থনীতির স্বার্থে এমন সিদ্ধান্ত হতে পারে। এ নিয়ে আলোচনা–সমালোচনা হবেই। তিনি বলেন, নিরাপত্তা সঞ্চিতি (প্রভিশন) সংরক্ষণ ও মামলা করার পর ঋণ অবলোপন করা হয়। এ নিয়েও তো কত কথা হয়।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট আয়োজিত বার্ষিক গবেষণা সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এস এম মুনিরুজ্জামান এসব কথা বলেন। মঙ্গলবার বিআইবিএমে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বিআইবিএমের চেয়ার অধ্যাপক বরকত-এ-খোদা।


সম্মেলনে বছরব্যাপী চলা ১৯টি গবেষণা প্রবন্ধ চূড়ান্তভাবে উপস্থাপন করা হয়। ব্যাংক খাতের বিভিন্ন অনিয়ম প্রসঙ্গে এস এম মুনিরুজ্জামান বলেন, ‘গবেষণর ফলাফল ও বাস্তবতার মধ্যে বিশাল তফাত দেখা যায়। ২০১১ সাল থেকে শীর্ষ পর্যায়ে কাজ করার সুবাদে আমি এটা জানি। অনেক জিনিস ধরা যায়, বোঝা যায়, কিন্তু শেয়ার করা যায় না।’
ঋণের বিপরীতে বন্ধক রাখা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেশে যেসব বড় অঙ্কের ঋণ বিতরণ হয়েছে, তার সবই করপোরেট বা ব্যক্তিগত গ্যারান্টির বিপরীতে দেওয়া। বন্ধকি নিয়ে পড়ে থাকলে রপ্তানি এত হতো না।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদারকি ব্যবস্থা প্রসঙ্গে এস এম মুনিরুজ্জামান বলেন, অনেক ছোট বিষয়ও গভীরভাবে বিশ্লেষণ করা হয়। সেভাবে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনাও দেওয়া হয়। কিন্তু সব বাস্তবায়ন হয় না। সবাই ভালো হলেও খারাপ দু–একজনের কারণে সমস্যা তৈরি হয়।

গণমাধ্যমে অনেক বিষয় আসছে, যা সত্য নয় জানিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদারকি ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়েনি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদন্তেই বড় বড় অনিয়মের বিষয় ধরা পড়েছে। কিছু আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সমস্যা হচ্ছে স্বীকার করে তিনি বলেন, এসব প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ব্যাংকের লাইসেন্স প্রাপ্ত। কিন্তু এসব প্রতিষ্ঠানে জমা হওয়া আমানত সঞ্চয় স্কিমের আওতায় নেই। এরপরও অনেক জানাশোনা মানুষ এসব প্রতিষ্ঠানে টাকা রেখেছে। আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে।

দুর্বল ব্যাংক একীভূত প্রসঙ্গে এস এম মুনিরুজ্জামান বলেন, যে ব্যাংকে জালিয়াতি হয়েছে, সমস্যায় পড়েছে তার সঙ্গে কোনো ব্যাংক একীভূত হতে চাইবে না।