বিশ্ববাজারে চিনির দর কমতি, দেশে বেড়েছে

>

• এক মাস আগে প্রতি কেজি চিনি ৫০-৫৫ টাকা ছিল
• এখন প্রতি কেজি চিনি ৫৫-৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে
• পাইকারি বাজারে পেঁয়াজ ও রসুনের দাম কমেছে
• কমছে ডিমের দাম, আগের মতোই চড়া সবজি-মাছ

বিশ্ববাজারে চিনির দাম কমেছে। তাই দেশের বাজারে পণ্যটির মূল্যবৃদ্ধির কোনো কারণ থাকার কথা নয়। কিন্তু পবিত্র শবে বরাত ও রোজার বাড়তি চাহিদাকে ঘিরে খুচরা বাজারে চিনির দাম প্রায় ১০ শতাংশ বেড়েছে। ফলে চিনি কিনতে মানুষকে বাড়তি ব্যয় করতে হচ্ছে।

সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পণ্যমূল্যের তালিকা অনুযায়ী, এক মাস আগে প্রতি কেজি চিনির দাম ৫০ থেকে ৫৫ টাকা ছিল। এখন যা ৫৫ থেকে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

বিশ্বব্যাংক গত ২৩ এপ্রিল বৈশ্বিক পণ্যবাজার নিয়ে একটি পূর্বাভাস প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, গত ফেব্রুয়ারি মাসে বিশ্ববাজারে প্রতি টন চিনির দাম ছিল ২৯০ মার্কিন ডলার, যা মার্চে কমে ২৮০ ডলারে নামে। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় কেজিপ্রতি দর দাঁড়ায় প্রায় ২৪ টাকা। অবশ্য এর সঙ্গে আমদানি খরচ, বিভিন্ন ধরনের কর, অভ্যন্তরীণ পরিবহন খরচ ও বিভিন্ন পর্যায়ে ব্যবসায়ীদের লাভ যুক্ত করে দেশে চিনির দাম নির্ধারিত হয়। সাম্প্রতিক কালে বিশ্ববাজারে চিনির দরে তেমন কোনো ওঠানামা হয়নি। বিশ্বব্যাংকের হিসাবে, ২০১৭ সালে চিনির গড় দাম টনপ্রতি ৩৫০ ডলার ছিল।

দেশে বছরে ১৪–১৫ লাখ টন চিনির চাহিদা রয়েছে। সিটি গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ, আবদুল মোনেম লিমিটেডসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান বিদেশ থেকে অপরিশোধিত চিনি আমদানি করে এবং তারা পরিশোধন করে বাজারে ছাড়ে। দেশীয় আখ থেকে বছরে ৬০ হাজার টনের মতো চিনি উৎপাদিত হয়।

দেশে চিনির দাম বাড়তে শুরু করে গত মাসের মাঝামাঝিতে। সব মিলিয়ে বড় খুচরা বাজারে কেজিতে চার–পাঁচ টাকা বাড়তি দাম চান বিক্রেতারা। পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, রোজার আগে বাড়তি চাহিদার কারণে মিলগুলোতে পণ্য সরবরাহে চাপ তৈরি হয়। এতে পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ার কারণে দাম কিছুটা বেড়ে যায়। অবশ্য পাইকারি বাজারে মূল্যবৃদ্ধির প্রবণতা নেই।

কারওয়ান বাজারের পাইকারি দোকানে গতকাল প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) চিনি ২ হাজার ৫৫০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়, যা গত সপ্তাহের তুলনায় ৫০ টাকা কম। অবশ্য এক মাস আগের চেয়ে দেড় শ টাকা বেশি।

জানতে চাইলে শীর্ষস্থানীয় চিনি পরিশোধনকারী প্রতিষ্ঠান সিটি গ্রুপের পরিচালক বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, ‘চিনির বাজার একেবারেই শীতল। আমরা কেজিপ্রতি দর ১ টাকা কমিয়ে দিয়েছি। বিশ্ববাজারও কমতির দিকে।’

এদিকে পাইকারি বাজারে পেঁয়াজ ও রসুনের দাম কমেছে। পুরান ঢাকার শ্যামবাজারের পাইকারি বিক্রেতা নারায়ণ চন্দ্র সাহা প্রথম আলোকে বলেন, দেশি রসুনের কেজিপ্রতি দর ৬৫ টাকায় উঠেছিল। এখন তা কমে ৫৫ টাকায় নেমেছে। চীনা রসুনও কেজিপ্রতি ৫ টাকার মতো কমে ৯০–৯২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। একইভাবে কেজিপ্রতি পেঁয়াজের দরও ২ টাকা কমে দেশি পেঁয়াজ ২১–২২ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ১৭–১৮ টাকা এবং ভারতীয় বড় পেঁয়াজ ১২–১৩ টাকা কেজিতে নেমেছে।

সরু মসুর ডাল, অ্যাংকর ডাল ও খেসারি ডালের দাম আগে থেকেই কিছুটা বাড়তি।

শবে বরাতের আগে ডিমের ডজনপ্রতি দর ১০৫ টাকা ছিল। এখন তা ৮৫–৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ব্রয়লার মুরগির দর কেজিপ্রতি ১৫–২০ টাকা কমে ১৪০–১৪৫ টাকায় নেমেছে। মাছের দাম আগের মতোই চড়া। সবজির দামও কমছে না। ফলে বাজারের বড় অস্বস্তি এখন সবজি ও মাছ। গরুর মাংসের দামও চড়া।