ধনেপাতার দাম বেড়েছে ১০ গুণ

>

• বগুড়ার সবজি বাজার
• মহাস্থান হাটে ধনেপাতা ২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়
• জেলার ফতেহ আলী বাজারে ধনেপাতার দাম ওঠে ২০০ টাকায়
• মূল্যবৃদ্ধি অস্বাভাবিক

বগুড়ার সবজির পাইকারি মোকাম মহাস্থান হাটে গতকাল সোমবার সকালে প্রতি কেজি ধনেপাতা বিক্রি হয়েছে ২০ টাকায়। আর ১২ কিলোমিটার দূরত্বে বগুড়া শহরের ফতেহ আলী বাজারে এসে ভোক্তা পর্যায়ে প্রতি কেজি ধনেপাতা বিক্রি হয় ২০০ টাকা কেজি দরে। অর্থাৎ মাত্র ১২ কিলোমিটারের ব্যবধানে এক কেজি ধনেপাতার দাম বেড়েছে ১০ গুণ। একইভাবে প্রতি কেজি করলার দাম চার গুণ বেড়ে হয়েছে ৮০ টাকা।

মাত্র ১২ কিলোমিটারের ব্যবধানে পণ্যের দাম চার থেকে দশ গুণ পর্যন্ত বাড়লেও প্রতি কিলোমিটারে পরিবহন খরচ পড়ে কেজিতে এক থেকে দেড় টাকা। তাই সীমিত দূরত্বে সবজির এমন মূল্যবৃদ্ধিকে অস্বাভাবিক বলছেন আড়তদারেরা। গতকাল বগুড়ার পাইকারি ও খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রমজান মাস আসতে না-আসতেই করলা ও ধনেপাতার মতো অস্থির সব রকমের সবজির দাম। পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে দামের বড় ধরনের হেরফের।

এদিকে মহাস্থান হাটে এক দিনের ব্যবধানে প্রায় দ্বিগুণ থেকে চার গুণ পর্যন্ত বেড়েছে শসা, বেগুন, কাঁচা মরিচ, বরবটি, টমেটো, বেগুন, ঢ্যাঁড়স, ঝিঙে, ধনেপাতাসহ সব ধরনের সবজির দাম। এই হাটে গতকাল শসা ২০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৩৫, মুলা ৫, পটোল ২৫, বরবটি ৩০, মিষ্টিকুমড়া ১৮, টমেটো ৩০, লম্বা বেগুন ২৫, গোল বেগুন ৩০, ঢ্যাঁড়স ও ঝিঙে ২০ টাকা কেজি, কাঁচাকলা ও লেবুর হালি ১৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গত রোববার এই বাজারে প্রতি কেজি শসা ১০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৩০, মিষ্টিকুমড়া ১৬, টমেটো ১৪, লম্বা বেগুন ১৫, গোল বেগুন ২০, ঢ্যাঁড়স ও ঝিঙে ১২ টাকা কেজিতে এবং কাঁচাকলা ও লেবুর হালি ১০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল বলে জানান এখানকার আড়তদারেরা।

হাতবদলেই দাম চড়া

আজ থেকে রমজান মাস শুরু। তাই সোমবার সকাল থেকেই বগুড়ার ফতেহ আলী বাজারে ছিল ক্রেতার বাড়তি ভিড়। এই বাজারের সবজির সিংহভাগ জোগান আসে মহাস্থান হাট থেকে। ফতেহ আলী বাজারে গতকাল এক কেজি গোল বেগুন বিক্রি হয় ৬০ টাকায়। অথচ মহাস্থান হাটে এদিন গোল বেগুন ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়। যে কাঁচা মরিচ মহাস্থান হাটে ৩৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে, ফতেহ আলী বাজারে তার দাম ছিল ৬০ টাকা। একইভাবে ২০ টাকা কেজির হাইব্রিড করলার দাম ওঠে ৮০ টাকায়।

মহাস্থান হাট আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম বলেন, প্রতিবছর রোজার মাস এলেই সবজির বাজার অস্থির হয়ে ওঠে। এবারও রমজান মাস সামনে রেখে পাইকারি বাজারে সবজির দাম কিছুটা বাড়লেও খুচরা পর্যায়ে গিয়ে তা কয়েক গুণ বেড়ে গেছে। ইফতারিতে ব্যবহৃত সবজির ক্ষেত্রে দামের এই তারতম্য বেশি ঘটেছে।

কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের জেলা বিপণন কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম বলেন, খুচরা বাজারে ক্রেতাদের কাছে সাধারণত ভালো মানের সবজিই বিক্রি করা হয়। তাই পাইকারিতে কেনা কিছু সবজি মানের কারণে খুচরা বিক্রেতারা ফেলে দেন। এতে দাম কিছুটা বেড়ে যায়।

বগুড়ার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক প্রতুল চন্দ্র বলেন, ফলন ভালো হওয়ায় বাজারে সবজির সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে। তারপরও বাজারব্যবস্থার ত্রুটির কারণে কিছু মধ্যস্বত্বভোগী অযৌক্তিকভাবে সবজির দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।