খেলাপি ঋণ আদায়ের জন্য বড় ছাড়

যাঁরা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে শোধ করছেন না, তাঁদের জন্য বড় সুবিধা চালু করল বাংলাদেশ ব্যাংক। বকেয়া ঋণের ২ শতাংশ টাকা জমা দিয়েই তাঁরা ঋণ নিয়মিত করতে পারবেন। এতে সুদ হার হবে সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ। আর এক বছরের ঋণ পরিশোধে বিরতিসহ ১০ বছরের মধ্যে বাকি টাকা শোধ করতে পারবেন। আবার ব্যাংক থেকে নতুন করে ঋণও নিতে পারবেন।

আর যাঁরা এক বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করে দিতে চান, তাঁদের জন্য রয়েছে বড় ছাড়। তাঁরা চাইলে তহবিল খরচের সমান সুদ দিয়েই বাকি টাকা শোধ করতে পারবেন। বর্তমানে ব্যাংকগুলোর তহবিল খরচের হার সাড়ে ৭ থেকে ৯ শতাংশ।

এ নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ‘ঋণ পুনঃতফসিল ও এককালীন পরিশোধসংক্রান্ত বিশেষ নীতিমালা’ জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ-সংক্রান্ত একটি খসড়া নীতিমালা এর আগে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠানো হয়। তাতে কিছুটা ঘষামাজা করে বাংলাদেশ ব্যাংক, যদিও সব সুবিধা রয়েছে সরকারের দেওয়া খসড়া মোতাবেক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, ঋণ বিরূপভাবে খেলাপি হয়ে পড়ায় ঋণ বিতরণ ও আদায় কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। উৎপাদনশীল খাতে স্বাভাবিক ঋণপ্রবাহ বজায় রাখতে ও খেলাপি ঋণ আদায়ে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, যেসব ঋণ মন্দ বা ক্ষতিজনক, মানে খেলাপি হয়ে পড়েছে, সে ক্ষেত্রে এ সুবিধা দেওয়া হবে।

এ দিকে বৃহস্পতিবার আরেকটি প্রজ্ঞাপনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঘোষণা করেছে, যেসব ব্যবসায়ী ঋণের সব কিস্তি সময়মতো পরিশোধ করেছেন, কখনই কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হননি, তাঁরা ‘ভালো গ্রাহক’। তাঁদের থেকে এক বছরে যে পরিমাণ সুদ আদায় করা হয়েছে, তার ১০ শতাংশ ফেরত দেওয়া হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ এ নিয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ‘নতুন এ সুবিধা পুরো ব্যাংক খাতের জন্য অন্তর্ঘাতমূলক ব্যাপার। এ সুযোগ খেলাপি ঋণ কার্পেটের নিচে চলে যাবে। আমার ৬০ বছরের কর্মজীবনে এমন সুবিধার কথা শুনিনি।’

একাধিক ব্যাংক কর্মকর্তা বলেন, নতুন এ সুবিধার ফলে ব্যাংক খাতের সংকট কাটবে না। বর্তমানে ব্যাংকগুলোতে তারল্য-সংকট চলছে। কয়েকটি ব্যাংকের অবস্থা এত খারাপ যে, জমা টাকা ফেরত দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। গ্রাহকদের আস্থা ফেরাতে ঋণখেলাপিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।