নারায়ণগঞ্জে অর্থনৈতিক অঞ্চল উন্নয়ন করবে জাপান

বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)
বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চল উন্নয়ন করবে দেশটির সুমিতমো করপোরেশন। এই লক্ষ্যে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) সঙ্গে সুমিতমো করপোরেশনের যৌথ অংশীদারত্ব চুক্তি সই হয়েছে।

রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আজ রোববার চুক্তি সই অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে জাপান ও অন্যান্য দেশের বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে প্রায় ২ হাজার কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগের আশা করা হচ্ছে। এ হিসাবটি এসেছে ওই অর্থনৈতিক অঞ্চলের সম্ভাব্যতা যাচাই প্রতিবেদনে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ২০১৮ সালে ৩৬১ কোটি ডলারের বিদেশি বিনিয়োগ পেয়েছে।

আপাতত অর্থনৈতিক অঞ্চলটি ৫৪০ একর জমিতে প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। পরে তা ১ হাজার একরে উন্নীত হবে। অর্থনৈতিক অঞ্চলটি পরিচালনার জন্য যে কোম্পানি হবে সেখানে সুমিতমোর অংশ হচ্ছে ৭৬ শতাংশ। বাকি ২৪ শতাংশ হিস্যা থাকবে বেজার হাতে।

জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে ২০১৪ সালে বাংলাদেশ সফরের সময় দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর যৌথ ঘোষণায় জাপানি বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়। সুমিতমো জানিয়েছে, তারা ২০২০ সালের মধ্যে অর্থনৈতিক অঞ্চলটির কার্যক্রম শুরু করতে চায়।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব নজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি-বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ, বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী, ঢাকায় জাপানি দূতাবাসের মিনিস্টার তাকেশি ইতো প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। বেজার মহাব্যবস্থাপক শোহেলের রহমান চৌধুরী ও সুমিতমোর মহাব্যবস্থাপক ইয়াসুশি ফুকুদা চুক্তিতে সই করেন। আবুল কালাম আজাদ অর্থনৈতিক অঞ্চলটি দ্রুত বিনিয়োগের জন্য প্রস্তুত করার তাগিদ দিয়ে বলেন, ‘নইলে ট্রেন ধরা যাবে না।’

বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার ক্ষেত্রে এটি সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনা হবে। বেজায় আমরা কথা বলার চেয়ে কাজ করার ওপর জোর দিই। আজকে সেটার আসল প্রদর্শন হলো।’

বাংলাদেশে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) জ্যেষ্ঠ প্রতিনিধি ইয়োশিবুমি বিতো বলেন, এ অর্থনৈতিক অঞ্চলটি প্রতিষ্ঠার জন্য জাপান সরকার ঋণ সহায়তা দিয়েছে। এটা জাইকার ক্ষেত্রে নতুন ধরনের সহায়তা।

ইয়াসুশি ফুকুদা বলেন, সুমিতমো করপোরেশন ৪০০ বছরের পুরোনো কোম্পানি। এশিয়ার পাঁচটি দেশে তারা আটটি অর্থনৈতিক অঞ্চল ও শিল্প পার্ক প্রতিষ্ঠা করেছে। দেশগুলো হলো ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, মিয়ানমার ও ভিয়েতনাম। এসব দেশে প্রতিষ্ঠিত অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ করেছে ৫৯০টি কোম্পানি। কর্মসংস্থান হয়েছে ২ লাখ ১০ হাজার লোকের।

ইয়াসুশি ফুকুদা জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চলটি গ্রহণ করার জন্য নারায়ণগঞ্জের স্থানীয় বাসিন্দাদের ধন্যবাদ জানান। পাশাপাশি সবাই মিলে একসঙ্গে থাকার অঙ্গীকার করেন।

জাপানের পাশাপাশি বাংলাদেশে চীন তাদের বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করছে চট্টগ্রামের আনোয়ারায়। ভারত প্রতিষ্ঠা করবে তিনটি অর্থনৈতিক অঞ্চল, যার একটি চট্টগ্রামের মিরসরাই, একটি বাগেরহাটের মোংলা ও অন্যটি কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় হওয়ার কথা। ভারতে তিনটি অর্থনৈতিক অঞ্চলে জমির পরিমাণ ১ হাজার ৬২৪ একর। চীনা অর্থনৈতিক অঞ্চলের আকার ৭৮৩ একর। অবশ্য কক্সবাজারের মহেশখালীতে বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে জাপান।